Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু সোমবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল(Nepal Gen Z Protest)। দুর্নীতি বিরোধী স্লোগান এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে রাস্তায় নামে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী। ‘জেন জেড রেভলিউশন’ নামে পরিচিত এই আন্দোলন দ্রুত সহিংস রূপ নেয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৪২ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
কীভাবে শুরু হলো সহিংসতা? (Nepal Gen Z Protest)
প্রথমে মৈতিঘর মান্ডালা চত্বর থেকে মিছিল শুরু করে বিক্ষোভকারীরা(Nepal Gen Z Protest)। পরে তা সংসদের দিকে অগ্রসর হয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা হলে টিয়ার গ্যাস, জলকামান এবং শেষ পর্যন্ত গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দমক মিউনিসিপ্যালিটি অফিসেও বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করলে পুলিশ গুলি চালায়।
সংসদে অগ্নিসংযোগ, শুট-অ্যাট-সাইট আদেশ (Nepal Gen Z Protest)
সংসদ ভবনের একটি অংশে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের ঘটনায় সরকার জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে শুট-অ্যাট-সাইট নির্দেশ জারি করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিউ বানেশ্বর এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : Zelenskyy On US Tariff : রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করলেই মার্কিন শুল্কের কোপ, সমর্থন করলেন জেলেনস্কি
কেন ফুঁসে উঠল জেন জি?(Nepal Gen Z Protest)
সরকার ৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে হঠাৎ করেই ২৬টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করে(Nepal Gen Z Protest)। সরকারের দাবি, এসব প্ল্যাটফর্ম নেপালে ব্যবসা করছে অথচ স্থানীয়ভাবে নিবন্ধিত নয় এবং করও দিচ্ছে না। তবে বিক্ষোভকারীদের মতে, এটি আসলে সমালোচনামূলক কণ্ঠরোধের চেষ্টা।
‘দ্য অপারেশন, ইউজ অ্যান্ড রেগুলেশন অফ সোশ্যাল মিডিয়া ইন নেপাল’ নামের যে বিলকে কেন্দ্র করে এই সিদ্ধান্ত, তা এখনও সংসদে পাস হয়নি। এরই মধ্যে ভিবার, টিকটক, উইটক ও নিম্বাস রেজিস্টার্ড থাকলেও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্ম এখনও আবেদন করেনি।
আরও পড়ুন : Nepal Gen Z Protest : অগ্নিগর্ভ নেপাল,পুলিশের গুলিতে আহত তরুণ! সার্বভৌমত্ব রক্ষার দোহাই কেপি শর্মার
সেলিব্রিটি সমর্থনে আন্দোলন
নেপালের জনপ্রিয় অভিনেতা হরি বংশ আচার্য ফেসবুকে লিখেছেন, “আজকের তরুণেরা শুধু চিন্তা করে না, প্রশ্নও তোলে। দুর্নীতি ও অব্যবস্থার বিরুদ্ধে এই কণ্ঠ রুখে দেওয়া যাবে না(Nepal Gen Z Protest)।” অভিনেতা মদন কৃষ্ণ শ্রেষ্ঠ বলেছেন, “দুর্নীতি এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে আজ মাতৃনেপাল কাঁদছে।” গায়ক প্রকাশ সাপুত আন্দোলনকারীদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
সরকারের অবস্থান(Nepal Gen Z Protest)
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (K P Sharma Oli) জানিয়েছেন, নেপাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে নয়। তবে দেশের আইন অমান্য করে ব্যবসা চালালে তা সহ্য করা হবে না। তাঁর বক্তব্য, “জাতীয় মর্যাদা ও স্বাধীনতা কয়েকটি চাকরি হারানোর চেয়ে অনেক বড়।”
কফিউ ও সীমান্তে সতর্কতা(Nepal Gen Z Protest)
সহিংসতার জেরে নিউ বানেশ্বর ও সংলগ্ন এলাকায় কফিউ জারি করেছে প্রশাসন। ওই অঞ্চলে যেকোনো জমায়েত বা চলাচল নিষিদ্ধ। ভারতও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত এসএসবি জওয়ান।(Nepal Gen Z Protest)সহিংসতার জেরে নিউ বানেশ্বর ও সংলগ্ন এলাকায় কফিউ জারি করেছে প্রশাসন। ওই অঞ্চলে যেকোনো জমায়েত বা চলাচল নিষিদ্ধ। ভারতও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত এসএসবি জওয়ান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিনের দুর্নীতি, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের ক্ষোভই তরুণ প্রজন্মকে রাস্তায় নামিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা কেবল শেষ স্ফুলিঙ্গ। অনেকেই মনে করছেন, এই তরুণ প্রজন্মের লড়াই নেপালের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ বদলে দিতে পারে।