ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে সুপ্রিম (Jagdeep Dhankhar) কোর্টের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ ঘিরে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক বিতর্ক ফের তুঙ্গে। আর সেই উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। রাজ্যসভায় ইন্টার্নদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সরাসরি দেশের শীর্ষ আদালতের সমালোচনা করেন এবং বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট সুপার পার্লামেন্ট নয়।”
তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত (Jagdeep Dhankhar)
সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে একাধিক রাজ্য বিল আটকে রাখার ঘটনাকে (Jagdeep Dhankhar) কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, কোনও রাজ্যপাল অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্য বিধানসভায় গৃহীত বিল আটকে রাখতে পারেন না। রাষ্ট্রপতিও যেন তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন—এমন নির্দেশও দেয় আদালত। বিচারপতিদের এই পর্যবেক্ষণেই ধনকড় প্রশ্ন তোলেন, “কোনও আদালত কীভাবে রাষ্ট্রপতিকে সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে? এ দেশের সংবিধান রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালদের কিছু নির্দিষ্ট রক্ষাকবচ দিয়েছে। সেই সংবিধান অনুযায়ী, তাঁদের আইনি দায়বদ্ধতা নেই।”
সংবিধানের ১৪২ ধারা নিয়ে প্রশ্ন (Jagdeep Dhankhar)
প্রাক্তন রাজ্যপাল ও বর্তমানে উপরাষ্ট্রপতি ধনকড় আরও বলেন, “আজ আমরা (Jagdeep Dhankhar) এমন এক সময় দেখছি, যেখানে বিচারপতিরা আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে নির্বাহী ক্ষমতাও প্রয়োগ করছেন। তারা যেন সুপার পার্লামেন্টে রূপান্তরিত হয়েছেন। এমন গণতন্ত্রের স্বপ্ন আমরা দেখিনি।” তিনি সংবিধানের ১৪২ ধারা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, যেটির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট ‘সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত করতে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। ধনকড়ের মতে, “এই ধারা এখন যেন পরমাণু অস্ত্রে পরিণত হয়েছে, যা যেকোনও সময়ে গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর প্রয়োগ করা হচ্ছে।”
বিচারপতির বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনা
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। দিল্লি হাইকোর্টের এক বিচারপতির বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনাও টেনে আনেন ধনকড়। তাঁর প্রশ্ন, “সাধারণ কোনও নাগরিক হলে তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে FIR দায়ের হত। বিচারপতির ক্ষেত্রে কেন এত ঢিলেমি? সংবিধানে তো লেখা নেই যে বিচারপতির বিরুদ্ধে FIR করতে হলে অনুমতি নিতে হবে।”
বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা এবং দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন
এই মন্তব্যের মাধ্যমে ধনকড় বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা এবং দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, আদালতের পর্যবেক্ষণকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন, কারণ রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে একাধিক বিতর্ক সামনে এসেছে।

সুপ্রিম কোর্টের কড়া অবস্থান
তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে বিল আটকে রাখার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট কড়া অবস্থান নেয় এবং জানায়, রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত যদি অসৎ উদ্দেশ্যপ্রসূত হয়, তাহলে আদালত হস্তক্ষেপ করতেই পারে। রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধেও ‘Writ of Mandamus’ জারি হতে পারে বলে মন্তব্য আদালতের।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: নন-টেইন্টেড শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর, আইনি পথেই খুঁজবেন সমাধান!
এই সাংবিধানিক দ্বন্দ্ব এখন স্পষ্টতই কেন্দ্র ও বিচারব্যবস্থার মধ্যে এক নতুন সংঘাতের আভাস দিচ্ছে। সমাধান কোথায়—তা বলবে সময়ই।