ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: জামশেদপুরে ধাক্কা মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের। আইএসএলে সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে জামসেদপুর এফসি’র কাছে হেরে গেল লিগ শিল্ড জয়ী মোহনবাগান (Jamshedpur FC vs Mohun Bagan)। ২-১ গোলে হারালো হোসে মোলিনার দল। প্রতিপক্ষের প্রতিআক্রমণের চক্রব্যুহে দিকভ্রষ্ট হলেন শুভাশিস বোসরা। জামশেদপুর এফসি’র হয়ে গোল করলেন সিভেরিওর ও জাভি হার্নান্ডেজ। মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের হয়ে গোল জেসন কামিন্সের।
দ্বিতীয় লেগে মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট সাত এপ্রিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে ফের জামশেদপুর এফসির মুখোমুখি হবে। ওই ম্যাচটাই লিগ শিল্ড জয়ীদের ফাইনালে ওঠার লাইফলাইন। ওই ম্যাচে মোহনবাগানকে ২ গোলের ব্যবধানে জিততেই হবে। ১ গোলের ব্যবধানে জিতলে হবে এক্সট্রা টাইম এবং টাইব্রেকার। কোনওভাবেই ড্র করা চলবে না। ড্র হলে ছিটকে যাবে মোহনবাগান।
আইএসএল ফাইনালে ওঠার লড়াই কঠিন হল মোহনবাগানের (Jamshedpur FC vs Mohun Bagan)
জামশেদপুরে গিয়ে জামশেদপুর এফসিকে হারানো বরাবরই কঠিন চ্যালেঞ্জ। জামশেদপুরের কোচ খালিদ জামিল আইএসএলে বিদেশি কোচেদের ভিড়ে ধূর্ততম ভারতীয় কোচ। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে আটকাতে বৃহস্পতিবার প্রথম থেকেই সবুজ-মেরুণের মাঝমাঠের ‘প্লে মেকার’ গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নজরবন্দী করে ফেলে জামশেদপুর। চোট থাকা মনবীর সিং এবং আপুইয়াকে ছাড়াই এদিন নেমেছিল মোহনবাগান (Jamshedpur FC vs Mohun Bagan)। প্রথম একাদশে ছিলেন না দিমিত্রি পেত্রাতোস এবং জেমি ম্যাকলারেনও। তাঁদের জায়গা পূরণ করা সহজ ছিল না। প্রথমার্ধ সেই অভাব বোঝা গেল। বিশেষত আপুইয়া না থাকায় মাঝমাঠে আরও নিষ্ক্রিয় দেখাচ্ছিল।
ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি পেতে পারত জামশেদপুর। নিখিল বারলার শট লাগে আশিস রাইয়ের হাতে। জামশেদপুরের ফুটবলারেরা পেনাল্টির আবেদন করলেও রেফারি তাতে কর্ণপাত না করে কর্নার দেন। শুরু থেকেই দাপট ছিল জামশেদপুরেই। ২৪ মিনিটে মহম্মদ উবেশ যাদবের লম্বা থ্রো বক্সের মধ্যে স্টিফেন এজে ধরে সিভেরিওকে বাড়িয়ে দেন। ইস্টবেঙ্গলের বাতিল স্প্যানিশ স্ট্রাইকার গোল করতে ভুল করেননি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় জামশেদপুর (Jamshedpur FC vs Mohun Bagan)। ৩৪ মিনিটের মাথায় সমতায় ফেরার সুযোগ এসে গিয়েছিল মোহনবাগানের কাছে। গ্ৰেগ স্টুয়ার্টের ফ্রিকিক থেকে আলবের্তো রড্রিগেজের হেড বারে লেগে ফিরে এলে জামশেদপুর গোলরক্ষক আলবিনো গোমস তা সহজেই ধরে ফেলেন।

তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি মোহনবাগানকে। তিন মিনিট পরেই সমতা ফেরায় মোলিনার দল। ৩৭ মিনিটের মাথায় নিজের অর্ধে একটি বল রিসিভ করতে পারেননি আশুতোষ মেহতা। সেই বল ধরে এগোতে গিয়েছিলেন জেসন কামিংস। সামনে কেউ ছিলেনও না। তাঁকে আটকাতে ট্যাকলে করেন মেহতা। ফাউল দেন রেফারি। মেহতাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দেন রেফারি (Jamshedpur FC vs Mohun Bagan)। বক্সের বাইরে ৩৫ গজ দূর থেকে দুরন্ত ফ্রিকিকে দলকে সমতায় ফেরান কামিংস। যা কোনও ভাবেই আটকানো সম্ভব ছিল না জামশেদপুর গোলরক্ষকের পক্ষে।
এদিন স্টুয়ার্টের সঙ্গে কামিংকে জুড়ে আক্রমণ সাজিয়েছিলেন মোলিনা। কিন্তু খালিদ জামিলের রক্ষনাত্মক ছকের সামনে বারবার যাবতীয় আক্রমণ প্রতিহত হতে থাকে মোহনবাগানের। তবে বিরতির পরে মোহনবাগান আক্রমণে ঝড় তোলে। এই সময় একের পর আক্রমণ কোনওরকমে রুখে দিচ্ছিল জামশেদপুর রক্ষন। মনে হচ্ছিল মোহনবাগানের গোল পাওয়া সময়ের অপেক্ষা (Jamshedpur FC vs Mohun Bagan)। এই সময় পেত্রাতোস ও ম্যাকলারেনকে নামালেও মোলিনার কৌশল ব্যর্থ।
কড়া নজরদারিতে দুই ফুটবলাররাই কাজের কাজটি করতে পারেননি। উল্টে ফের প্রতি আক্রমণে বাজিমাত করে যায় খালিদ জামিলের দল। ম্যাচের সংযোজিত সময়ে বাঙালি ফুটবলার ঋত্বিক দাসের ব্যাকসেন্টার থেকে বল পেয়ে জামশেদপুরের হয়ে জয়সূচক গোলটি করে যান জাভি হার্নান্ডেজ। আর তাতেই মোহনবাগানের ফাইনালে ওঠার রাস্তাটা কঠিন হয়ে গেল। এখন যা পরিস্থিতি তাতে ফাইনালে উঠতে মোহনবাগানকে ৭ তারিখ যুবভারতীতে ২ গোলের ব্যবধানে জামশেদপুরকে হারাতেই হবে। ঘরের মাঠে নিজেদের দর্শকের সামনে যে মোহনবাগান ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে অলআউট ঝাঁপাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।