Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : নেপালে জেন জেড আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান অচলাবস্থা বৃহস্পতিবার নতুন মোড় নিল (Nepal Gen Z Protest)। রাজধানী কাঠমাণ্ডুর ভদ্রকালি সেনা সদর দফতরের বাইরে নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন বিক্ষোভকারীরা। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠল—প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (K P Sharma Oli) পদত্যাগ করার পর অন্তর্বর্তী নেতৃত্ব নিয়ে জেন জেড আন্দোলনের ভিতরেই গভীর বিভক্তি তৈরি হয়েছে।
সেনা সদর দফতরের বাইরে সংঘর্ষ (Nepal Gen Z Protest)
চোখে দেখা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেনা সদর দফতরে আলোচনার সময় বাইরে দাঁড়ানো তরুণ বিক্ষোভকারীরা নেতৃত্বের প্রশ্নে উত্তপ্ত বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন(Nepal Gen Z Protest)। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই বিতর্ক হাতাহাতিতে গড়ায়। সেনা ও পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন
আলোচনার ভিতরে এবং বাইরে দু’দিকেই মূল দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু—কে হবেন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব(Nepal Gen Z Protest)।
- একটি পক্ষ এখনও সমর্থন করছে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে, যিনি সৎ এবং নির্ভীক হিসেবে জনপ্রিয়।
- অন্য একটি পক্ষ তাঁর বিরোধিতা করে প্রস্তাব তুলেছে নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির প্রাক্তন প্রধান কুলমান ঘিসিঙের নাম। তাঁদের দাবি, সংবিধান অনুযায়ী সাবেক বিচারপতিদের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিষিদ্ধ, ফলে কার্কির মনোনয়ন শুধু অচলাবস্থা বাড়াবে।
বিক্ষোভকারীদের একদল লিখিত বিবৃতিতে জানায়,
“বলেন্দ্র শাহ আগ্রহ দেখাননি, হর্ক সাম্পাং সবার নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা নেই, আর সুশীলা কার্কি বয়সে প্রবীণ ও অযোগ্য। তাই সর্বজনপ্রিয় দেশপ্রেমিক প্রকৌশলী কুলমান ঘিসিঙকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

আরও পড়ুন : Nepal Gen Z Protest : কে হবেন নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান? মতভেদ আন্দোলনকারীদের মধ্যেই
সেনা সদর দফতরে বৈঠক(Nepal Gen Z Protest)
ভদ্রকালির সেনা সদর দফতরে চলছিল উচ্চপর্যায়ের বৈঠক(Nepal Gen Z Protest)। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেল, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল এবং জেন জেড আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
সেনার মুখপাত্র জানান,
“আমরা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে রাউন্ড টেবিল বৈঠক করছি। মূল লক্ষ্য—বর্তমান অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা এবং দেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা।”

আরও পড়ুন : India On Qatar Strike : কাতারে ইজরায়েলের আক্রমণকে নিন্দা করলো ভারত! তেল আবিবের সঙ্গেও ভারসাম্য রক্ষা
জেন জেড বিদ্রোহের পটভূমি(Nepal Gen Z Protest)
গত সপ্তাহে সরকার ২৬টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যেমন ফেসবুক, এক্স ও ইউটিউব বন্ধ করে দেয়(Nepal Gen Z Protest)। সেটিই ‘Gen Z uprising’-এর সূচনা।
- তরুণরা এটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত হিসেবে দেখে।
- সোমবার থেকে হাজার হাজার তরুণ রাস্তায় নেমে পতাকা নেড়ে দুর্নীতি, বেকারত্ব ও স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
অল্প সময়ের মধ্যেই আন্দোলন সহিংস আকার নেয়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এমনকি গুলি চালায়। সরকারি হিসাবে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি। সরকারি ভবন, মন্ত্রীদের বাড়ি ও বিলাসবহুল হোটেলে অগ্নিসংযোগ হয়। চাপের মুখে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী অলি।
রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া
এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে(Nepal Gen Z Protest)। নেপালি কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা জেন জেড আন্দোলনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে যেকোনও সিদ্ধান্ত অবশ্যই সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে হবে বলে দলটির সাধারণ সম্পাদক গগন থাপা ও বিশ্ব প্রকাশ শর্মা স্পষ্ট করেছেন।
কঠোর নিরাপত্তা, অচলাবস্থা বজায়(Nepal Gen Z Protest)
কাঠমাণ্ডু শহরে এখন কড়া নিরাপত্তা। সেনারা রাস্তায় টহল দিচ্ছে, কারফিউ জারি রয়েছে(Nepal Gen Z Protest)। দোকানপাট, স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। তবে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
আলোচনায় সুশীলা কার্কি, কুলমান ঘিসিং, এমনকি রাজতন্ত্রপন্থী কর্মী দুর্গা প্রসাইয়ের নামও উঠে আসছে। কিন্তু বাইরে আন্দোলনকারীদের ভিতরেই যখন বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে, তখন প্রশ্ন উঠছে—আসলেই কি তারা ঐক্যমত্যে পৌঁছতে পারবেন?
যে তরুণেরা পরিবর্তনের জন্য দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁরাই কি এখন নিজেদের ভেতরের ভাঙনের কারণে এই আন্দোলনের শক্তি হারাবেন? নেপালের অন্তর্বর্তী ভবিষ্যৎ আজ সেই প্রশ্নের মুখোমুখি।