ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পুরসভার জাফরাবাদ (Murshidabad Unrest) এলাকায় বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় তদন্তে বড় সাফল্য পেল পুলিশ। শনিবার রাতে চোপড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জিয়াউল শেখকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত জিয়াউলের বাড়ি শমসেরগঞ্জ থানার সুলিতলা এলাকায়। খুনের ঘটনার পর থেকেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। অবশেষে পুলিশি তৎপরতায় ধরা পড়ল মূল চক্রী। রবিবার তাঁকে জঙ্গিপুর আদালতে হাজির করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ।
তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Murshidabad Unrest)
এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার (Murshidabad Unrest) করেছে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকেই উঠে এসেছে জিয়াউলের নাম। এরপরই চোপড়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে পাকড়াও করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে ইনজামাম হক নামে এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নিহত পিতা-পুত্রের সঙ্গে তার আগে থেকেই বৈদ্যুতিক খুঁটি সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে বিবাদ চলছিল। পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এটি নিছক ব্যক্তিগত আক্রোশ নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও বৃহত্তর কারণ।
নিহতদের পরিবার দাবি করেছে, এটি পরিকল্পিত খুন (Murshidabad Unrest)
খুনের পটভূমি তৈরি হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়া অশান্তির আবহে। সেই উত্তেজনার মধ্যে দাস পরিবারের দুই সদস্য—বাবা ও ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এলাকাজুড়ে ছড়ায় আতঙ্ক। নিহতদের পরিবার দাবি করেছে, এটি পরিকল্পিত খুন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ নিরাপত্তা না থাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
আর্থিক সাহায্য নিতে রাজি নন
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে সেই আর্থিক সাহায্য নিতে রাজি নন দাস পরিবার। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, অর্থ নয়, চাই ন্যায়বিচার।
নিহতদের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান
১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় নিহতদের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তবে ওই অনুষ্ঠানে দেখা যায় আরও এক করুণ দৃশ্য—পরিবারের অভিযোগ, আতঙ্কে কেউই পুরোহিত বা ক্ষৌরকার হয়ে আসেননি। শেষ পর্যন্ত পরিবার নিজেরাই শ্রাদ্ধের সমস্ত আচার পালন করে। তাঁদের কথায়, “আমরা ভীত নই, কিন্তু সবাই ভয় পাচ্ছেন। তাই কেউ এল না।”
আরও পড়ুন: WB Weather: বৈশাখের শুরুতেই গরমের হুঁশিয়ারি, দক্ষিণবঙ্গে চার-পাঁচ ডিগ্রি বাড়তে পারে তাপমাত্রা!
সব মিলিয়ে এই জোড়া খুন শুধু একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়, বরং তার পেছনে জড়িয়ে আছে রাজনৈতিক উত্তেজনা, সামাজিক অবিশ্বাস এবং নিরাপত্তার অভাব। পুলিশ এখন জিয়াউলের ভূমিকা ও এই ঘটনার পেছনে অন্য কারও মদত ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা, সেই দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। তদন্ত এখন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পৌঁছেছে।