Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অফিসযাত্রী, ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ (Kolkata Railway Metro)—দৈনিক লাখো মানুষ এই রেলপথে ভরসা করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটাই অভিযোগ সবার মুখে—“রোজ লেট, রোজ ভোগান্তি!”। বিশেষত ব্যস্ত সময়ে মেট্রো সময়মতো না ছাড়ায় যাত্রীদের ভিড় গাদাগাদি হয়ে ওঠে, দরজা বন্ধ করাও দায় হয়ে যায়।

রেক ঘোরাতে দীর্ঘ সময়! (Kolkata Railway Metro)
প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছনোর পর ট্রেনকে বিপরীতমুখে ঘোরাতে বা চালু করতে যে সময় নেওয়া হচ্ছে, সেটিই বিলম্বের অন্যতম কারণ। আগের নিয়মে, রেকের দুই প্রান্তেই পূর্ণ প্রশিক্ষিত লোকো পাইলট থাকতেন। ফলে গন্তব্যে পৌঁছেই অন্য প্রান্তের লোকো পাইলট নতুন দিকের নিয়ন্ত্রণ কনসোলে বসে কয়েক মিনিটের মধ্যে ট্রেন চালু করতে পারতেন।
বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। এখন রেকের এক প্রান্তে লোকো পাইলট থাকলেও অন্য প্রান্তে থাকেন গার্ড। গার্ডকে “সহকারী লোকো পাইলট” বলা হলেও তিনি সুড়ঙ্গের মধ্যে ট্রেন চালান না। অর্থাৎ, টার্মিনাল স্টেশনে পৌঁছে লোকো পাইলটকেই হেঁটে গিয়ে অপর প্রান্তের কেবিনে বসতে হয়। এর ফলে “হ্যান্ডওভার”–“টেকওভার” প্রক্রিয়ায় কয়েক মিনিট সময় নষ্ট হয়, আর একটির পর একটি ট্রেনের শিডিউল পিছিয়ে যায়।

জনবলের ভয়াবহ ঘাটতি (Kolkata Railway Metro)
- ব্লু লাইনে কর্মীসংকট প্রবল।
- ২৪৭টি মোটরম্যানের পদ খালি, ফলে বিদ্যমান জনবল দিয়েই শিফট সামলাতে হচ্ছে।
- ব্লু লাইনেই দরকার ১০৪ জন ট্র্যাক ম্যান, অথচ হাতে আছে মাত্র ৮৪ জন।
- এই অল্পসংখ্যক কর্মী দিয়েই বাকি অরেঞ্জ, গ্রিন, ইয়েলো, পার্পল লাইনগুলিরও কাজ সামলাতে হচ্ছে।
- পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন কর্মীদের অতিরিক্ত শিফট করতে হয়, এতে ক্লান্তি ও চাপ বাড়ছে, যা নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।

যাত্রীদের ওপর প্রভাব (Kolkata Railway Metro)
- অতিরিক্ত ভিড়
- সময়মতো ট্রেন না ছাড়ায় প্ল্যাটফর্মে যাত্রী জমে যায়।
- দরজা বন্ধ করতে সমস্যা
- গাদাগাদি ঠাসাঠাসি অবস্থায় দরজা আটকে যাওয়া বা সময় লাগা প্রায় নিয়মিত ঘটনা।
- অফিস ও স্কুলের সময় নষ্ট
- মানসিক ক্লান্তি
নতুন নিয়োগ (Kolkata Railway Metro)
দ্রুত মোটরম্যান, ট্র্যাক ম্যান ও অন্যান্য কারিগরি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। দক্ষ কর্মী বাড়লে শিফটের চাপ কমবে এবং পরিষেবা নিয়মিত হবে।
গার্ডদের প্রশিক্ষণ উন্নত করা (Kolkata Railway Metro)
গার্ডদের প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদেরকেও সুড়ঙ্গের ভিতরে ট্রেন চালাতে সক্ষম করা হলে প্রান্তিক স্টেশনে রেক ঘোরানোর সময় কমে যাবে।
প্রযুক্তি ও সিগন্যালিং আধুনিকীকরণ
রির্ভাসেবল পয়েন্টে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ও দ্রুত কনসোল পরিবর্তন ব্যবস্থা আনলে অপারেশনাল সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণ জোরদার
প্রতিটি লাইনের জন্য আলাদা ট্র্যাক ম্যান নিয়োগ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে সুরক্ষা ও গতি দুই-ই বজায় থাকবে।
শিডিউল রিভিউ ও লোড ম্যানেজমেন্ট
যাত্রীচাপ অনুযায়ী পিক আওয়ারে অতিরিক্ত ট্রেন চালানো, লাইনের লোড ব্যালান্সিং ও সঠিক সময়ে ছাড়ার জন্য নতুন সময়সূচি প্রণয়ন জরুরি।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro: সত্যি বন্ধ হলো কি মেট্রোর নাইট স্পেশ্যাল!
আগামী পথ
মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী করতে তারা চায় না। পরিকাঠামো ও জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আরাম নিশ্চিত করতে নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। যদি এসব ব্যবস্থা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই যাত্রীদের এই ভয়ঙ্কর বিলম্ব ও গাদাগাদি থেকে স্বস্তি মিলতে পারে।