ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: টানা ৪৬ বছরের দাম্পত্যে ইতি। স্বামীহারা হলেন সুচিত্রা সেনের মেয়ে মুনমুন সেন (Munmun Sen)। প্রয়াত মুনমুন সেনের স্বামী ভরত দেব বর্মা (Bharat Dev Verma Death)। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। আজ অর্থাৎ ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তার আগেই সব শেষ। সকাল ৯ টা নাগাদ তিনি নিজের বাড়িতেই প্রয়াত হয়েছেন।
রাজ পরিবারের সন্তান (Bharat Dev Verma Death)
ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সন্তান ভরত দেব বর্মা (Bharat Dev Verma Death)। ৪৬ বছর আগে এই পরিবারের বৌমা হয়েছিলেন সুচিত্রা সেনের একমাত্র মেয়ে মুনমুন সেন। মুনমুন আর ভরতের প্রথম দেখা হয়েছিল, একটি বিয়ে বাড়িতে। একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, তাঁর এক বান্ধবী নাসরিন আলিকে ডেট করতে এসেছিলেন ভরত। ঘটনাক্রমে ওই দিন পার্টি শেষে মুনমুন সেনকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন তিনি। আর সেই থেকেই সম্পর্কে সূত্রপাত। তারপর দেখতে দেখতে সম্পর্ক গড়ালো বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত।
কবে বিয়ে? (Bharat Dev Verma Death)
১৯৭৮ সালে তাঁরা গাঁটছড়া বাঁধেন (Bharat Dev Verma Death)। বেশ জাঁকজমক করেই তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের বিয়েতে হাজির ছিলেন টলিউড থেকে বলিউডের প্রচুর তারকা। সুচিত্রা সেন নিজে গিয়ে বিয়ের কার্ড দিয়ে এসেছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমারের বাড়িতে। মুনমুন আর ভরত এক এক করে পার করে দিলেন, ৪৬ বছরের দাম্পত্য। অভিনেত্রী মুনমুন একবার এক সাক্ষাৎকারে তাঁর স্বামীর প্রশংসা করে বলেছিলেন, ভরত চিরকাল তাঁকে সাপোর্ট করেছেন।
আরও পড়ুন: Jisshu-Nilanjana Relationship: বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মাঝেই ডিভোর্সের উল্লেখ, ভাবাচ্ছে যিশু-পত্নীর পোস্ট
আদরের ডাক
স্বামীকে আদর করে মুনমুন ডাকতেন ‘হাবি’ বলে। হাবি শুধু তার স্বামী ছিলেন না, বরং তাঁর কাছে ছিল একজন প্রকৃত অর্থে বন্ধু। বিয়ের পর মুনমুন সিনেমা করতে পারবেন না, এমন শর্ত দিয়েছিলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। কিন্তু মুনমুন সেই কথা শোনেননি। যার কারণে মা এবং মেয়ের মধ্যে দেড় বছর কথাও বন্ধ হয়ে যায়। তখনও কিন্তু সব সময় বন্ধুর মতো আগলে রেখেছিলেন ভরত। স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ।
প্রগতিশীল চরিত্র
ত্রিপুরার রাজবংশের পুত্র ভরত, আগাগোড়াই ভীষণই প্রগতিশীল ব্যক্তি। তিনি শুধু কেবল স্বামী হিসেবেই নন, বরং আদর্শ পিতাও। নিজের বুকে আগলে মানুষ করেছেন দুই মেয়ে রাইমা এবং রিয়াকে। বহুবার দুই বোনকে একাধিক সাক্ষাৎকারে বলতে দেখা গিয়েছে, কিভাবে সারা জীবন বাবা তাঁদের আগলে রেখেছিলেন। আর সেই বাবা এখন নেই। বলতে গেলে সেন পরিবারের উপর থেকে একটা বড় ছাতা সরে গেল।
আরও পড়ুন: Riya Ganguly Divorce: ঘর ভাঙছে ‘মিঠি ঝোরা’র এই অভিনেত্রীর! পোস্ট করে নিজেই জানালেন
অসুস্থ ছিলেন তিনি
শোনা যাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। মঙ্গলবার সকালেই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। তড়িঘড়ি তাকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সে সময় টুকু পাওয়া গেল না। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মুখ্যমন্ত্রীর শোক প্রকাশ
ভরত দেব বর্মার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “আমাদের প্রাক্তন সাংসদ এবং ফিল্মস্টার মুন মুন সেনের স্বামী ভারত দেব ভার্মার মৃত্যুতে শোকাহত এবং তিনি আমার একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। তিনি সত্যিই আমার প্রতি খুব স্নেহশীল ছিলেন এবং আমি সর্বদা তার স্মৃতি মনে রাখব। তিনি সত্যিই আমাকে তার পরিবারের অংশ হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন এবং তার মৃত্যু আমার জন্য একটি বড় ক্ষতি। আজ সকালে খবর পেয়ে আমি তাদের বালিগঞ্জের বাড়িতে গিয়েছিলাম, সেখানে তাদের মেয়ে রিয়া উপস্থিত ছিল। দিল্লি থেকে মুন মুন আর রাইমা আসছে। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”