ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কলম্বোর দক্ষিণে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢুকে বিপর্যয় ঘটাল বাঁদর (Nationwide Power Cut)। শ্রীলঙ্কায় সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য একটি বাঁদরকে দায়ী করা হচ্ছে। কলম্বোর দক্ষিণে অবস্থিত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রবেশ করে সেই বাঁদর, যার ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।
বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে (Nationwide Power Cut)
শ্রীলঙ্কার ২.২ কোটি জনগণের দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় (Nationwide Power Cut)। সরকার ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের কাজ করছে। হাসপাতাল ও পানীয় জল পরিশোধন কেন্দ্রগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার জ্বালানি মন্ত্রী কুমারা জয়াকোডি সাংবাদিকদের জানান, “একটি বাঁদর আমাদের গ্রিড ট্রান্সফর্মারের সংস্পর্শে আসে। এর ফলে পুরো ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।”
রবিবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট (Nationwide Power Cut)
স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায় (Nationwide Power Cut)। এর ফলে অনেকেই জেনারেটরের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হন। কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যুৎ পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্রুপ ও সমালোচনা
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করছেন। কেউ কেউ আবার মজার মন্তব্য করছেন।
এক্স (প্রাক্তন টুইটার) ব্যবহারকারী মারিও নওফাল লিখেছেন, “কলম্বোর একটি সাবস্টেশনে গণ্ডগোল ঘটিয়ে একটি দুষ্ট বাঁদর পুরো শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অকেজো করে দিয়েছে!” তিনি আরও ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, “একটা বাঁদর মানেই পুরো বিশৃঙ্খলা! এবার পরিকাঠামো নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে?”
আরও পড়ুন: Sheikh Mujibur Rahman Mural: রাজশাহীতে সাদা রঙে ঢেকে দেওয়া হল বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল
অন্য এক এক্স ব্যবহারকারী শ্রীনি আর হিন্দু পুরাণ রামায়ণের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি হনুমানের একটি ছবি পোস্ট করেন এবং লেখেন, “শ্রীলঙ্কা অতীতেও বাঁদরের খেলা দেখেছে!” রামায়ণ অনুসারে, লঙ্কার রাজা রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় হনুমান গোটা লঙ্কায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
স্থানীয় সংবাদপত্র ডেইলি মিররের সম্পাদক জামিলা হুসেইন লিখেছেন, “শুধু শ্রীলঙ্কাতেই এমন হতে পারে যে কয়েকটি বাঁদরের লড়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিশাল বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে!”
বারবার সতর্ক করেছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা
ডেইলি মিরর পত্রিকা সোমবার এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইঞ্জিনিয়াররা বছরের পর বছর ধরে সরকারকে সতর্ক করে আসছিলেন। তারা বলেছিলেন, “জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, একটি লাইনে সামান্য ঝামেলাও সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটাতে পারে।”
একজন ইঞ্জিনিয়ারের সূত্র ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, “বারবার সাবধান করার পরেও সরকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেনি। ফলে এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘনঘন ঘটতে পারে।”
২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটেও দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেছিল
শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের সময়ও দেশজুড়ে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছিল। দেশের জ্বালানি সরবরাহ সংকট, বিদেশি মুদ্রার অভাব এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে সেই সময় মানুষকে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবার একটি ছোট বাঁদরের কারণে সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রশাসনের অযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
আরও পড়ুন: Trump relation with Ukraine: হাতিয়ারের বদলে বিরল খনিজ! ট্রাম্পকে নতুন টোপ জ়েলেনস্কির
পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি
এই ঘটনার পর অনেকেই বলছেন, শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ পরিকাঠামোকে আধুনিক করার প্রয়োজনীয়তা এখন আরও বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, যদি একটি বাঁদরের কারণে গোটা দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে, তবে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও উদ্বেগজনক। শ্রীলঙ্কার সরকার এখন কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার বিষয়!