ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই জম্মু ও কাশ্মীরজুড়ে নতুন করে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে(Jammu and Kashmir Terror Attack)। এবার নিশানায় রাজ্যের জেলগুলি। গোয়েন্দা সূত্রে আশঙ্কা, জম্মু ও কাশ্মীরের একাধিক জেলে জঙ্গি হামলা হতে পারে। সেই সতর্কতা মেনেই সমস্ত জেলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রবিবার এই পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শ্রীনগরে জরুরি বৈঠক করেন সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (CISF)-এর ডিজি।
‘হাই রিস্ক জোন’ (Jammu and Kashmir Terror Attack)
সূত্রের খবর, এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তা, গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা এবং সংশ্লিষ্ট জেলগুলির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসাররা। বৈঠকের পরে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়, সমস্ত জেলে নিরাপত্তা বহুগুণে বাড়াতে হবে। বিশেষ করে শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেল ও জম্মুর কোট বালওয়াল জেলকে ‘হাই রিস্ক জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কেন এই সতর্কতা?(Jammu and Kashmir Terror Attack)
কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলে বর্তমানে বহু জঙ্গি ও তাদের সহায়তাকারী বন্দি রয়েছে, যাঁরা কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন(Jammu and Kashmir Terror Attack)। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, এই বন্দিদের মুক্ত করতে জেলগুলিতে বড়সড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করতে পারে পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি। অতীতে পাকিস্তান বা পাকিস্তান-সমর্থিত সংগঠনগুলির এই ধরনের কৌশলের নজির রয়েছে। সেই কারণেই প্রশাসন এখন থেকেই প্রতিটি সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় তৎপর।

এনআইএ-র তদন্তে নতুন মোড়(Jammu and Kashmir Terror Attack)
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA) পহেলগাঁও হামলার তদন্ত চালাচ্ছে(Jammu and Kashmir Terror Attack)। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই ঘটনার সঙ্গে কারাগারে বন্দি দুই ব্যক্তি—নিসর ও মুস্তাক—যোগ থাকতে পারে। তাঁরা ২০২৩ সালের এপ্রিলে রাজৌরির একটি জঙ্গি হামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং বর্তমানে জেলে রয়েছেন। এনআইএ কর্তারা সম্প্রতি তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তদন্তকারীদের অনুমান, পহেলগাঁও হামলার বিষয়ে তাঁদের আগে থেকেই তথ্য ছিল। এমনকি জেল থেকেই হামলাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: NSA Ajit Doval : ভারতের ”জেমন্স বন্ড” অজিত দোভাল! জাতীয় নিরাপত্তার অপারেশন মাস্টার কীভাবে হলেন?
জেলের নিরাপত্তায় পরিবর্তন(Jammu and Kashmir Terror Attack)
জম্মু ও কাশ্মীরের জেলগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব আগে ছিল সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিস ফোর্স (CRPF)-এর হাতে। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সেই দায়িত্ব সিআইএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এবার প্রথমবার এই বাহিনীকে জম্মু ও কাশ্মীরের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলের কারাগারে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হচ্ছে।রবিবারের বৈঠকের পর থেকেই জেলগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি ক্যামেরা, নাইট ভিশন সরঞ্জাম এবং ব্যারিকেডের সংখ্যা। পাশাপাশি জেলের আশপাশে সন্দেহভাজন চলাফেরা নিয়ে কড়া নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে স্থানীয় থানাগুলিকে।
উপত্যকায় উত্তেজনা তুঙ্গে(Jammu and Kashmir Terror Attack)
পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন, যাঁদের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক(Jammu and Kashmir Terror Attack)। সেই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। জঙ্গিদের ধরতে উপত্যকার আনাচে-কানাচে চলছে চিরুনি তল্লাশি। নিরাপত্তা বাহিনীর একটি অংশের ধারণা, হামলাকারীরা এখনও দক্ষিণ কাশ্মীরে লুকিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, সীমান্ত পার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।সবমিলিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সমন্বিতভাবে কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে জেলগুলিকে টার্গেট করা হলে, তা গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর বড় ধাক্কা হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রশাসনের। তাই আগে থেকেই প্রতিটি সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসন।