ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রোববার ডানকুনিতে সিপিআই(এম)(Mohammad Salim) এর ২৭ তম রাজ্য সম্মেলনের অবসরে সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রবিবার ডানকুনিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম বলেন, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে রাজ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে বিদেশি টাকা। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে রাজ্যের নির্বাচনে ভোট লুটের নামে টাকা ব্যবহার হয়েছে।
ভোট চুরি ও সন্ত্রাসীদের জন্য বিদেশি টাকা (Mohammad Salim)
মহম্মদ সেলিম(Mohammad Salim) বলেন, ‘২০১১ সালের পর থেকে দেখা গিয়েছে নির্বাচনে ভোট চুরি ও সন্ত্রাসীদের জন্য বিদেশি টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। বিদেশের টাকা চিট ফান্ডের নাম করে এরাজ্যের তৃণমূলের ঘরে ঢুকেছে। মানুষের ভোট প্রভাবিত করার জন্য বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়েই বিদেশি টাকা ব্যবহার করেছে। তাই তারা পরস্পরকে দোষারোপ করে না।’ সাহস থাকলে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অর্থের বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। তিনি আরও বলেন, ‘‘সিপিআই(এম) ইলেক্টোরাল বন্ডের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, এবারও বিদেশি ফান্ডের বিষয়ে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি (Mohammad Salim)
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের নির্বাচনে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য আমাদের থেকে ২১ মিলিয়ন ডলার যাবে কেন? তাঁর এই মন্তব্য থেকে তোলপাড় হয়। সিপিএম নেতা(Mohammad Salim) বলেন, ‘ট্রাম্প বলছে ২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে মোদীকে ভোটদানের হার বাড়ানোর জন্য। এ বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি। নরেন্দ্র মোদী বিশ্বগুরু হওয়ার চেষ্টা করছে, আবার বাইরে থেকে টাকা নিয়েছে গণতন্ত্র দেখানোর জন্য।’ এসব টাকা কোথা থেকে আসে তা জানা দরকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য।
আরও পড়ুন: CPM North 24 Parganas: উত্তর ২৪ পরগনায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক হলেন পলাশ দাস
স্বাধীন, বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা
হুগলির ডানকুনিতে দলের ২৭তম রাজ্য সম্মেলনের ফাঁকে রবিবার সেলিমের বক্তব্য, “মোদীর বন্ধু, ভারত-বিদ্বেষী ট্রাম্প নিজেই ভারতের নির্বাচনের জন্য টাকা পাঠানোর কথা বলেছেন। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে রাজ্যেও কেন্দ্রীয় বাহিনী, পর্যবেক্ষকদের নিজেদের হাতে রাখতে অঢেল টাকা ব্যবহার করা হয়েছিল। বিদেশি টাকা অন্য দেশের পথ দিয়ে তৃণমূল, বিজেপি, দু’পক্ষের কাছেই এসেছে।” এর পরেই সেলিমের দাবি, “এই নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ বিজেপিকে। রাজ্যও শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। স্বাধীন, বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থাও করা হোক। আমরা তো নির্বাচনী বন্ড, কর্পোরেট ফান্ডিং-এরও বিরোধিতা করেছি।”
একে অপরকে দোষারোপ করে না
এইদিন সেলিম(Mohammad Salim) বলেন, চিটফান্ডের নামে বিদেশের টাকা এ রাজ্যে তৃণমূলের ঘরে ঢুকেছে। গুন্ডা কিনতে, ভোট লুটের কাজে সেই টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূল দুই দলই মানুষের ভোট প্রভাবিত করতে বিদেশি টাকা ব্যবহার করেছে। তাই এরা একে অপরকে দোষারোপ করে না। তিনি আরও বলেন, দেশের নিরাপত্তার জন্য বিদেশি টাকা কোথা থেকে আসে তা জানা দরকার। সেই টাকা যদি প্রশাসনকে কেনার জন্য, ভোটের জেতার জন্য ব্যবহার হয় তাহলে তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপের সমান।
আরও পড়ুন: CPIM: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন, ময়দানে জায়গা করতে ছাত্র-যুবতেই ভরসা বামেদের!
গণনাকেন্দ্র ‘কেনা’র মতো নানা কাজ
রাজ্যে ২০১১-র পরে থেকেই বিদেশি টাকার ব্যবহার চলছে বলে অভিযোগ তুলে সেলিম নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর আন্দোলন পর্বের কথা উল্লেখ করে সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “আমরা তখন থেকেই বিদেশি হাতের কথা বলেছি। হাসাহাসি হয়েছিল। এখন বেরোচ্ছে যে, বিজেপি ও তৃণমূলের মতো দলগুলি বিভিন্ন সংস্থার টাকা নানা ভাবে এখানে কাজে লাগিয়েছে।” সিপিএমের আরও অভিযোগ, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে রাজ্যে নানা সংস্থার টাকা ব্যবহার করেই ‘বিভাজন’, গণনাকেন্দ্র ‘কেনা’র মতো নানা কাজ করা হয়েছে।