ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : টানা বৃষ্টির জেরে শহর কলকাতায় ভেঙে পড়ছে একের পর এক বাড়ি। এবার উত্তর কলকাতার মানিকতলা এলাকায় ভেঙে পড়ল শতাব্দীপ্রাচীন একটি ভবন। শনিবার সকালে মানিকতলা মেন রোড সংলগ্ন একটি প্রাচীন দোতলা রাজবাড়ির একাংশ আচমকাই ভেঙে পড়ে।ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন পাঁচ জন। আহতদের উদ্ধার করে তড়িঘড়ি ESI হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কী ঘটেছে ? (Maniktala)
১২১/৪ কে মানিকতলা মেইন রোডে (Maniktala) অবস্থিত দোতলা বাড়ি এটি। একসময় জমিদার বা রাজবাড়ি বলেও পরিচিত ছিল এটি। কর্পোরেশন থেকে পুরনো বাড়ি হিসেবে নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সকাল প্রায় ৬টা নাগাদ আচমকা বিকট শব্দে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে পাশের একতলা বাড়ির উপর। সেই সঙ্গে একটি ভারী চাঙর খসে পড়ে পাশে থাকা একটি বহুতল আবাসনের কেয়ারটেকারের ঘরের উপর, যেখানে পাঁচজন ঘুমিয়ে ছিল। চাঙরের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয় তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় মানিকতলা থানার পুলিশ বাহিনী। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আহত ৪ জন কে ছেড়ে দেওয়া হয়। একজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন : Calcutta High Court : ‘আজই FIR করুন’, আসানসোল পুরনিগমের বিরুদ্ধে কড়া নির্দেশ আদালতের
কলকাতা পুরসভার দাবি (Maniktala)
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তি রঞ্জন কুণ্ডু জানান, -“বাড়িটি প্রায় ২০০ বছরের পুরনো একটি রাজবাড়ি। ৫ বছর আগেই কলকাতা পুরসভার তরফে এটিকে ‘বিপজ্জনক বাড়ি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং বাড়ির গায়ে সেই সংক্রান্ত নোটিশও ঝোলানো হয়েছিল।” তবে শরিকি সমস্যা ও দীর্ঘমেয়াদি আইনি জটিলতার কারণে বাড়িটি ভেঙে ফেলা কিংবা সংস্কারের কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।
কাউন্সিলরের দাবি, বাড়িটির যে অংশ ভেঙে পড়েছে সেখানে কেউ বসবাস করতেন না। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন যে ওই ভবনের অন্য অংশে এখনো কয়েকটি পরিবার বসবাস করছিলেন। এমন অবস্থায় ভবনের একাংশ ধসে পড়ায় আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
টানা বৃষ্টির প্রভাব
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণের ফলেই বাড়িটির কাঠামো আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিল, যার ফলস্বরূপ এই বিপর্যয়। প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই থেকে ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে শহরের বিভিন্ন অংশে অন্তত ছয়টি পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঐ বাড়িগুলি কলকাতা পুরসভার বিপজ্জনক বাড়ির তালিকাভুক্ত ছিল।