ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: BIMSTEC সম্মেলনের মঞ্চে প্রথমবার মুখোমুখি হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস (Modi Yunus Meeting)। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং সম্প্রতি ইউনূসের মন্তব্য ঘিরে পরিবেশ কলুষিত হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোদী।
বিদেশ সচিব যা জানিয়েছেন (Modi Yunus Meeting)
শুক্রবার ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক (Modi Yunus Meeting) বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (Dr. S. Jaishankar) ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল (Ajit Doval)। বৈঠক শেষে ভারতীয় বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী জানান, মোদী বাংলাদেশে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
ইউনূসকে মোদীর বার্তা (Modi Yunus Meeting)
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশকে ‘বাক্সংযম’ মেনে চলার পরামর্শ দেন (Modi Yunus Meeting)। তিনি বলেন, “পরিবেশ কলুষিত করতে পারে এমন কথাবার্তা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।” এই মন্তব্যকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে, কারণ কিছুদিন আগেই ইউনূস (Muhammad Yunus) বলেছিলেন, “বঙ্গোপসাগরের একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।” তিনি আরও বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি সমুদ্র থেকে বিচ্ছিন্ন, যা রাজনৈতিক ও ভৌগোলিকভাবে সংবেদনশীল ইঙ্গিত বহন করে। এই বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারতের শাসকদল বিজেপির নেতারা।

সীমান্ত নিরাপত্তা (Modi Yunus Meeting)
সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও কড়া বার্তা দেন মোদী (Modi Yunus Meeting)। তিনি বলেন, সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন, বিশেষ করে রাতে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। মোদীর মতে, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম অগ্রাধিকার। তিনি দুই দেশের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার কথা তুলে ধরে বলেন, “ভারত সেই সম্পর্ককেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, যা দুই দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করে।”

আরও পড়ুন: Iran America Conflict : ইরান-আমেরিকা উত্তেজনার মাঝেই সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব ট্রাম্পের
ইউনূস যা জানিয়েছেন (Modi Yunus Meeting)
বাংলাদেশের তরফ থেকেও এই বৈঠক নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয় (Modi Yunus Meeting)। ইউনূস জানিয়েছেন, ভারত বাংলাদেশের ‘মূল্যবান বন্ধু’, এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ভূমিকার কথা বাংলাদেশ কখনও ভুলবে না। সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগকে তিনি ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘ভুয়ো খবর’ বলে দাবি করেন এবং জানান, বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ
গত আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন। তার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে। সেই সময় থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠতে থাকে।এই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে ভারতের কৌশলগত সতর্কতা, অন্যদিকে বাংলাদেশের নতুন সরকারের অবস্থান – এই দুইয়ের মধ্যে ভবিষ্যতের সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা দেখার অপেক্ষায় দক্ষিণ এশিয়া।