ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় বিমানবাহিনীর অস্ত্রাগারে ৩৬টি মিগ-২১ বিমান অবশিষ্ট রয়েছে (MiG-21 to be phased out), যা আগে ছিল প্রায় ৯০০টি, যার মধ্যে প্রায় ৬৬০টি ভারতে নির্মিত। সেই সংখ্যার থেকে বর্তমান সংখ্যা অনেক দূরে যা দেশের আকাশ এবং অঞ্চলগুলিকে রক্ষা করেছিল।
মিগ-২১ এর জায়গায় আসছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি তেজস এমকে-১এ (MiG-21 to be phased out)
ভারতীয় বায়ুসেনার দীর্ঘদিনের যুদ্ধসঙ্গী মিগ-২১ বিমান সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সক্রিয় পরিষেবা থেকে পুরোপুরি অবসর নিচ্ছে (MiG-21 to be phased out)। এই প্রাচীন কিন্তু নির্ভরযোগ্য যুদ্ধবিমানের জায়গা নিচ্ছে তুলনায় আধুনিক এবং দ্রুতগামী দেশীয় তৈরি তেজস এমকে-১এ ফাইটার জেট। বর্তমানে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে মাত্র ৩৬টি মিগ-২১ বিমান অবশিষ্ট আছে। এক সময় এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০০, যার মধ্যে ৬৬০-এর বেশি ভারতেই তৈরি হয়েছিল। এই যুদ্ধবিমান বহু বছর ধরে ভারতের আকাশ এবং সীমানা রক্ষা করেছে সাফল্যের সঙ্গে।
১৯৬৩ সাল থেকে শুরু হয়েছিল মিগ-২১ এর যাত্রা (MiG-21 to be phased out)
রাশিয়ায় তৈরি এই বিমান প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় বায়ুসেনার কাজে যুক্ত হয় ১৯৬৩ সালে (MiG-21 to be phased out)। এরপর মধ্য ২০০০-এর দশক পর্যন্ত এটি বায়ুসেনার মেরুদণ্ড ছিল। পরে তার জায়গায় আসে আধুনিক সুখোই সু-৩০ এমকেআই। ভারতে যে মডেলটি দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হয়েছে, সেটি ছিল মিগ-২১ বায়সন। এতে উন্নত ইলেকট্রনিক্স, নেভিগেশন এবং কমিউনিকেশন সিস্টেম যুক্ত ছিল। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে রাজস্থানের বারের আকাশে শেষবারের মতো উড়েছিল মিগ-২১। সেই সময়ের সেই স্কোয়াড্রন ছিল ‘নম্বর ৪’। এই ‘বিদায় উড়ান’ পরিচালনা করেছিল পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় কর্তব্যরত সুখোই যুদ্ধবিমানগুলির সঙ্গে।
২০২৫-এর মধ্যেই শেষ হবে মিগ-২১ এর সব পরিষেবা (MiG-21 to be phased out)
তৎকালীন বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভি আর চৌধুরী জানিয়েছিলেন, “আমরা ২০২৫-এর মধ্যে মিগ-২১ বিমান পুরোপুরি চালানো বন্ধ করে দেব এবং তার জায়গায় আসবে এলসিএ মার্ক-১এ।” ২০২২ সালের জুলাই মাসে বায়ুসেনা নিশ্চিত করেছিল, তারা তিন বছরের মধ্যে বাকি থাকা চারটি মিগ-২১ স্কোয়াড্রনকে ধাপে ধাপে অবসরে পাঠিয়ে দেবে। একইসঙ্গে ২০২৭ সালের মধ্যে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানগুলিও অবসরে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: How will the next vice-president be chosen: ধনখরের আকস্মিক ইস্তফা! কে হবেন পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি?
পরপর দুর্ঘটনার কারণেই নেওয়া হয়েছে অবসরের সিদ্ধান্ত
বয়সের ভারে জর্জরিত এই যুদ্ধবিমানটির একাধিক দুর্ঘটনার কারণে অবসরের সিদ্ধান্ত ত্বরান্বিত হয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে রাজস্থানে একটি দুর্ঘটনায় তিনজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। এই বিমানটি রাজস্থানের হনুমানগড়ের বেহলোল নগরের কাছে ভেঙে পড়ে। এটি রুটিন অনুশীলনে অংশ নিতে সূরৎগড় বিমানঘাঁটি থেকে উড়েছিল। পরে জানা যায়, ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে বিমানটি ভেঙে পড়ে। এই ঘটনার পরই মিগ-২১ বিমানের পুরো বহর সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল।
কারগিল যুদ্ধ ও বালাকোট স্ট্রাইকে অবদান রেখেছিল মিগ-২১
যে স্কোয়াড্রনগুলিকে আগে অবসর দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ছিল শ্রীনগর-এর ‘নম্বর ৫১’ স্কোয়াড্রন। এটি কারগিল যুদ্ধে ‘অপারেশন সাফেদ সাগর’-এ অংশ নিয়েছিল। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বালাকোটে সন্ত্রাসবাদী শিবিরে ভারতীয় এয়ারস্ট্রাইকের পর পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণ রুখে দিয়েছিল এই স্কোয়াড্রন। এই স্কোয়াড্রনেরই এক পাইলট ছিলেন উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান, যিনি বর্তমানে গ্রুপ ক্যাপ্টেন। তিনি একটি পাক জেট গুলি করে নামিয়ে ছিলেন, যদিও পরে নিজেও পাকিস্তানে আটক হন।
আরও পড়ুন: ECI: আধার-ভোটার-রেশন কার্ডে সায় নেই! সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা নির্বাচন কমিশনের
তৈরি হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ ফাইটার
এদিকে ভারত একটি পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরি করছে, যা দেশকে যুক্ত করবে বিশ্বের সেই অভিজাত ক্লাবে, যেখানে এমন প্রযুক্তি রয়েছে মাত্র তিনটি দেশের। এই ‘অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট’ (AMCA) একটি একক আসনের, দ্বি-ইঞ্জিনের যুদ্ধবিমান হবে। এতে থাকবে উন্নত স্টেলথ কোটিং, অভ্যন্তরীণ অস্ত্র বহনের সুবিধা এবং অধিকাংশ প্রযুক্তি দেশীয়ভাবে তৈরি হবে বেঙ্গালুরুর অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিতে। এর প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৫,০০০ কোটিরও বেশি টাকা।