ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মাস্কের নতুন পদক্ষেপে গুঞ্জন সব জায়গায় (Musk Sleeps at DOGE Office)। টেসলা ও এক্স (পূর্বে টুইটার)-এর সিইও এলন মাস্ক তার কাজের প্রতি অঙ্গীকারকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE)-এর সদর দফতরে থাকছেন। প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম WIRED জানিয়েছে, মাস্ক মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের উপর আরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চান।
হোয়াইট হাউসের কাছেই অফিসে বাস (Musk Sleeps at DOGE Office)
মাস্ক এখন DOGE-এর অফিসেই থাকছেন, যা আইজেনহাওয়ার এক্সিকিউটিভ অফিস বিল্ডিংয়ে অবস্থিত, হোয়াইট হাউসের একেবারে কাছেই (Musk Sleeps at DOGE Office)। তিনি দাবি করেছেন যে তাকে হোয়াইট হাউসের বিখ্যাত লিংকন বেডরুমে থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে DOGE সদর দফতরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
মাস্ক নাকি চেয়েছিলেন ওয়েস্ট উইং-এ নিজের জন্য একটি অফিস নিতে, কিন্তু তখনকার চিফ অফ স্টাফ সুসি ওয়াইলস তাকে সে সুযোগ দেননি। Daily Mail-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাই তিনি হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরির পরিবর্তে DOGE দফতরকেই তার নতুন কাজের জায়গা বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
কঠোর পরিশ্রমের সংস্কৃতি (Musk Sleeps at DOGE Office)
মাস্কের কঠোর পরিশ্রমের সংস্কৃতি নতুন কিছু নয় (Musk Sleeps at DOGE Office)। টেসলার প্রথম দিকের সময়ে, তিনি দীর্ঘ ব্যস্ত সময়ে ফ্যাক্টরির মেঝেতেই ঘুমাতেন। তিনি বলতেন, এতে কর্মীরা বুঝতে পারতেন যে তাদের নেতা তাদের সঙ্গে পরিশ্রম করছেন।
২০২২ সালে বিনিয়োগকারী রন ব্যারন-এর এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, “এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ যদি টিমের সদস্যরা মনে করেন তাদের নেতা কোথাও আরামে মাই টাই পান করছেন, তাহলে তারা অনুপ্রাণিত হবে না। আমি যখন কারখানায় থাকতাম, তখন সবাই বুঝত যে আমি তাদের সঙ্গেই আছি, আর সেটাই পার্থক্য গড়ে দিত।”
এই কঠোর পরিশ্রমের সংস্কৃতি এখন DOGE-এও বাস্তবায়িত হচ্ছে, যেখানে মাস্ক সরকারী ব্যয় কমানো এবং প্রশাসনিক কাজের গতি বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন (Musk Sleeps at DOGE Office)।
প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ডলার বাঁচানোর পরিকল্পনা
DOGE-এর অধীনে, মাস্ক ইতিমধ্যেই সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন (Musk Sleeps at DOGE Office)। এখন পর্যন্ত তারা প্রতিদিন প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় নতুন নিয়োগ বন্ধ করা এবং ডাইভারসিটি, ইকুয়িটি এবং ইনক্লুশন (DEI) সংক্রান্ত খরচ কমানো
এছাড়া, DOGE ইতিমধ্যেই DEI সম্পর্কিত অনেক সরকারি ওয়েবসাইট এবং কর্মসূচি বাতিল করেছে। এর মধ্যে ইউএস অফিস অফ পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট-এর চিফ ডাইভারসিটি অফিসার এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল-এর ওয়েবসাইটও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পেনি উৎপাদন কমানোর পরিকল্পনা
সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে মাস্কের নেতৃত্বাধীন DOGE আরও কিছু বড় পরিবর্তন আনতে চায় (Musk Sleeps at DOGE Office)। এর মধ্যে অন্যতম হলো পেনি উৎপাদন কমানো।
বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি পেনি মুদ্রণের খরচ তার আসল মূল্যের চেয়েও বেশি। ২০২৩ সালে এটি প্রায় ১৭৯ মিলিয়ন ডোলার লোকসানের কারণ হয়েছে।
তাই, মাস্ক ও তার টিম এখন এই ব্যাপারে বিকল্প উপায় খুঁজছেন। মনে করা হচ্ছে পেনি উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করা হতে পারে। অথবা কম খরচে মুদ্রণের নতুন উপায় খুঁজে বের করা হতে পারে
এই সিদ্ধান্তটি যদি কার্যকর হয়, তাহলে এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের করের টাকায় বড় সাশ্রয় আনতে পারে।
কর্মক্ষেত্রে ‘বিষাক্ত’ পরিবেশের অভিযোগ
তবে মাস্কের নেতৃত্ব পদ্ধতি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। ২০১৮ সালে তিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি টেসলার ফ্যাক্টরির মেঝেতেই ঘুমাতেন, কারণ তার বাড়ি গিয়ে স্নান করার সময়ও ছিল না।
এছাড়াও, তিনি টেসলার কর্মীদেরও একইভাবে কাজ করতে বলেছিলেন। অনেক কর্মীকে ম্যনুফ্যাকচারিং লাইনেই ঘুমাতে হয়েছে যেন নতুন ইলেকট্রিক ভেহিকল (EV) মডেল সময়মতো বাজারে আসতে পারে।
এখন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে মাস্কের অধীনে DOGE-এর কর্মচারীরাও একই ধরনের চাপের মুখে পড়তে পারেন (Musk Sleeps at DOGE Office)।
আরও পড়ুন: Iran buys Su-35: রাশিয়ার কাছ থেকে সুখোই-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনল ইরান, বাড়ছে তেহরানের সামরিক শক্তি
মাস্কের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাস্ক শুধু প্রযুক্তি বা ব্যবসায় নয়, বরং সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমেও তার প্রভাব বাড়াতে চাইছেন।
DOGE-এর মতো একটি সংস্থার দায়িত্ব নেওয়া এবং সেখানে বসবাস করাটা মাস্কের সরকারের উপর আরও নিয়ন্ত্রণ কায়েমের একটি পদক্ষেপ হতে পারে। অনেকে বলছেন, তিনি ভবিষ্যতে আরও বড় সরকারি পদে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে বলছেন, হয়তো তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথাও ভাবছেন (Musk Sleeps at DOGE Office)!
তবে আপাতত, এলন মাস্ক সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।