ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মানুষ কত কিছুই করে (Money Rain) জীবদ্দশায়। কেউ কীর্তি রেখে যায় সম্পদে, কেউ সেবায়। কিন্তু এমনও কেউ থাকেন যাঁরা মৃত্যুর পরেও মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। তেমনই একজন হলেন আমেরিকার ডেট্রয়েট শহরের ইস্টসাইড এলাকার বাসিন্দা ড্যারেল ‘প্লান্ট’ টমাস। জীবিত থাকাকালীন ছিলেন এক জন সমাজসেবক ও সফল ব্যবসায়ী। স্থানীয় একটি কার ওয়াশ বা গাড়ি পরিষ্কার করার ব্যবসা ছিল তাঁর। অগণিত মানুষকে সাহায্য করেছেন, দানধ্যান করেছেন, কিন্তু জীবনের শেষ অধ্যায় ছিল কঠিন অ্যালজাইমার্সে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে স্মৃতি হারাচ্ছিলেন তিনি।
মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছা (Money Rain)
তবে স্মৃতিশক্তি ক্ষয় হলেও, হৃদয়ের শক্তি (Money Rain) হারাননি। মৃত্যুর আগে নিজের শেষ ইচ্ছা লিখে গিয়েছিলেন-সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দিতে চান। সেই সমাজ, যেখানে তিনি মানুষ হয়েছেন, বড় হয়েছেন, ব্যবসা গড়ে তুলেছেন সেই মানুষগুলোর মুখে একটুখানি হাসি ফুটিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।
টাকার বৃষ্টি (Money Rain)
গত ২৭ জুন, ড্যারেল টমাসের শেষকৃত্যের দিন সেই ইচ্ছাকে (Money Rain) বাস্তব করে তুললেন তাঁর দুই ছেলে, ড্যারেল জুনিয়র ও জন্টে। হেলিকপ্টারে করে আকাশে ওড়ানো হলো গোলাপের পাপড়ি ও আমেরিকান ডলার। ডেট্রয়েটের গ্র্যাটিয়ট অ্যাভিনিউয়ের উপর দিয়ে উড়ে এসে হেলিকপ্টার থেকে প্রায় ৫০০০ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা ছড়িয়ে দেওয়া হয় এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে।
ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল
এই অভিনব শেষকৃত্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। অনেকেই এই নজিরবিহীন ঘটনায় বিস্মিত ও আবেগপ্রবণ। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টাকার বৃষ্টি শুরু হতেই রাস্তায় থেমে যায় যান চলাচল। চারপাশে ছুটে যান লোকজন, ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবার মুখে একটাই কথা, “এমন ভালো মানুষ আর দেখা যাবে না।”
নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ
টমাসের ভাইঝি বলেন, “আমার কাকা জীবনে সবসময় মানুষের কথা ভেবেছেন। মৃত্যুর আগেও সেই মানুষগুলোকেই সম্মান জানাতে চেয়েছেন। এটাই ছিল তাঁর ভালোবাসা দেখানোর শেষ উপায়।” তবে এই ঘটনা নিয়ে আইনি প্রশ্নও উঠেছে। আমেরিকার ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) জানিয়েছে, আকাশ থেকে নগদ অর্থ ওড়ানো নিয়মের মধ্যে পড়ে না, তাই এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Swiggy: ১০০ টাকাও লাগবে না, বাড়িতে বসেই খাবার পাবেন চোখের নিমেষে!
তবুও, ড্যারেল টমাসের এই ব্যতিক্রমী বিদায় সমাজে এক অন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। টাকার ঝলকে নয়, মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়াই যে জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য, সেই পাঠ দিয়ে গেলেন ডেট্রয়েটের এই সাধারণ অথচ অসাধারণ মানুষ।