ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: X-এ পোস্ট করা চিঠিতে (Kamra Reply BookMyShow), কুণাল কামরা বলেছেন যে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে BookMyShow-এর “রাজ্যের সাথে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা” প্রয়োজন।
কৌতুক থেকে বিতর্ক, এবার দাবি উঠল শিল্পীর অধিকারের (Kamra Reply BookMyShow)
কয়েক দিন আগে বুকমাইশো টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম থেকে কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরার সমস্ত কনটেন্ট সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁর নামও শিল্পীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় (Kamra Reply BookMyShow)। সেই ঘটনার পর এবার কামরা একটি খোলা চিঠি লিখে বুকমাইশোর কাছে তাঁর শো-তে আসা দর্শকদের যোগাযোগের তথ্য চেয়েছেন।
এই চিঠিটি তিনি পোস্ট করেছেন X-এ (আগের টুইটার)। সেখানে কামরা লেখেন, “আমি বুঝি বুকমাইশো রাজ্য সরকারের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখতে চায়, এবং আমি জানি মুম্বই লাইভ এন্টারটেইনমেন্টের বড় কেন্দ্র। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া কোল্ডপ্লে কিংবা গানস অ্যান্ড রোজেস-এর মতো বিখ্যাত শো সম্ভব হত না।”
“শিল্পীকে তাঁর দর্শকদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা ঠিক নয়” (Kamra Reply BookMyShow)
চিঠিতে কামরা বলেন (Kamra Reply BookMyShow), বিষয়টা এই নয় যে বুকমাইশো তাঁকে লিস্ট থেকে বাদ দেবে কি দেবে না, বরং বিষয়টা হল, বুকমাইশোর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ। “আপনারা শিল্পীদের নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে শো লিস্ট করতে দেন না। ফলে আমি ২০১৭ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত যে দর্শকদের সামনে পারফর্ম করেছি, তাদের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি।”
শিন্ডেকে নিয়ে রসিকতার জেরে বিতর্ক, স্টুডিও বন্ধ (Kamra Reply BookMyShow)
কামরার বিরুদ্ধে বিতর্ক শুরু হয় মুম্বইয়ের হ্যাবিট্যাট স্টুডিও-তে এক শো চলাকালীন (Kamra Reply BookMyShow)। সেখানে তিনি বলিউড সিনেমা ‘দিল তো পাগল হ্যায়’র গান ‘ভোলি সি সুরত’-এর প্যারোডি গেয়ে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডেকে ‘গাদ্দার’ (বিশ্বাসঘাতক) বলে ব্যঙ্গ করেন।
এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে শিন্ডের সমর্থকরা হ্যাবিট্যাট স্টুডিওতে ভাঙচুর চালায়। পরে স্টুডিওটি বন্ধ হয়ে যায় এবং জানায়, শো-এর বিষয়বস্তুর উপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। পরদিনই পৌর কর্তৃপক্ষ ‘বিল্ডিং আইন লঙ্ঘনের’ অভিযোগে স্টুডিওর একটি অংশ ভেঙে দেয়। এই ঘটনার সময় ও প্রেক্ষাপট ঘিরে সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে, কুণাল কামরাকে ঘিরে বিতর্কই এর কারণ।
একাধিক মামলা, তবু সংগ্রামে কামরা
এই ঘটনার জেরে কুণাল কামরার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি ইতিমধ্যেই তিনটি সমন এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে চেন্নাই হাইকোর্ট থেকে তিনি আপাতত গ্রেফতারি থেকে সুরক্ষা পেয়েছেন।
শিল্পীর অভিযোগ ও আবেদন
চিঠিতে কামরা বলেন, “আপনারা টিকিট বিক্রির শো থেকে ১০ শতাংশ রেভিনিউ কেটে রাখেন — সেটাই আপনাদের ব্যবসার মডেল। কিন্তু একজন কৌতুকশিল্পী হিসেবে নিজের দর্শকদের কাছে পৌঁছনোর জন্য আমাদের প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দিতে হয়। এটা শিল্পীদের ওপর এক বাড়তি চাপ।”
এরপর তিনি স্পষ্ট দাবি রাখেন, “আমি আপনাদের কাছে যা চাইছি তা খুবই সহজ। আমার একক শো থেকে আপনারা যে দর্শকদের তথ্য পেয়েছেন, তা আমার হাতে দিন। যাতে আমি সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারি, এবং নিজের পেশাকে ধরে রাখতে পারি।”
তিনি লেখেন, “যদি আমি ৩০ জন শিল্পীর সঙ্গে পুণে কমেডি ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করি, সেটা কমেডির সম্মিলিত ডেটা হতে পারে। কিন্তু আমার একক শো-এর দর্শক, ওরা তো আমারই। যদি আপনি আমাকে বাদ দেন, তাহলে অন্তত আমার দর্শকদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ দিন।”
“আমাকে বাদ না দিন, বা আমার ডেটা দিন”
চিঠির শেষে কামরা লেখেন, “আপনারা চাইলে আমাকে ডিলিস্ট করবেন না, বা অন্তত আমার শো থেকে প্রাপ্ত ডেটা (যোগাযোগের তথ্য) আমাকে দিন। আমি জানি, আপনারা হয়তো বলবেন ‘ডেটা প্রোটেকশন’-এর কথা, কিন্তু এই প্রশ্নটা বড় — কে কাকে এবং কোন ডেটা থেকে রক্ষা করছে?”
শিবসেনার প্রশংসা, বুকমাইশোর প্রতি কৃতজ্ঞতা
এর আগে শিবসেনা নেতা রাহুল কানাল বুকমাইশোকে অনুরোধ করেছিলেন যেন কুণাল কামরাকে প্ল্যাটফর্মে জায়গা না দেওয়া হয়। কামরার ডিলিস্ট হওয়ার পর, রাহুল কানাল বুকমাইশোকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনারা প্ল্যাটফর্মকে পরিচ্ছন্ন রাখছেন এবং এই ধরনের শিল্পীদের বাদ দিয়ে নিখাদ বিনোদনের জায়গা রক্ষা করছেন। আমরা মুম্বইকাররা সব ধরনের শিল্পের মূল্য দিই, তবে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যকে নয়।”
এই ঘটনাগুলি নতুন করে প্রশ্ন তুলছে — একদিকে শিল্পের স্বাধীনতা, আরেকদিকে রাজনীতির প্রভাব। তার মাঝখানে কোথায় দাঁড়িয়ে একক শিল্পী কুণাল কামরা, সেই উত্তর এখন সময়ই দেবে।