ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এ এক অসম্পূর্ণ ভালবাসার কাহিনী (Jeetu Kamal Interview)। যেখানে স্বামী তার স্ত্রীকে বিবাহ বন্ধনে বাঁধলেও ফেলে রেখে গেছে নিজের বাড়িতেই। বাড়ির দুই বয়স্ককে নিয়েই ওই বিবাহিত মহিলার দিন কাটে। সাথে মাথার ওপর রয়েছে নানান দায়িত্ব। তবুও সে ভালবাসার মানুষকে খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। নেই কোনও যোগাযোগও। মা-বাবার পাশাপাশি দুশ্চিন্তায় দিন কাটে তারও। স্বামীর ভালবাসার স্বপ্নে নিজেকে খুঁজে বেড়ায় সে।
কিন্তু এরই মাঝে আগমন ঘটল এক আগন্তুকের। সেই বাড়িতেই পা রাখতে দেখা হল দু’জনের। এবার কি তবে ওই নারীর গৃহকোণ সুখের হয়ে উঠবে? নাকি অন্য কোনও দিকে মোড় নেবে তাদের এই সম্পর্ক? এইরকম সব প্রশ্নের উত্তর দিতে ১৩ জুন মুক্তি পেতে চলেছে শুভশ্রী (Subhashree Ganguly) – জিতু (Jeetu Kamal) অভিনীত ‘গৃহপ্রবেশ’ (Grihapravesh)। আর সেই চরিত্রে অভিনয়ও করে নানান খুঁটিনাটি গল্প ট্রাইব টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন জিতু কমল।
‘মেঘদূত’ চরিত্র নিয়ে যা বললেন (Jeetu Kamal Interview)
জিতু (Jeetu Kamal Interview) স্পষ্ট কথা স্পষ্টভাবে বলতে ভালোবাসেন। কারোর কথা ভেবে কথা বলা তার চরিত্রের মধ্যে পড়ে না। এর আগে তাকে দেখা গিয়েছে অপরাজিত, অরণ্য, মানুষ সহ বহু ছবিতে। এবার তাকে দেখা যাবে একজন ডাক্তারের চরিত্রে। যেখানে তিনি অভিনয় করছেন ‘মেঘদূত’ চরিত্রে। মেঘদূত চরিত্রে একজন ডাক্তার হিসাবে জিতুর কেমন লাগল? এই প্রশ্ন করাতে জিতু জানালেন, “এখানে ডাক্তারের চেয়েও ‘মেঘদূত’ কথাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মেঘদূত যখন কথাটা বলছে সে একজন ‘মেসেঞ্জার’। সে একটা মেসেজ নিয়ে আসছে। নিজেও ঝড়ের আবহেই আসছে। সাথে নিজেও একটা ঝড় তুলবেই।’
চরিত্রটি কেমন? (Jeetu Kamal Interview)
অভিনেতার (Jeetu Kamal Interview) কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই চরিত্রে অভিনয়ের আগে চরিত্রের প্রতি কেমন মনোভাব ছিল? উত্তরে তিনি জানান, “এই ছবিটি এমন একটি ছবি যা বেশিরভাগটাই পরিচালকের ওপর নির্ভরশীল। এই ছবির গল্প শোনা বা সেটা নিয়ে ভাবার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পরিচালক এই ছবিটিকে কিভাবে ভাবছেন।” আরও বললেন, ছবি পরিচালক ইন্দ্রনীল দাশগুপ্তের কথাও। ছবি শুটিং হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি যা আশা করেছিলেন, শুট হয়ে যাওয়ার পর তার চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন ইন্দ্রনীল।
এই চরিত্রে অভিনয়ের কারণ (Jeetu Kamal Interview)
জিতুর (Jeetu Kamal Interview) এই চরিত্রে অভিনয় করার পিছনে মূল কারণ কী? সবটাই কি ছবির পরিচালক ইন্দ্রনীল দাশগুপ্ত? জিতু জানান, সবার প্রথম তিনি কাজ করেন তার দর্শকের জন্য। দ্বিতীয় অবশ্যই পরিচালক তো বটেই। তৃতীয়ত ছবিটিতে ঋতুপর্ণ ঘোষের অনেক ছোঁয়া রয়েছে, রয়েছে গন্ধও। তিনি তাঁকে সামনে থেকে না পেলেও ছবির মাধ্যমেই তাঁর পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাই এরকম ছবিতে কাজ করার লোভ তিনি সামলাতে পারেননি।
আরও পড়ুন: Satabdi Roy: ভূতে ভয়, বাড়িতে অশরীরী কাণ্ড! তারাপীঠে মায়ের আশ্রয়ে শতাব্দী
ঋতুপর্ণ ঘোষের ছোঁয়া (Jeetu Kamal Interview)
ছবিটির ট্রেলারে ও আনাচে-কানাচে ঋতুপর্ণ ঘোষের ছোঁয়া রয়েছে (Jeetu Kamal Interview)। সেখানে শোনা গেছে তাঁর সিনেমার কিছু ডায়লগ, পোস্টার ও বেশ কিছু অংশও। তাহলে এই ছবির মাধ্যমে জিতু কীভাবে ঋতুপর্ণ ঘোষকে খুঁজছিলেন? সেই উত্তরে তিনি বলেন, ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি করছেন সেখানে সত্যজিৎ রায়ের কোনও ছোঁয়া থাকবে না এমনটা হতে পারে না। সেখানে দাঁড়িয়ে তার গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো অবস্থা। সবসময় তার এটাই মনে হয়েছে, ঋতুদা তার পাশেই রয়েছেন। আর তাকে বলছেন তুমি এগিয়ে যাও। সঙ্গে ঋতুদার না থাকাতে কিছুটা আফসোসও করেছেন। যদি তিনি থাকতেন তবে কিছু অন্তত বলতেন। এই যে কিছু শোনার ক্ষিদেটা সেটা জিতু খুব মিস করবেন।
কার সাথে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং?
ছবিতে যেমন রয়েছেন শুভশ্রী আবার অন্যদিকে কৌশিক ও রুদ্রনীলও, কিন্তু কার সাথে জিতুর অনস্ক্রিন কাজ করতে বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয়েছে? বললেন, তিনি কাউকে দেখে চরিত্রে অভিনয় করতে আসেন না। তার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নিজের চরিত্রে অভিনয় করাটাই। তাই উল্টোদিকে শুভশ্রী রয়েছে নাকি কৌশিক দা সেই নিয়ে সে ভাবেন না। নিজেকে নিজের চরিত্রে কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারছেন সেটাই তার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নিজেকে প্রস্তুত
তবে কি এই চরিত্রে অভিনয় করতে অনেকদিন আগে থেকেই নানান অধ্যাবসায় নিচ্ছিলেন জিতু? উত্তরে বলেন, না আলাদা করে কিছু না। যেমন অন্যান্য ছবির ক্ষেত্রে ১৫-২০ দিন আগে থেকে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন তেমনই। তবে হ্যাঁ, তিনি কোনও কিছুকেই আগে থেকে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন না। নিজের কাজটুকু করে যান। ১৫-২০ দিন আগে থেকে তিনি নিজের ছবির চরিত্রের মতোই আচরণ করতে থাকেন বাড়িতেও। তাই জন্যই তিনি একসাথে ছবি সিরিয়ালের কাজ করতে পারেন না।
আরও পড়ুন: Anushka Sharma: কথা বলার ভাষা হারিয়েছেন বিরাট, শোকাহত অনুষ্কা! এমনটা ভাবতেও পারেননি
কাজ যেভাবে করেন
জিতু একথাও জানালেন, তিনি যে কোনও কাজের বিষয় যথেষ্ট পাংচুয়াল। সেটা ছবির ক্ষেত্রে হোক কিংবা সিরিয়াল। আগের দিনের করা কোনও ভুল তিনি নিজে এসে আবার বাড়িতেই তার সংশোধনে বসেন। যাতে পরের দিন গিয়ে এরকম কোনও ভুল তার না হয়। পাশাপাশি তিনি যে কোনও স্ক্রিপ্ট নিয়েও যথাযথ পড়াশোনা করেন। যতক্ষণ না সেই বিষয়ে ধাতস্থ হচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ফ্লোরে পা রাখেন না।
এই ছবিতে জিতু কমল একজন ডাক্তার। হার্টের ডাক্তার। আদতে কি তার হার্ট ভালো আছে? হার্ট কে ভালো রাখার মন্ত্র কি তিনি পেয়েছেন? একবাক্যে বললেন, তার হার্ট ভালো আছে। ডাক্তার থাকলেও তার কাছে হার্ট ভালো রাখার সবচেয়ে বড় বিষয় তিনি কাজ পেয়েছেন। কাজ করছেন। কখনও সিনেমা, কখনও নানান ধারাবাহিকে।
ছবি নিয়ে যা ভাবেন
জিতু বাস্তব জগতে যথেষ্ট সাহসী একজন মানুষ। কারণ যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় মানুষ যখন তাকে নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া শেয়ার করে তার কেমন লাগে ? তিনি জানালেন, “এই জিনিসটা অনেক বড় বিষয়। কারণ আমি ভালোটাকে নিতে পারব আর খারাপটাকে নিতে পারব না তা তো হতে পারে না।”
সবশেষে ছবির এরম নানান বিষয় নিয়ে বললেও, আদতে তিনি এই ছবির বিষয় নিয়ে সাসপেন্সই রেখেছেন। শেষে তিনি আরও বলেন, তিনি কাউকে ছবি দেখতে আসার জন্য অনুরোধ করবেন না। বরং ভালো ছবির পাশে থাকতে ও খারাপ ছবির বিরুদ্ধে কথা বলার উপদেশ দিলেন। তাহলে শেষ পর্যন্ত গল্পের শেষে কি হয়, সেটা জানা যাবে ছবি মুক্তির পরই।