ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: প্রায় ১৬ বছর আগে দু’ দেশে ভারত আমেরিকার(Modi-Donald Trump Meet) মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। ভারতে আরও বেশি পরমাণু চুল্লি তৈরি করবে আমেরিকা। এই বিষয়ে সহমত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদী, দু’জনেই। হোয়াইট হাউসে বৈঠকে দুই রাষ্ট্রনেতা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অসামরিক পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে পরস্পরকে আরও বেশি সহায়তা করবে দুই দেশ।
১৬ বছর আগের চুক্তি মান্যতা (Modi-Donald Trump Meet)
প্রায় ১৬ বছর আগে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি মেনেই এ দেশে আরও বেশি করে নিজেদের তৈরি এবং নকশা করা পরমাণু চুল্লি বসাবে আমেরিকা(Modi-Donald Trump Meet)। যৌথ বিবৃতি দিয়ে দুই দেশের তরফে জানানো হয়েছে, আমেরিকার নকশা করা পরমাণু চুল্লি ভারতে তৈরির বিষয়ে দুই দেশ সহমত হয়ে কাজ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০০৫ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সে সময় অসামরিক পারমাণবিক ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগিতা করার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করে দুই দেশ। স্থানীয় প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে এই কাজ হবে।
পিছিয়ে যায় আমেরিকা (Modi-Donald Trump Meet)
দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পরে ২০০৮ সালে দুই দেশ চুক্তি করে।মনে করা হয়েছিল, তার পর ভারতে অসামরিক পারমাণবিক ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে আমেরিকা(Modi-Donald Trump Meet)। আরও বেশি সাহায্য দেবে। কিন্তু এ দেশের আইনের অধীনে পরমাণু চুল্লিতে দুর্ঘটনা এবং তার দায়বদ্ধতা চুক্তির কারণে ১৬ বছর ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে কোনও কাজ অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়নি। ওই চুক্তি অনুযায়ী, দ্বিপাক্ষিক অসামরিক পরমাণু প্রকল্প শুরু হওয়ার বহু বছর পরেও যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তা হলেও বিনিয়োগকারী বিদেশি সংস্থা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। সেই কারণে পিছিয়ে যায় আমেরিকা।
পারমাণবিক বিদ্যুতের ক্ষেত্রেই কার্বন নিঃসরণ শূন্য
পৃথিবীতে দূষণ ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থায় একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুতের ক্ষেত্রেই কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ প্রায় শূন্য। সে কারণে বহু দেশ এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। পারমাণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান একে মোহান্তি একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে এ দেশে ১০০ গিগাওয়াট পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতে পারে দেশে। যদিও এই শক্তি উৎপাদনে জ্বালানির জোগান সীমিত। সে কারণে বেসরকারি সংস্থাগুলি ছোট চুল্লি বসানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। এ বার সেই পথই প্রসারিত হতে চলেছে। এ দেশে আরও বেশি পরমাণু চুল্লি বসাবে আমেরিকা।
‘পরমাণু শক্তি মিশন’
বাজেট ঘোষণার সময়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘পরমাণু শক্তি মিশন’ গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কূটনৈতিক শিবির মনে করেছিল, ওই ঘোষণার মাধ্যমে আসলে আমেরিকাকে ইতিবাচক বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরে সেই বার্তাই প্রায় অনুঘটকের কাজ করল। দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ভারতে আরও বেশি পরমাণু চুল্লি তৈরি করবে আমেরিকা(Modi-Donald Trump Meet)। এই বিষয়ে সহমত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং মোদী, দু’জনেই।
আরও পড়ুন:Suicide Attack in Afghanistan: আফগানিস্তানের আবাসন মন্ত্রকের দফতরে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ১
পারমাণবিক চুল্লি প্রস্তুতকারী সংস্থা
১৯৬২ সালের পারমাণবিক শক্তি আইনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে কোনও বেসরকারি সংস্থা বিনিয়োগ করতে পারবে না। মনে করা হচ্ছে, আইন সংশোধনের ফলে এই ধারারও বদল ঘটবে। আমেরিকার পারমাণবিক চুল্লি প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘জেনারেল ইলেক্ট্রিক’, ‘ওয়েস্টিংহাউস’ বহু বছর ধরেই এ দেশে পারমাণবিক চুল্লি তৈরির বিষয়ে আগ্রহী। ‘ওয়েস্টিংহাউস’ সংস্থা এ দেশে এপি১০০০ পরমাণু চুল্লি বিক্রি নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনাও সেরেছে সাউথ ব্লকের সঙ্গে। অন্ধ্রপ্রদেশের কোভ্ভাড়ায় ১,০০০ মেগাওয়াটের পরমাণু চুল্লি বসানোর বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।