ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রথযাত্রা উৎসবের ঠিক আগে মাহেশে ছড়িয়েছে উত্সবের রঙ। শ্রীরামপুরের মাহেশের রথযাত্রা (Mahesh Rath Yatra) শুধু বাংলায় নয়, সমগ্র ভারতেই এক ঐতিহাসিক পরিচিতি বহন করে। রাত পোহালেই মাহেশে শুরু হচ্ছে ৬২৯তম রথযাত্রা। শহরের আনাচে-কানাচে ইতিমধ্যেই বাজতে শুরু করেছে ঢাক-ঢোল, সাজিয়ে তোলা হয়েছে রথ-পথ, জগন্নাথ মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
মাহেশের রথের সূচনা করেছিলেন সাধক ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী। সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে আজও মাহেশ। ইতিহাস বলছে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু থেকে শুরু করে ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব—অনেক মহাপুরুষ এই রথযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। এই ধারাবাহিকতায় এবার ৬২৯ বছরে পদার্পণ করল মাহেশের রথযাত্রা।
পুরনো রথ, নতুন উৎসব (Mahesh Rath Yatra)
মাহেশের বিখ্যাত লোহার রথটি তৈরি হয়েছিল মার্টিন বার্ন কোম্পানির হাতে। এবারও সেই রথেই মহাযাত্রা করবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। শুক্রবার বিকেল ৪টের সময় তিথি মেনে শুরু হবে রথ টানার কাজ। তবে তার আগে সকাল ৮টায় গর্ভগৃহ থেকে বেরিয়ে এসে ভক্তদের দর্শন দেবেন জগন্নাথদেব।
রীতি অনুযায়ী স্নানযাত্রার পর জগন্নাথের ধুম জ্বর আসে। লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন তিনি। এই সময়টিকে বলা হয় “অনবসর”, যখন মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে এবং ভক্তদের দর্শন মেলে না। এরপর কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর সারে এবং হয় “নবযৌবন উৎসব”।

রাজবেশে জগন্নাথ (Mahesh Rath Yatra)
নবযৌবনের পর এদিন জগন্নাথদেবকে রাজবেশে সাজানো হয়। অলঙ্কারে সজ্জিত হয়ে তিনি ভক্তদের দর্শন দেন। এদিন মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়, যাতে ভক্তরা চোখের দেখা পান প্রভুর।
কাল দুপুরে দামোদর নামক এক বিশেষ অনুষ্ঠানের পর একে একে রথে আরোহন করবেন নারায়ণ শিলা, শুভদ্রা, বলরাম এবং শেষে জগন্নাথদেব। বিকেল ৪টের দিকে রথ যাত্রা শুরু করবে মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশ্যে।
মাহেশে মেলা, নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো (Mahesh Rath Yatra)
রথযাত্রা ঘিরে বসছে মেলা, স্নান পিড়ির মাঠজুড়ে। রথের দড়ি টানতে হাজির হন হাজার হাজার ভক্ত। সেই কারণে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানিয়েছেন, প্রায় ২ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকবেন। রথপথে থাকবে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের নজরদারি।
উৎসব (Mahesh Rath Yatra) নির্বিঘ্ন করতে জিটি রোডে ভারী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা হবে সকাল থেকেই এবং দুপুরের পর থেকে থাকবে নো এন্ট্রি জোন।