ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম (Mamata Banerjee Contempt Notice) কোর্টের রায় নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে নোটিস জারি করা হয়েছে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আত্মদীপ’-এর তরফে আইনজীবী সিদ্ধার্থ দত্ত এই নোটিস পাঠিয়েছেন। ১০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে পাঠানো এই আইনি নোটিসে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের ৩ এপ্রিলের রায়ের সরাসরি বিরোধিতা করে।
ক্ষোভ উগরেই বিপত্তি (Mamata Banerjee Contempt Notice)
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালত কলকাতা হাই কোর্টের (Mamata Banerjee Contempt Notice) নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে রাজ্যের প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে। সেই রায় নিয়েই ৮ এপ্রিল এক জনসভায় ক্ষোভ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কারও চাকরি কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। আমাদের প্ল্যান এ, বি, সি, ডি, ই— সব তৈরি। আমায় জেলে পাঠাতে হলে পাঠান, আমি ভয় পাই না। কাজ চালিয়ে যান। কেউ আপনাকে বাধা দিচ্ছে না। কিন্তু মনে রাখবেন, আমরা বিকল্প পথেই কাজ করব।”
বিচারব্যবস্থার অবমাননা (Mamata Banerjee Contempt Notice)
তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে ‘সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদাকে (Mamata Banerjee Contempt Notice) প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং রায়কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা’র অভিযোগ উঠেছে। আইনি নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্য দেশের বিচারব্যবস্থার উপর আঘাত এনেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ‘সুপরিকল্পিত ও ইচ্ছাকৃতভাবে’ বিচারব্যবস্থার অবমাননা বলেই চিহ্নিত করেছেন আইনজীবী দত্ত।
বেআইনি নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিতে ফেরানোর পরিকল্পনা!
এই নোটিসে আরও বলা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে রায় কার্যকর করার পরিবর্তে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন এবং বেআইনি নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিতে ফেরানোর নানা ‘পরিকল্পনার’ কথা বলেছেন। জনসভায় তিনি বলেন, “৯ম, ১০ম, ১১তম ও ১২তম শ্রেণির শিক্ষকরা উচ্চ শিক্ষার ভিত্তি। এঁদের অনেকেই স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। তাঁদের চোর বা অযোগ্য বলার অধিকার কার আছে? এটা ষড়যন্ত্র। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পরিকল্পনা চলছে। আমি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করছি।”
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ‘আত্মদীপ’-এর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে—
- রাজ্য সরকার যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে চলার নির্দেশ দেয়।
- মুখ্যমন্ত্রী যেন ভবিষ্যতে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
- মুখ্যমন্ত্রী যেন তাঁর এই মন্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আরও পড়ুন: Kolkata Traffic Jam: দু’প্রান্তে দু’টি কর্মসূচি, সকাল থেকেই কলকাতার রাস্তায় যানজটের ধাক্কা!
নোটিসে হুঁশিয়ারি
নোটিসে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, এই দাবিগুলি পূরণ না হলে, সংবিধানের ১২৯ অনুচ্ছেদ এবং ১৯৭১ সালের কনটেম্পট অফ কোর্টস আইনের আওতায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। এখন দেখার, মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া আসে এই নোটিসের পর।