ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ফ্যাটি লিভার (Liver Disease) এক সময় যেটিকে ভাবা হতো কেবল খাদ্যাভ্যাসের ফল, আজ তা চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিরিক্ত তেল-মশলা, ভাজাভুজি কিংবা প্রক্রিয়াজাত খাবারের জন্য লিভারে ফ্যাট জমে, এতো জানা কথাই। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস যেমন নিজের ইচ্ছেমতো ব্যথানাশক খাওয়া ফ্যাটি লিভার থেকে শুরু করে সিরোসিসের মতো জটিল রোগের জন্ম দিচ্ছে।
লিভারে মারাত্মক ক্ষতি! (Liver Disease)
ব্রিটেনের কিংস্টোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা (Liver Disease) বলছে, প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন, স্টেরয়েড বা অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার লিভারে মারাত্মক ক্ষতি করে। এমনকি ভারতের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এর রিপোর্টেও স্পষ্ট বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার জন্য ওষুধ সেবনে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কারণ অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খেয়ে থাকেন। এর ফলে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া যেমন বাধা পায়, তেমনি লিভার ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গও মার খায়।
ফ্যাটি লিভারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় (Liver Disease)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্যাটি লিভারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক (Liver Disease)। অতিরিক্ত মদ্যপান করলে প্রথমটি হয়, আর অনিয়মিত জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস ও ওষুধের অপব্যবহার দায়ী দ্বিতীয়টির জন্য। সমস্যার গভীরতা এতটাই যে, এটি যদি সময়মতো ধরা না পড়ে ও নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তা হলে সিরোসিসের দিকে গড়াতে পারে।

লিভার বিপর্যস্ত হওয়ার প্রাথমিক উপসর্গ
চলতি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সিদের মধ্যে এমন প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। হালকা ব্যথা, মাথাব্যথা বা পিঠ-কোমরের যন্ত্রণায় অনেকে নিজের মতো করে ওষুধ খেয়ে নেন। দীর্ঘদিন ধরে এই ধারা চালিয়ে গেলে দেখা যায় বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, তলপেটে ব্যথা বা প্রস্রাবের রং ঘন হয়ে আসছে। এসবই লিভার বিপর্যস্ত হওয়ার প্রাথমিক উপসর্গ।

আরও পড়ুন: Landslide in North Bengal: উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টি, জলস্তর বেড়ে বিপদের আশঙ্কা!
তবে শুধু লিভারই নয়-বাড়তি ডোজের ব্যথানাশকে দেখা গেছে পেপটিক আলসার, কিডনি সমস্যাও। কারও কারও ক্ষেত্রে হাইপারটেনশন বা হৃদরোগ পর্যন্ত ধরা পড়েছে। সব মিলিয়ে আজকের দিনে দরকার আরও বেশি সতর্কতা। অল্প কিছু উপসর্গ দেখলেই ওষুধ নয়, বরং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ ওষুধ তখনই কাজ করে যখন তা নির্দিষ্ট মাত্রায়, সঠিক সময়ে গ্রহণ করা হয়। অন্যথায়, তা হয়ে উঠতে পারে এক নীরব ঘাতক, যার শিকার হতে হয় অজান্তেই।