ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পর্যটন কেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুকে ‘ভারত রাষ্ট্রের উপর আঘাত’ হিসেবে বর্ণনা করল কংগ্রেস (Kharge on Pahalgam attack)। বুধবার বেঙ্গালুরুতে সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে (Mallikarjun Kharge) কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বার্তা দিয়ে বলেন, “এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐক্য অত্যন্ত জরুরি। তাই কেন্দ্রের উচিত অবিলম্বে সর্বদল বৈঠক ডেকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করা।”
হামলার দায় স্বীকার করেছে টিআরএফ (Kharge on Pahalgam attack)
মঙ্গলবার দুপুরে বৈসরন উপত্যকায় যে ভয়াবহ জঙ্গিহানা হয়, তার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানঘেঁষা জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-তইবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ। ঘটনায় আরও অনেকে গুরুতর জখম হয়েছেন, যাঁদের শ্রীনগরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে গোটা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
অমিত শাহের তৎপরতা (Kharge on Pahalgam attack)
জঙ্গিহানার পরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জম্মু ও কাশ্মীরে যান (Kharge on Pahalgam attack)। সেখানে তিনি নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন এবং উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। খড়্গে জানান, অমিত শাহ কাশ্মীরে পৌঁছনোর পরে তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়। শাহ তাঁকে দ্রুত প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: Pahalgam Attack : পহেলগাঁও হামলার পর মোদীকে ফোন করে পাশে থাকার বার্তা দিলেন ট্রাম্প!
রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক (Kharge on Pahalgam attack)
এই ঘটনার পরে কংগ্রেস রাজনৈতিক ফায়দার পথে হাঁটবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন খড়্গে (Kharge on Pahalgam attack)। তিনি বলেন, “আমরা কোনওভাবেই এই শোকাবহ পরিস্থিতিতে বিতর্ক উস্কে দিতে চাই না। এখন রাজনৈতিক দোষারোপের সময় নয়। এখন একমাত্র প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য।” তিনি আরও জানান, জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার সঙ্গেও তাঁর আলোচনা হয়েছে।

সর্বদল বৈঠকের গুরুত্ব (Kharge on Pahalgam attack)
কংগ্রেসের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বদল বৈঠক ডেকে জাতীয় স্তরে এক যুক্ত বার্তা দেওয়া জরুরি। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরেও একটি পরিষ্কার বার্তা যাবে যে, ভারত জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। এই ধরনের বৈঠক কেবল কৌশলগত পদক্ষেপ ঠিক করতেই নয়, বরং সমগ্র জাতিকে একত্রিত করতেও সহায়ক হবে।
জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা প্রশ্নে উদ্বেগ (Kharge on Pahalgam attack)
এই হামলা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে। গত কয়েক মাসে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ ও বিচ্ছিন্নভাবে হামলার ঘটনা বাড়তে শুরু করেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ায় কাশ্মীরে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে, সেই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে জঙ্গিরা।
সরকারের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা (Kharge on Pahalgam attack)
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, পহেলগাঁও হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরজুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে (Kharge on Pahalgam attack)। সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী যৌথ অভিযান চালাচ্ছে জঙ্গি ঘাঁটি চিহ্নিত করতে। প্রধানমন্ত্রীও এই হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, “এই কাপুরুষোচিত হামলার কড়া জবাব দেওয়া হবে।”পহেলগাঁওয়ের ঘটনা কেবলমাত্র একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা নয়, বরং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে একটি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে এখন সময় ঐক্যের বার্তা দেওয়ার। কংগ্রেসের সর্বদল বৈঠকের দাবি এবং সরকারের সক্রিয়তা এই সংকটের সময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে—এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।