ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গাজা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হলেন প্যালেস্টাইনের স্বশাসিত প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। মঙ্গলবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর (Emmanuel Macron) সঙ্গে বৈঠকের পরে আব্বাস সরাসরি হামাসের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বলেন, “গাজায় প্রাণহানি বন্ধ করতে হলে হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে(Israel Hamas Conflict)।” এই মন্তব্য শুধু হামাসের উদ্দেশে নয়, একই সঙ্গে একটি স্পষ্ট বার্তা গোটা আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি। আব্বাসের মতে, কট্টরপন্থী সংগঠনের অস্তিত্ব এবং সশস্ত্র উপস্থিতি গাজায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তির অন্তরায়। তাই তাঁর দাবি, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা এখন অতীব জরুরি।
পুরনো বিভাজন নতুন করে চর্চায় (Israel Hamas Conflict)
গাজা আর ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক—প্যালেস্টাইনের দুই অংশের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন বহু পুরনো(Israel Hamas Conflict)। একসময় প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফতের নেতৃত্বাধীন ফাতাহ সংগঠনের মাধ্যমে গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ ছিল প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন এর হাতে। কিন্তু ২০০৭ সালে গৃহযুদ্ধের পরে গাজা দখল করে নেয় কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠন হামাস। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের প্রশাসন এখনও আব্বাসের নেতৃত্বাধীন পিএলও-র হাতে থাকলেও, গাজায় হামাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। এই দ্বৈত নেতৃত্বের কারণে প্যালেস্টাইনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কাঠামো ক্রমাগত দুর্বল হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর দাবি (Israel Hamas Conflict)
আন্তর্জাতিক স্তরে হামাসকে বহু দেশ জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। অথচ গাজা অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে তারা দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছে(Israel Hamas Conflict)। আব্বাসের শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রস্তাব ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিনি গাজা-শাসনব্যবস্থা থেকে হামাসকে এক প্রকার বাদ দিতে চাইছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আব্বাস এই মন্তব্য করে তিনটি উদ্দেশ্য সামনে আনলেন—
- আন্তর্জাতিক সহানুভূতি ও সমর্থন জেতা, বিশেষত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির কাছ থেকে।
- হামাসের রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করা, যাতে ভবিষ্যতে পিএলও-কে ফের গাজায় ফিরিয়ে আনা যায়।
- ইজরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান সংরক্ষণ করেও বাস্তববাদী অবস্থান গ্রহণ, কারণ হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলারও সমালোচনা করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে? (Israel Hamas Conflict)
আব্বাসের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ফ্রান্স সহ ইউরোপের কিছু দেশ(Israel Hamas Conflict)। তবে গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া সম্ভব নয়। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের মতামত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর আমেরিকা ঐতিহ্যগতভাবে ইজরায়েলের ঘনিষ্ঠ। হামাসের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়ে আব্বাস শুধু নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেননি, বরং গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে নতুন আলোচনার দ্বারও খুলে দিয়েছেন। প্যালেস্টাইন প্রশ্নে ফাতাহ বনাম হামাসের দ্বন্দ্বে এই মন্তব্য নতুন মোড় আনতে পারে, যার প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে ভবিষ্যতের মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতিতে।