ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রবিবার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় ইজরায়েলি হামলায় নিহতদের সমাহিত করা হয়েছে (Eid-al-Fitr in Gaza)। বিমান হানায় প্রায় ধ্বংস শহরে, ধ্বংসস্তূপের পাশেই ইদের নামাজ পড়তে দেখা গিয়েছে প্যালেস্তিনীয়দের।
শিশুদের উপড়েও ঈদে হামলা (Eid-al-Fitr in Gaza)
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় ঈদ-উল-ফিতরের প্রথম দিনেই ইজরায়েলি বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শিশুদেরও মৃত্যু হয়েছে (Eid-al-Fitr in Gaza)। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। স্থানীয় হাসপাতাল এই প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছে এবং জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন শিশু রয়েছে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঈদের নতুন পোশাক পরা কিছু শিশু হামলার শিকার হয়েছে। এক ব্যক্তি এক শিশুর নিথর দেহ টেনে নিয়ে যাচ্ছেন আর বলছেন, “এই শিশুদের দোষ কী ছিল? ওরা তো কিছুই করেনি।”
গাজায় ঈদের বিষাদ (Eid-al-Fitr in Gaza)
গাজার বাসিন্দারা এই বছর ঈদ কাটাচ্ছেন চরম খাদ্যসংকট এবং বাড়তে থাকা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে (Eid-al-Fitr in Gaza)। এক উদ্বাস্তু নারী আমেনা শাকলা সিএনএনকে বলেন, “প্রতিবছর আমি আমার সন্তানদের জন্য ঈদের কুকিজ বানাতাম। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমি মাত্র এক কেজি বানাতে পেরেছি, যাতে তারা একটু আনন্দ পায়, যুদ্ধের কারণে দুঃখে না থাকে।”
রাস্তার বিক্রেতা আব্দেল ফাত্তাহ খলিল করনাভি জানান, “আমরা বাচ্চাদের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি খুব কঠিন, আর সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া।”

গাজায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু, মানবিক সহায়তা অবরুদ্ধ
প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল আবার গাজায় হামলা শুরু করেছে। এই নতুন হামলার ফলে শত শত প্যালেস্তিনীয় নিহত হয়েছে। ইজরায়েল গাজার কিছু এলাকায় স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা করেছে এবং বলেছে, বেঁচে থাকা ২৪ জন বন্দি মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে। ফলে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সমস্ত পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আল-মাওয়াসি অঞ্চল, যা একসময় ইসরায়েল নিজেই “মানবিক এলাকা” ঘোষণা করেছিল, বারবার ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে। হাজার হাজার প্যালেস্তিনীয় এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে এবং তাঁবুতে অমানবিক পরিবেশে বসবাস করছে।
নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা “কাজ করছে” এবং তিনি সামরিক অভিযান আরও বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “একদিকে আমরা হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ধ্বংস করছি, অন্যদিকে আমাদের বন্দিদের মুক্তির পরিস্থিতি তৈরি করছি।” নেতানিয়াহু আরও বলেন, ইজরায়েল “ট্রাম্প প্ল্যান” বাস্তবায়ন করবে, যা গাজা থেকে প্যালেস্তিনীয়দের স্বেচ্ছায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই এই পরিকল্পনা থেকে পিছু হটেছেন।

নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
এই হামলার মধ্যেই মিশরের প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছে হামাস। এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় আমেরিকান-ইজরায়েলি বন্দি এডান আলেকজান্ডারসহ পাঁচজনকে মুক্তি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: India Us Diplomacy: ভারত-আমেরিকার সম্পর্কের স্বর্ণযুগের আভাস ট্রাম্পের! কী কী নতুন পরিকল্পনা?
এর বিনিময়ে হামাস চাইছে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ পুনরায় চালু করা এবং দ্বিতীয় ধাপের শর্ত নিয়ে ইজরায়েলের সঙ্গে আলোচনা ইজরায়েল এই প্রস্তাবের জবাবে একটি পাল্টা প্রস্তাব পাঠিয়েছে এবং জানিয়েছে, তারা আমেরিকার সঙ্গে সমন্বয় করেই কাজ করছে।
দেশের ভেতরেই চাপের মুখে নেতানিয়াহু
নেতানিয়াহু তার নিজস্ব ডানপন্থী জোটের চাপে রয়েছেন। তারা চান, হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান আরও জোরদার হোক। অন্যদিকে, বন্দিদের পরিবারের দাবি, অতিরিক্ত সামরিক পদক্ষেপ তাদের স্বজনদের আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে।