ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শুক্রবার রাতে মালদহ সফর সেরে (Murshidabad Unrest) মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় পৌঁছেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার তাঁর সফরের লক্ষ্য শমসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান সহ একাধিক অশান্ত এলাকা। এই সফরকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো হলেও তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
প্রশাসনের ব্যর্থতা (Murshidabad Unrest)
বিশেষ করে ধুলিয়ান পুরসভার জাফরাবাদে পিতা-পুত্র খুনের ঘটনায় (Murshidabad Unrest) রাজ্যপালের সম্ভাব্য সফরের খবরে প্রশাসনের বাড়তি সরবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, এতদিন ধরে যেসব পরিবার ঘরছাড়া ছিল, তারা ন্যূনতম সহায়তা পায়নি। অথচ রাজ্যপাল সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে আলো, পাখা, জরুরি আসবাব সহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে প্রশাসন। জেলা বিজেপি নেতা গৌরীশঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে অনেক আগেই এই উদ্যোগ নেওয়া যেত। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যপালের সামনে প্রশাসনের ব্যর্থতা যেন ধরা না পড়ে, সেই কারণেই এত তৎপরতা।
অভিযোগ মানতে নারাজ (Murshidabad Unrest)
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্ব ও প্রশাসন এই অভিযোগ (Murshidabad Unrest) মানতে নারাজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। শমসেরগঞ্জে যেসব বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, সেগুলির পুনর্নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। আশ্রয়শিবির থেকে ঘরে ফেরা পরিবারগুলিকে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
আপৎকালীন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, ধুলিয়ান ও শমসেরগঞ্জ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে আপৎকালীন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রশাসনের লক্ষ্য, দ্রুত পুনর্বাসনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনা।
একাধিক মহিলা নিরাপত্তাহীনতা
রাজ্যপালের পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদে পৌঁছেছে জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধিদলও। তাঁদের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের একাধিক মহিলা নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান। এমনকি, অনেকে তাঁদের পা জড়িয়ে ধরে আকুতি জানান—গ্রামে যেন স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করা হয়।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক চাপানউতোর তীব্র হচ্ছে। জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘অশান্তির সময়ে মানুষের পাশে ছিল তৃণমূল। আমরাও আক্রান্ত হয়েছি, তবু দায়িত্ব পালন করেছি। এখন বাইরে থেকে কেউ এলেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে—এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’’
আরও পড়ুন: Durgapur: গুলির শব্দে কেঁপে উঠল বেসরকারি হাসপাতাল, রাতের অন্ধকারে ভয়াবহ ঘটনা দুর্গাপুরে
প্রসঙ্গত, জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত আড়াইশোর বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক দোকানও। প্রশাসনের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে রাজ্যপালের সফরের প্রাক্কালে প্রশাসনের এই ‘হঠাৎ সক্রিয়তা’ ঘিরে যে রাজনৈতিক পারদ চড়ছে, তা স্পষ্ট।