Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মায়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি হলো বৃহস্পতিবার(Mayanmar Cricis)। চার বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশজুড়ে চলা সামরিক শাসনের অবসান ঘটানোর ইঙ্গিত দিয়ে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও গণতান্ত্রিক কার্যকলাপের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিলেন জেনারেল মিন আং হ্লাইং। একইসঙ্গে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিল সামরিক প্রশাসন।
এই ঘোষণাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ‘পিছু হটার বার্তা’ বলেই ব্যাখ্যা করছেন। কারণ, গত এক বছরে সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি। বিশেষ করে ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’— যার নেতৃত্বে ছিল তিনটি বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠী— তাদের ‘অপারেশন ১০২৭’ অভ্যন্তরীণ সংঘাতে জুন্টাকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল সেনা প্রশাসনের হাতছাড়া হয়েছে(Mayanmar Cricis)।
২০২১-এ গণতন্ত্র থেকে সরে দাঁড়ানো (Mayanmar Cricis)
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের সেনাবাহিনী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে(Mayanmar Cricis)। সেই সময় গৃহবন্দি করা হয় নোবেলজয়ী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চি-কে। এরপর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ, যার এক পর্যায়ে তা রূপ নেয় পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধে।
গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দল, জনজাতি গোষ্ঠী ও ছাত্র সমাজের যৌথ প্রতিরোধে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে হ্লাইং প্রশাসন। নভেম্বর ২০২3 থেকে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ১০২৭’-এর ফলে মায়ানমারের (Myanmar) উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
চুক্তি, যুদ্ধবিরতি ও নতুন মিত্রতা (Mayanmar Cricis)
যদিও চলতি বছরের জানুয়ারিতে(Mayanmar Cricis) মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (MNDAA) সামরিক জুন্টার সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়, তবে অপর দুই প্রধান বিদ্রোহী সংগঠন— তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (TNLA) এবং আরাকান আর্মি (AA)— বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে চিন ন্যাশনাল আর্মি (CNA), চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (CDF), কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স (KLDF) ও পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (PDF)।
এই সম্মিলিত হামলার ফলে মায়ানমার সেনার মনোবল ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

চিনের ভূমিকা (Mayanmar Cricis)
গৃহযুদ্ধ থামাতে গত এক বছর ধরেই পর্দার আড়ালে সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে চলেছে চীন। অর্থনৈতিক ও কৌশলগত কারণে মায়ানমারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা বেজিংয়ের স্বার্থে। অনেকেই মনে করছেন, জুন্টা সরকারের এই ভোটের প্রতিশ্রুতি ও জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পেছনে চীনের কূটনৈতিক চাপই মূল চালিকাশক্তি।

আরও পড়ুন: US Tariff War : দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম শুল্ক পাকিস্তানের উপর! কেন এই সিদ্ধান্ত?
ভোট হবে, তবে বিশ্বাসযোগ্যতা? (Mayanmar Cricis)
জেনারেল হ্লাইংয়ের ঘোষণায় মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীরা আংশিকভাবে স্বস্তি পেলেও ভোট কতটা অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে। অতীতে সেনা শাসনের ছায়ায় আয়োজিত নির্বাচনে ফলাফল নিয়েও ছিল বিতর্ক(Mayanmar Cricis)।
জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার এবং ডিসেম্বরে ভোটের ঘোষণা নিঃসন্দেহে মায়ানমারের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় খবর। তবে ক্ষমতা হস্তান্তর কতটা মসৃণ হবে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি এতে কতটা আস্থা রাখে এবং আন্তর্জাতিক মহল কতটা গ্রহণযোগ্যতা দেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।