ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে তাদের বাহিনী রাফাতে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের (Israeli Troops Kill 27 in Aid Site) কাছে নির্ধারিত প্রবেশ পথ ছেড়ে অন্যদিকে আসা একদল ব্যক্তির উপর গুলি চালিয়েছে।
রাফায় খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত সাধারণ মানুষ (Israeli Troops Kill 27 in Aid Site)
মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, দক্ষিণ গাজার রাফা এলাকায় একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ২৭ জন প্যালেস্তিনীয় নিহত হয়েছেন (Israeli Troops Kill 27 in Aid Site)। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে। যুদ্ধের ভেতরে ক্ষুধায় ভোগা জনগণের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর সময় এই নৃশংস ঘটনা ঘটে।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার নির্ধারিত পথ ছেড়ে কিছু ব্যক্তি সরে গিয়েছিলেন এবং সেই কারণেই সেনারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার তদন্ত করছে।
উত্তর গাজায় তিন ইজরায়েলি সেনার মৃত্যু (Israeli Troops Kill 27 in Aid Site)
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ইজরায়েল জানিয়েছে, উত্তরের গাজায় চলমান লড়াইয়ে তাদের তিনজন সেনা নিহত হয়েছে (Israeli Troops Kill 27 in Aid Site)। হামাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা অভিযানের অংশ হিসেবে ইজরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
ত্রাণ বিতরণ ঘিরে বারবার মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত Gaza Humanitarian Foundation গত সপ্তাহে তাদের প্রথম খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র চালু করে। তারা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে তারা ২১টি খাদ্যবাহী ট্রাক ভর্তি খাবার বিতরণ করেছে এবং পুরো কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে বাস্তবে রাফা এলাকায় বহু মানুষ খাদ্যের জন্য জড়ো হওয়ার সময় বারবার গুলি চালানোর ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন।
রবিবার অন্তত ৩১ জন প্যালেস্তিনীয় নিহত হয়েছিলেন। সোমবার আরও তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
ইজরায়েল সেনাবাহিনীর দাবি ও হামাসকে দোষারোপ
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি এবং রবিবারের মৃত্যুর খবরগুলো “হামাসের মিথ্যা প্রচার”। তারা জানায়, কিছু ব্যক্তি নির্ধারিত পথ ছেড়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল। তখন “প্রথমে সতর্কতামূলক গুলি চালানো হয়। এরপরও তারা থামেনি বলে সরাসরি গুলি চালানো হয়।”
জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া ও নতুন উচ্ছেদ আদেশ
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সোমবার বলেন, ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যু তাঁকে “স্তব্ধ করে দিয়েছে”। তিনি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: India US Trade Talks : “ট্রাম্প শ্রদ্ধা করেন ভারতকে” প্রশংসা করে বললেন মার্কিন বানিজ্যসচিব!
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার রাতে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকার কয়েকটি জায়গার বাসিন্দাদের নতুন করে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে। তাদের বলা হয়েছে পশ্চিমে মাওয়াসি মানবিক এলাকায় চলে যেতে। তবে প্যালেস্তিনীয় ও জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলছেন, গাজার ভেতরে কোনও এলাকাকেই আর নিরাপদ বলা যাচ্ছে না। ২৩ লাখ জনসংখ্যার অধিকাংশই গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, নতুন উচ্ছেদের নির্দেশের কারণে দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল নাসের হাসপাতালের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে সেখানে চিকিৎসাধীন বহু রোগীর জীবন সমস্যার মুখে পড়বে।
অবরোধে মৃত্যু সংখ্যা ছাড়ালো ৫৪ হাজার
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন এক হামলায় ইজরায়েলের ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে বন্দী করা হয়। এর জবাবে ইজরায়েল গাজায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই অভিযান শুরুর পর থেকে গাজায় ৫৪,০০০ এর বেশি প্যালেস্তিনীয় নিহত হয়েছেন।