Bankura Jilabi News: মুখে দিলেই ভরে যাবে মন! চেখে দেখুন স্পেশ্যাল 'জাম্বো জিলিপি'

দশম শতকের শুরুতে 'কিতাব ঊল তারিখ' নামে একটি পারসিক বই-এ উল্লেখ পাওয়া যায় একটি বিশেষ পদের নাম যার নাম 'জুলবিয়া'। তা পরবর্তীতে ভারতে এসে 'জিলিপি' (Gilabi) নাম নেয়।

Bankura Jilabi News: মুখে দিলেই ভরে যাবে মন! চেখে দেখুন স্পেশ্যাল 'জাম্বো জিলিপি'
প্রমাণ সাইজের জিলিপি (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: 'জিলাপি' তিন অক্ষরের এই নামটা শুনলেই চোখের সামনেই ভেসে ওঠে আড়াই প্যাঁচের প্যাচালো মিষ্টি। আর সেই জিলাপির সাইজ যদি হয় আড়াই থেকে তিন কেজি তবে আপনার জিভের রসনা তৃপ্তির সঙ্গে সঙ্গে মিটবে মনের স্বাদও। হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন, আড়াই থেকে তিন কিলো ওজনের জিলাপি! যা তৈরি হয় বাঁকুড়ার প্রাচীন জনপদ কেঞ্জাকুড়ার। তবে, এই জিলাপি সারা বছর পাওয়া যায় না। বিশেষ করে ভাদ্র সংক্রান্তি উপলক্ষে বিশ্বকর্মা পুজো ও ভাদু পুজোয় তৈরি হয় এমন জাম্বো মাপের জিলিপি। খেতে সুস্বাদ একই সঙ্গে মচমচে ও খাস্তা থাকে দীর্ঘদিন। তাই এই প্রমাণ মাপের জিলাপির চাহিদা তুঙ্গে। ১৫০ টাকা কেজি দরে এমন জিলাপি খেতে হলে আপনাকে আসতেই হবে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুরা গ্রামে। তবে স্থানীয়দের দাবি, কেঞ্জাকুড়ার জিলাপি বিখ্যাত নয়, জাম্বো জিলিপির জন্যই বিখ্যাত কেঞ্জাকুড়া গ্রাম। আর এই জিলাপি জেলা রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ি দিয়েছে সুদূর আমেরিকায়। এমনই দাবি এলাকাবাসী থেকে কারিগর-দোকানদার সকলের।

কথিত আছে, দশম শতকের শুরুতে 'কিতাব ঊল তারিখ' নামে একটি পারসিক বই-এ উল্লেখ পাওয়া যায় একটি বিশেষ পদের নাম যার নাম 'জুলবিয়া'। তা পরবর্তীতে ভারতে এসে 'জিলিপি' (Jilabi) নাম নেয়। ভোজন রসিক বাঙালি যেখানেই যাক প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের খোঁজ ঠিকই রাখে। আর সেই খাবার যদি মিষ্টি হয় তাহলে তো কোনও কথায় হবে না। যা শুধু বাংলা নয়। জিলিপি ভোজনরসিক বাঙালির কাছে একটা অন্যতম সেরা মিষ্টি। রাস্তার ধারে যদি কেউ দেখতে পান, গরম গরম প্যাঁচানো রসালো জিলাপি তৈরি হচ্ছে। একবার না চেঁখে দেখলে বাঙালির মন হাঁকপাক করে। 

বাঁকুড়া জেলার প্রাচীন জনপদ কেঞ্জাকুড়া দোকানগুলিতে এই সময় ঢুঁ মারলেই দেখা মিলবে জাম্বু জিলিপির। চালের গুঁড়ো, বিউলির ডাল, বেসন, ময়দা সঙ্গে বিভিন্ন রং দিয়ে তৈরি করা হয় জিলিপির ব্যাটার। সার দিয়ে থাকা উনানে বিরাট বিরাট কড়াইয়ে সেই ব্যাটার মিষ্টান্ন কারিগররা নিপুন হাতের কৌশলে আড়াই প্যাঁচ দেন জিলাপির। এরপর বিভিন্ন রং দিয়ে করা হয় জিলিপির উপর নকশা, চাহিদা অনুযায়ী উপহার হিসেবে লিখে দেওয়া হয় নাম ও ঠিকানাও। বাংলার ভাদু পুজো এবং বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে নাওয়া খাওয়া রাতদিন ভুলে জিলিপী তৈরিতে কারিগরদের চরম ব্যস্ততা। এক একটি জিলিপির ওজন ৭০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৩ কেজি অবধি হয়ে থাকে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে এই জিলিপি ক্রয় করার জন্য বাঁকুড়া জেলা সহ অন্যান্য জেলা থেকে আগত মানুষদের লম্বা লাইন পড়ে। মূলত উপহার হিসেবে দূর দূরান্তে পাড়ি দেয় বাঁকুড়ার এমন জিলাপি। এছাড়াও আত্মীয় স্বজনদের আবদার মেটাতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় ক্রেতাদের। চাহিদা অনুযায়ী বরাত মেটাতে রাত দিন এক করে চলে জাম্বো জিলাপি তৈরির ব্যস্ততা।