ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পরমাণু চুক্তির আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া (Khamenei on Nuclear Talks) এবং তাদের উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আমেরিকার সমালোচনা করে ইরানার সর্বোচ্চ নেতা আলোচনার মূল্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল ইরান (Khamenei on Nuclear Talks)
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক আলোচনা চালানোর প্রস্তাব আসলে বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করার কৌশল (Khamenei on Nuclear Talks)। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের নেতাদের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি নতুন একটি চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিষয়ে আলোচনা চেয়েছেন।
বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির হাতে ট্রাম্পের চিঠিটি তুলে দেন। এই বৈঠকের সময়, খামেনি একদল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সামনে বলেন, “ট্রাম্পের প্রস্তাব বিশ্ব জনমতকে প্রভাবিত করার জন্য একটি প্রতারণা।”
“চুক্তি ছেঁড়ার পর আবার কীসের আলোচনা?” (Khamenei on Nuclear Talks)
খামেনি বলেন (Khamenei on Nuclear Talks), “আমরা বছরের পর বছর ধরে আলোচনা করলাম, একটি সম্পূর্ণ চুক্তি করলাম এবং স্বাক্ষর করলাম। তারপর এই ব্যক্তি (ট্রাম্প) একতরফাভাবে চুক্তি ছিঁড়ে ফেলল।” তিনি আরও বলেন, “এমন অবস্থায় কীভাবে আলোচনা সম্ভব? আমরা জানি তারা কথা রাখবে না, তাহলে আলোচনা করার মানে কী?”
২০১৫ সালে ইরান বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল (Khamenei on Nuclear Talks)। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত রাখবে এবং বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প আমেরিকাকে ওই চুক্তি থেকে বের করে আনেন এবং নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়িয়ে তোলে।
ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কৌশল বজায় রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন
এই বছর জানুয়ারিতে ট্রাম্প পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইরানের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে তিনি আগের মতোই ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কৌশল বজায় রেখেছেন। খামেনি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের চাহিদা মাত্রাতিরিক্ত। তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে নিষেধাজ্ঞার ফাঁস আরও কঠিন হবে এবং ইরানের ওপর চাপ আরও বাড়বে।”
ইরান বরাবরই দাবি করেছে যে তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায় না।
খামেনি বলেন, “যদি আমরা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাইতাম, তাহলে আমাদের আমাদের থামাতে পারত না। কিন্তু আমরা নিজেরাই এটি চাই না।” তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) সম্প্রতি জানিয়েছে, ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়ে তুলেছে, যা ৯০ শতাংশ মাত্রার কাছাকাছি। এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়।
জাতিপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক
বুধবার জাতিপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদের একটি গোপন বৈঠকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ফ্রান্স, গ্রিস, পানামা, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন ও আমেরিকা এই বৈঠকের আহ্বান জানায়।
আরও পড়ুন: Ukraine Ceasefire Deal: ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিল, এখন সিদ্ধান্ত রাশিয়ার হাতে
ইরানি বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই বৈঠককে “ইরানের বিরুদ্ধে চাপ তৈরির নতুন কৌশল” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির সঙ্গে ইতিমধ্যেই চার দফা আলোচনা করেছি। শীঘ্রই পঞ্চম দফার আলোচনা হবে। কিন্তু জাতিপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদ বা আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা (IAEA) যদি আমাদের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করে, তাহলে এসব আলোচনার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।”
চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করবে ইরান
চীনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, চীন ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা শুক্রবার বেজিংয়ে ইরানের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের মূল এজেন্ডা ইরানের পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা।