ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহন মন্ত্রক (Jeju Air Plane Crash) জানিয়েছে, দেশটির এয়ারলাইন্সগুলির ব্যবহৃত সমস্ত ১০১টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানের পরীক্ষার সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। জেজু এয়ারের ভেঙ্গে পড়া বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের কাজ শুরুর পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাড়ল সময়সীমা (Jeju Air Plane Crash)
শুক্রবার পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও (Jeju Air Plane Crash) তা বাড়িয়ে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও খুচরো যন্ত্রাংশ যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য এই বাড়তি সময় নেওয়া হয়েছে বলে পরিবহন মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ভেঙে পড়ল বিমান (Jeju Air Plane Crash)
গত রবিবার জেজু এয়ার ফ্লাইট ২২১৬ থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় (Jeju Air Plane Crash)। মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় বিমানটি রানওয়ে থেকে সরে গিয়ে ভেঙে পড়ে। এতে ১৭৯ জন নিহত হন, শুধু দু’জন প্রাণে বেঁচে যান।
আরও পড়ুন: New Orleans Attacker House: কী পাওয়া গেল নিউ অরলিন্সে হামলাকারী সামসুদ্দিনের বাড়িতে?
দুর্ঘটনার কারণ
বিমানের দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে তদন্তকারীরা বার্ড স্ট্রাইক, অবতরণের সময় গিয়ার সমস্যার সম্ভাবনা এবং রানওয়ের শেষে থাকা একটি নির্মাণের সঙ্গে সংঘর্ষকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
কী বলছে মন্ত্রক?
পরিবহন মন্ত্রক জানিয়েছে, সমস্ত ৭৩৭-৮০০ বিমানের ইঞ্জিন, রক্ষণাবেক্ষণের নথি এবং ল্যান্ডিং গিয়ার পরীক্ষা করা হবে। গুরুতর সমস্যা ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম স্থগিত করা হতে পারে।
অংশ নিচ্ছে ইঞ্জিন সংস্থা
বিমানের ইঞ্জিন জেনারেল ইলেকট্রিক এবং ফরাসি এয়ারোস্পেস কোম্পানি সাফরানের যৌথ উদ্যোগে তৈরি। জেনারেল ইলেকট্রিকও এই নিরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
বোয়িং-এর জন্য নতুন সমস্যা
জেজু এয়ারের এই দুর্ঘটনা বোয়িং কোম্পানির জন্য নতুন সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এর আগে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা এবং মাঝ-আকাশে একটি প্যানেলের ক্ষতিসহ বেশ কয়েকটি সমস্যা কোম্পানির বিশ্বাসযোগ্যতায় আঘাত করেছে।
মন্ত্রকের বৈঠক
পরিবহন মন্ত্রক জরুরি বৈঠক করে ১১টি এয়ারলাইন্স, যেমন কোরিয়ান এয়ারলাইনস এবং এশিয়ানা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে। বৈঠকে বিমান নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
তদন্তকারীরা যাবেন আমেরিকা
শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার তদন্তকারী দল জানিয়েছে, তাদের দুই সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবে। তারা সেখানে জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের (এনটিএসবি) সহযোগিতায় বিমানের ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার বিশ্লেষণ করবে।
সরানো হচ্ছে বিমান
তদন্তকারীরা বিমানের ধ্বংসাবশেষ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। একটি বড় হলুদ ক্রেন ব্যবহার করে বিমানের ধ্বংসাবশেষ, যার মধ্যে একটি ইঞ্জিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলি তোলা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Chinmay Krishna: খারিজ চিন্ময়ের জামিনের আর্জি, হাইকোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি ইসকনের
পুলিশ প্রধানের বক্তব্য
মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ জেওল্লা প্রদেশ পুলিশের তদন্ত প্রধান না ওন-হো বলেছেন, বিমানের যে অংশ উদ্ধার করা হচ্ছে, সেখান থেকে আরও মানবদেহের অবশেষ পাওয়া যেতে পারে।
“পুরো কাজ শেষ হতে এবং ফলাফল পেতে আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”
তথ্য বিশ্লেষণ
তদন্তকারীরা দুর্ঘটনার আগে কী ঘটেছিল তা জানার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে পাওয়া ১০৭টি মোবাইল ফোনের তথ্য এবং টেক্সট মেসেজ বিশ্লেষণ করবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক শুক্রবার তদন্তকারীদের দ্রুততার সঙ্গে প্রমাণ সংগ্রহ এবং ভয়েস রেকর্ডার বিশ্লেষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
উঠছে প্রশ্ন
প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কেন বিমানের অবতরণ গিয়ার খুলে দেওয়া হয়নি এবং কেন পাইলট দ্বিতীয়বার অবতরণের চেষ্টা করেছিলেন, যেখানে তিনি বার্ড স্ট্রাইকের কথা জানিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন।