ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: টেসলার ক্ষতির কথা উল্লেখ করে এলন মাস্ক ট্রাম্পকে চীনা শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানান (Musk on China Tariff)। ব্যক্তিগত আলোচনা এবং জনসাধারণের সমালোচনা সত্ত্বেও, ট্রাম্প বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা তুলে ধরে শুল্ক বজায় রেখেছেন। মাস্ক শূন্য শুল্কের পক্ষে, ন্যায্য প্রতিযোগিতা এবং বিশ্ব বাণিজ্য সহযোগিতার উপর জোর দেন।
শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে বোঝান মাস্ক (Musk on China Tariff)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেসলার সিইও এলন মাস্ক চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক নিয়ে একমত নন (Musk on China Tariff)। ট্রাম্প সম্প্রতি চীনা আমদানির ওপর উচ্চ হারে শুল্ক ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জানা গিয়েছে যে এলন মাস্ক ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছেন, যাতে তিনি এই নতুন শুল্ক তুলে নেন। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মাস্ক এই নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত বৈঠকও করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার আবেদন সফল হয়নি।
মাস্কের খোলাখুলি বিরোধিতা (Musk on China Tariff)
মাস্ক আগে থেকেই জানিয়ে আসছেন যে, তিনি শুল্কের বিরুদ্ধে (Musk on China Tariff)। তাঁর মতে, এর ফলে টেসলার মতো কোম্পানির ক্ষতি হয়, যারা উৎপাদন ও বিক্রির জন্য আমেরিকা এবং চীন—দুই দেশের ওপরই নির্ভরশীল।
তিনি ‘এক্স’ (আগের টুইটার)-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে অর্থনীতিবিদ মিল্টন ফ্রিডম্যান বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সহযোগিতার উপকারিতা ব্যাখ্যা করছেন। অনেকে মনে করছেন, এটি ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির প্রতি মাস্কের বিরোধিতা জানানো এক প্রকারের বার্তা।
শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই মাস্ক ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বলেন, তিনি চান আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে “জিরো ট্যারিফ” পরিস্থিতি তৈরি হোক। তিনি ট্রাম্পকে এমন লক্ষ্য নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন।
টেসলার উপর প্রভাব
টেসলার বিশ্ববাজারে চাহিদা কমছে। এর ওপর মাস্কের রাজনৈতিক অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর টেসলার শেয়ার ২.৫ শতাংশেরও বেশি পড়ে যায়। ২০২৪ সালের শুরু থেকে কোম্পানির শেয়ারমূল্য ৩৮ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে।
আরও পড়ুন: Yunus Letter : ট্রাম্পকে চিঠি ইউনূসের! ‘পাল্টা শুল্ক’ তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ বাংলাদেশের
মাস্ক হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পিটার নাভারোরও সমালোচনা করেন, যিনি ট্রাম্পের কড়া শুল্কনীতির সমর্থক। মাস্ক তাঁকে কটাক্ষ করে বলেন, “হার্ভার্ড থেকে ইকোনমিক্সে পিএইচডি থাকাটা ভালো কিছু না, বরং খারাপ।” নাভারো মাস্কের এই মন্তব্যের জবাব দেননি, তবে হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র বলেন, ট্রাম্পের দলে ভিন্নমতের মানুষ থাকাই স্বাভাবিক।
সম্পর্কের টানাপোড়েন
এলন মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে এই মতবিরোধ এখন বড় একটি প্রকাশ্য দূরত্ব তৈরি করেছে। অথচ মাস্ক ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (DOGE)’-র খরচ কমানোর কাজেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
জানা যাচ্ছে, এলন মাস্ক শীঘ্রই ওই পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। অনেকেই মনে করছেন, এই টানাপোড়েনের সময়টি হয়তো সেটার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধে জড়িয়েছেন—যেমন দক্ষ কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা নীতি, অথবা সরকারি ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো বিষয়।