ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আবারও ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির আশঙ্কায় জাপান (Japan Earthquake)।দেশটির সরকার এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগর সংলগ্ন উপকূলবর্তী এলাকায় এক প্রবল ভূমিকম্প আছড়ে পড়তে পারে, যার ফলে সৃষ্টি হতে পারে বিধ্বংসী সুনামি। এই দুর্যোগে প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে ১.৮১ লক্ষ কোটি ডলার। দেশটির সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ও কেন্দ্রস্থল (Japan Earthquake)
জাপান পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্প-প্রবণ দেশ, যেখানে প্রায়ই কম্পন অনুভূত হয় (Japan Earthquake)। তবে এবার বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, সমুদ্রতলদেশের ‘নানকাই ট্রফ’ নামে পরিচিত ভূ-তাত্ত্বিক অঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প হতে পারে। এই ধরনের ভূমিকম্প অতীতে ভয়াবহ সুনামির কারণ হয়েছে। জাপান সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে যে এই ‘মেগাকোয়েক’ আগামী কয়েক দশকের মধ্যে আঘাত হানবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব (Japan Earthquake)
এই ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ব্যাপক প্রাণহানি এবং বিপুল সম্পত্তি ধ্বংসের আশঙ্কা রয়েছে (Japan Earthquake)। বিশেষজ্ঞদের মতে, উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী কয়েক লক্ষ মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে।প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে, যদি আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা যথাযথ না নেওয়া হয়। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের বা জিডিপি’র প্রায় অর্ধেক এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার ফলে জাতীয় অর্থনীতি মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। বহু বিল্ডিং, রেললাইন, সেতু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধসে পড়তে পারে।

সরকারের আগাম প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ (Japan Earthquake)
জাপান সরকার এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে (Japan Earthquake)।বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার দুর্যোগ মোকাবিলার পরিকল্পনা করছে, যাতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।জাপানে অত্যাধুনিক ভূমিকম্প পূর্বাভাস ব্যবস্থা রয়েছে, যা মানুষকে আগে থেকেই সতর্ক করতে পারে।সেই প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করা হচ্ছে। উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের জন্য নিয়মিত মহড়া ও সচেতনতা কর্মসূচি চালানো হচ্ছে।১২ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ভূমিকম্প ও সুনামি প্রতিরোধী বিল্ডিং এবং বাধ নির্মাণের কাজ চলছে।খাদ্য, পানি, চিকিৎসা ও উদ্ধারকারী বাহিনীর প্রস্তুতি নিশ্চিত করা হচ্ছে।

২০১১ সালের তোহোকু ভূমিকম্পের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা (Japan Earthquake)
জাপান ২০১১ সালে ৯.১ মাত্রার তোহোকু ভূমিকম্প এবং সুনামির শিকার হয়েছিল, যেখানে প্রায় ২০,০০০ মানুষ মারা যান। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশটি আরও উন্নত প্রযুক্তি ও পূর্বাভাস ব্যবস্থা তৈরি করেছে। তবুও, এই নতুন আশঙ্কা আবারও দেশটির জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে জাপান বরাবরই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। তবে উন্নত প্রযুক্তি ও আগাম প্রস্তুতির কারণে তারা প্রতিটি দুর্যোগের ক্ষতি কিছুটা হলেও কমাতে সক্ষম হয়েছে। আসন্ন ভূমিকম্প ও সুনামির জন্যও তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে মানুষের জান-মালের ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। তবে প্রকৃতির এই ভয়ঙ্কর রুদ্ররোষ কতটা প্রতিরোধ করা সম্ভব, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।