ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ৫৪ বছর পর আবার। দেশজুড়ে আলো নিভিয়ে মহড়া— এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চলেছে সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্যগুলিকে জানানো হয়েছে, জাতীয় স্তরে হতে চলেছে এক বিশেষ আপৎকালীন মহড়া, (Mock Drill) যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’। শত্রু পক্ষের বিমান হামলার মতো চরম পরিস্থিতি তৈরি হলে কীভাবে দেশ প্রস্তুত থাকবে— তার একটি মহড়াই এবার হতে চলেছে।
কী এই ব্ল্যাকআউট? (Mock Drill)
‘ব্ল্যাকআউট’ শব্দটির অর্থ— শহর বা নির্দিষ্ট এলাকায় সম্পূর্ণ আলো নিভিয়ে দেওয়া। উদ্দেশ্য, যদি কোনও শত্রু দেশ বিমান হামলা চালায়, তবে তারা যেন টার্গেট নির্ধারণে বিভ্রান্ত হয়। সরকারি নথি বলছে, সম্পূর্ণ অন্ধকার এলাকায় শত্রু বিমানের পাইলটরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপের মধ্যে পড়ে যান এবং লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। অতীতে যুদ্ধকালীন সময়ে বারবার এই কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে।
কেন্দ্রের নির্দেশিকা কী বলছে? (Mock Drill)
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই মহড়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষিত করা হবে, যেন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তারা কীভাবে সাড়া দেবেন, সেটা জানেন। নাগরিকদের বলা হয়েছে:
- বাড়িতে রাখতে হবে ফার্স্ট এইড কিট
- প্রস্তুত রাখতে হবে টর্চ, মোমবাতি
- প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার মজুত রাখতে
- হাতে রাখতে হবে কিছু নগদ অর্থ

কারণ, জরুরি পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে (Mock Drill)। ডিজিটাল লেনদেন ব্যাহত হলে দৈনন্দিন জীবন থমকে যেতে পারে।
কারা থাকবেন এই মহড়ায়? (Mock Drill)
এই জাতীয় মহড়ায় অংশগ্রহণ করবেন জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক, হোমগার্ড, সিভিল ডিফেন্স কর্মী, এনসিসি ক্যাডেট, নেহরু যুব কেন্দ্রের সদস্য এবং স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা।
মহড়ার মূল বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে:
- বিমান হামলার সময় সাইরেন বাজলে কী প্রতিক্রিয়া দেবেন নাগরিকরা?
- হঠাৎ ব্ল্যাকআউট হলে ঘরে কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত?
- ছাত্রদের ভূমিকা কী হতে পারে?
- দ্রুত উদ্ধারকার্য কেমন হবে?
- কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে আলো?
নির্দেশিকা অনুযায়ী, ব্ল্যাকআউট চলাকালীন—
- রাস্তার আলো নিভিয়ে দেওয়া হবে বা নিয়ন্ত্রিত করা হবে
- কারখানা ও বাণিজ্যিক অঞ্চলের আলো বন্ধ রাখতে হবে
- গাড়ির হেডলাইট সীমিত আলোতে ব্যবহার করতে হবে
- ঘরের আলো যেন বাইরে দৃশ্যমান না হয়
- বিজ্ঞাপন বোর্ডে আলোকসজ্জা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
তবে একেবারে অন্ধকার নয়— “নিয়ন্ত্রিত আলো” ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে জনজীবন স্তব্ধ না হয় (Mock Drill)। যেমন, রাস্তার আলো এমনভাবে বসাতে হবে যাতে কেবল নিচে আলো পড়ে এবং সেটি ২৫ ওয়াটের বেশি উজ্জ্বল না হয়।

আরও পড়ুন: Kali Weapon: ভারতের রহস্যময় অস্ত্র “KALI”! ধ্বংসাত্মক এই অস্ত্রে ধরাশায়ী যেকোনো শত্রু?
জনসচেতনতা বাড়ানোই লক্ষ্য (Mock Drill)
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি কোনও আতঙ্ক তৈরি করার কর্মসূচি নয়, বরং জনসচেতনতা বৃদ্ধির অংশ। ব্ল্যাকআউট বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সম্ভাবনা মাথায় রেখেই নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখা এবং আগাম প্রস্তুতি নেওয়াই মূল লক্ষ্য।
আজকের দিনে যখন যুদ্ধবাজ রাজনীতির উত্তাপ চারিদিকে, তখন এমন মহড়া নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণ— তবে একইসঙ্গে একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগও। জনমানসে যেন এই বার্তাই যায়— বিপদের দিনে সচেতন নাগরিকরাই দেশের আসল রক্ষাকবচ।