ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কেরলের উপকূলে লাইবেরিয়ার একটি (Kerala Ship Capsizes) পণ্যবাহী জাহাজ ডুবে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে কেরল সরকার। ওই জাহাজে মোট ৬৪০টি কন্টেইনার ছিল, যার মধ্যে ১৩টি কন্টেইনারে বিপজ্জনক রাসায়নিক পরিবহিত হচ্ছিল। এই রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়লে সামুদ্রিক প্রাণী ও মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি, জাহাজের ট্যাংকে থাকা তেল সমুদ্রে মিশে বড় পরিবেশ দূষণের কারণ হতে পারে। তাই কেরল সরকার এবং ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ভারতের কাছে সাহায্যের অনুরোধ (Kerala Ship Capsizes)
আপাতত জানা গেছে, জাহাজে মোট ২৪ জন নাবিক ছিলেন যাদের সবাইকে (Kerala Ship Capsizes) সফলভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে লাইবেরিয়ার ওই জাহাজ থেকে ভারতের কাছে সাহায্যের অনুরোধ পাঠানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী উদ্ধার অভিযানে নেমে পড়ে। প্রথমে ২১ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে রবিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘সুজাতা’ আরও তিন জনকে উদ্ধার করে।
স্নায়ুতন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে (Kerala Ship Capsizes)
জাহাজে থাকা বিপজ্জনক ১৩টি কন্টেইনারের মধ্যে ১২টিতে ছিল ক্যালসিয়াম (Kerala Ship Capsizes) কার্বাইড। এই রাসায়নিক জলে মিশলে অ্যাসিটিলিন গ্যাস উৎপন্ন করে, যা প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, জাহাজের ট্যাঙ্কারে ৮৪.৪৪ মেট্রিক টন ডিজেল এবং ৩৬৭.১ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল ছিল। সমুদ্রে তেল লিকেজ হলে পরিবেশ এবং সামুদ্রিক জীবজগতের জন্য তা ব্যাপক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
উপকূলীয় এলাকার সৈকতগুলিকে দূষিত করতে পারে
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে তেল লিকেজ শুরু হলে তা কেরলের আলাপুঝা, আম্বালাপুঝা, আরাট্টুপুঝা ও কারুনাগাপল্লির মতো উপকূলীয় এলাকার সৈকতগুলিকে দূষিত করতে পারে। এই দূষণের প্রভাব ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হতে পারে। ফলে সময় নিয়ে কাজ না করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সম্ভাব্য বিপর্যয় রোধে কাজ করছে
উপকূলরক্ষী বাহিনী ও কেরল সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দল নিয়মিত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। তারা সমন্বিত ভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করে সম্ভাব্য বিপর্যয় রোধে কাজ করছে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, সমুদ্রে ভাসমান কোনো সন্দেহজনক বস্তু স্পর্শ বা সংগ্রহ করার চেষ্টা না করতে। কারণ এতে বিষাক্ত রাসায়নিক বা দূষণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষীবাহিনী যৌথভাবে জাহাজ থেকে তেল লিকেজ রোধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করছে। দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Operation Sindoor: সিঁদুর শুধু অপারেশন নয়, বদলে যাওয়া ভারতের প্রতিচ্ছবিও: প্রধানমন্ত্রী
এই ঘটনায় সামুদ্রিক পরিবেশের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবিকা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়ে উঠেছে এবং তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। কেরল উপকূলবাসী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একযোগে কাজ করে এই পরিবেশ দূষণ রোধে সচেষ্ট।