ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্ট হয়ে আরসিবি সমর্থকদের মৃত্যুর ঘটোনায় পুলিসকর্তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে (Kiran Bedi on Bengaluru Police Suspension)। এই ঘটনাকে, “অযৌক্তিক, অন্যায্য বা ব্যাখ্যাযোগ্য নয় এমন যেকোনো সাসপেনশন বাহিনীর জন্য হতাশাজনক। এটি খুব তাড়াহুড়ো করে করা হয়েছে”, বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন পুলিশকর্ত্রী কিরন বেদী।
“একতরফা সিদ্ধান্ত, দায় একা কমিশনারের নয়” — বললেন প্রাক্তন IPS অফিসার (Kiran Bedi on Bengaluru Police Suspension)
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে পদদলিত হয়ে মৃত্যু ও আহতের ঘটনায় বেঙ্গালুরু পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার বি দয়ানন্দকে সাসপেন্ড করাকে ‘অযৌক্তিক ও অন্যায্য’ বলে কড়া সমালোচনা করলেন প্রাক্তন IPS অফিসার কিরণ বেদী (Kiran Bedi on Bengaluru Police Suspension)। শনিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “প্রতিটি আইনশৃঙ্খলার ঘটনা আলাদা। কমিশনার কি সব কিছু উপেক্ষা করেছিলেন? কীভাবে একা তাকেই ধরে নেওয়া যায়? এটা একেবারেই অন্যায্য।”
তিনি আরও বলেন (Kiran Bedi on Bengaluru Police Suspension), “কমিশনার একা এই দায়ে ছিলেন না। রাজনৈতিক নেতৃত্বও এর সঙ্গে জড়িত ছিল। বেঙ্গালুরুর সাধারণ মানুষ জানেন না কে কী দায়িত্বে ছিলেন। একা কমিশনারকে টার্গেট করাটা ভুল।”
“বিচারহীন সাসপেনশন পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়” (Kiran Bedi on Bengaluru Police Suspension)
কিরণ বেদী বলেন (Kiran Bedi on Bengaluru Police Suspension), “যে কোনও সাসপেনশন যদি যুক্তিযুক্ত না হয়, তা বাহিনীর মনোবল নষ্ট করে। এই সিদ্ধান্তটা খুব হঠাৎ করে নেওয়া হয়েছে। কমিশনার পুরো ব্যবস্থারই একটা অংশ ছিলেন, যেটা হয় কার্যকর হয়েছে নয়তো ব্যর্থ হয়েছে।”
আরও পড়ুন: Tejashwi Yadav Convoy Rammed by Truck: ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন তেজস্বী যাদব
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের গেটে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর-সহ মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সকলেরই বয়স চল্লিশের নীচে। ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। বুধবার এই ঘটনা ঘটে, যখন হাজার হাজার মানুষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) আইপিএলে প্রথম জয়ের উদযাপনে স্টেডিয়ামে ভিড় করেছিলেন।
ঘটনার পরদিনই বেঙ্গালুরু পুলিশের কমিশনার বি দয়ানন্দকে “দায়িত্বে গাফিলতি”র অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়। তাঁর জায়গায় নিযুক্ত হন সিমান্থ কুমার সিং। ম্যাঙ্গালুরু সিটি পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়ালকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁর জায়গায় এসেছেন সুধীর কুমার রেড্ডি। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার রাজনৈতিক সচিব কে গোবিন্দরাজকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হেমন্ত নিম্বলকরকেও বদলি করা হয়েছে।
RCB-র বিরুদ্ধে আইনি লঙ্ঘনের অভিযোগ, তদন্তের দাবি পুলিশের
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন RCB-র মার্কেটিং প্রধানও। কিরণ বেদী বলেন, “পুলিশের বিশ্লেষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা প্রশাসন বনাম একটি সংগঠনের বিষয়। সব দিক শোনা উচিত, শুধু দোষ খোঁজার জন্য কাউকে বেছে নেওয়া ঠিক নয়।”
আরও পড়ুন: Starlink Internet Price: ভারতে লাইসেন্স পেল স্টারলিংক! কত হবে দাম?
“কমিশনারকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে” — ক্ষোভ পুলিশ মহলে
কিরণ বেদীর এই মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন পুলিশের আরও একাধিক প্রাক্তন আধিকারিক। বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও বলেন, “এভাবে একজন পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করা যায় না। তিনি এবং তাঁর দল সারা রাত শহরের নিরাপত্তা সামলেছেন। এখন তাকেই হঠাৎ সরিয়ে দেওয়া হল।”
ভাস্কর রাও আরও দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের চাপে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ওরা যেন লেজবিহীন রকেট। পুরো দোষ পুলিশ কমিশনার ও তাঁর টিমের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আগে কখনও দেখা যায়নি।”
পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সূত্র অনুযায়ী, এই ঘটনার পেছনে RCB-র তরফে আইনি লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা এই বিষয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।