Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : নেপালে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধকরণের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও জেনারেশন জেড আন্দোলন কয়েক দিনের মধ্যেই এক ভয়াবহ হিংসার রূপ নিয়েছে (Nepal Gen Z Protest)। সংসদ ভবন জ্বালিয়ে দেওয়া, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর (K P Sharma Oli) স্ত্রীর অগ্নিদগ্ধ মৃত্যু, জেল ভাঙা থেকে শুরু করে রাজনীতিকদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলি গোটা বিশ্বকে হতবাক করেছে। অথচ আন্দোলনের মূল উদ্যোক্তা তরুণরাই এখন অভিযোগ করছেন—এটি তাদের আন্দোলন নয়, বরং বহিরাগতরা পরিকল্পিতভাবে তাদের দাবিকে বিকৃত করে দিচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের অবস্থান (Nepal Gen Z Protest)
জেন জেড নেপাল এবং ‘হামি নেপাল’ নামে কয়েকটি যুব সংগঠন প্রকাশ্যে জানিয়েছে, তারা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়(Nepal Gen Z Protest)।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়—
“আমরা এখন সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করছি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করছি এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। যারা আমাদের আন্দোলনকে ছিনতাই করতে চাইছে, তাদের স্বাগত জানানো হবে না।”
‘হামি নেপাল’ স্পষ্ট ভাষায় বলেছে—
“এই ধ্বংসযজ্ঞ আমাদের নয়। এটি জেন জেড নয়। আমরা গড়তে চাই, ভাঙতে নয়।”
সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র(Nepal Gen Z Protest)
রাজধানী কাঠমান্ডু এবং পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে(Nepal Gen Z Protest)। সেনারা জরুরি বিধিনিষেধ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
- সংসদ ভবন অগ্নিদগ্ধ
- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জালানাথ খনালের স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী মৃত্যুবরণ
- কেপি শর্মা অলির ব্যক্তিগত বাড়িসহ একাধিক রাজনীতিকের বাড়ি ভস্মীভূত
- সিংহ দরবার কমপ্লেক্সে অগ্নিসংযোগ
- কাঠমান্ডু বিমানবন্দর বন্ধ
এ ছাড়া নাখু জেলে ভাঙচুর চালিয়ে বন্দি মুক্ত করা হয়। মুক্তদের মধ্যে ছিলেন বহুল আলোচিত সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী রবী লামিচানে, যিনি বহুমিলিয়ন টাকার সমবায় কেলেঙ্কারির মামলায় আটক ছিলেন।

আরও পড়ুন : Ducsu Election Result : শিবির-সমর্থিত প্যানেলের বড় জয়, ভিপি পদে শাদিক কায়েম
‘বিপ্লব নাকি প্রতিবিপ্লব?’ (Nepal Gen Z Protest)
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই সতর্ক করে বলেছেন, এই আন্দোলন হয়তো আর আসল চেহারায় নেই (Nepal Gen Z Protest)। তার ভাষায়—
“হয়তো বিপ্লব প্রতিবিপ্লবে পরিণত হচ্ছে। আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম—ভেড়ার চামড়ায় নেকড়েরা ভেতরে ঢুকে পড়েছে। গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলোতে কে আগুন ধরাচ্ছে, আর তাদের উদ্দেশ্য কী?”
আরও পড়ুন : Greater Nicobar Project : কেন ‘গ্রেট নিকোবর পোর্ট’ প্রকল্পকে ভারতের ‘পার্ল হারবার’ বলা হচ্ছে?
বাংলাদেশ তুলনা(Nepal Gen Z Protest)
নেপালের এই পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে গত বছরের বাংলাদেশ(Nepal Gen Z Protest)। জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আন্দোলনও প্রথমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও সংস্কারের দাবিতে শুরু হলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক শক্তি ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রভাবের অভিযোগ ওঠে। সেটিই শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিকে নিয়ে যায়।
বিশ্লেষকদের মতে, স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন সাধারণত কয়েক দিনের বেশি স্থায়ী হয় না। দীর্ঘসময় ধরে চালাতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক বা রাজনৈতিক সমর্থন লাগে। তাই নেপালের আন্দোলনও একই পথের দিকে যাচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন জোরদার হচ্ছে।
আরও পড়ুন : Ducsu Election Result : শিবির-সমর্থিত প্যানেলের বড় জয়, ভিপি পদে শাদিক কায়েম
আন্দোলনকে সহিংসতা থেকে রক্ষা(Nepal Gen Z Protest)
নেপালের তরুণ প্রজন্ম শুরুতে দুর্নীতি, বৈষম্য ও সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে এক ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠ তুলেছিল(Nepal Gen Z Protest)। কিন্তু অগ্নিসংযোগ, জেল ভাঙা, রাজনীতিকদের বাড়িতে হামলা—এসব ঘটনায় সেই আন্দোলনের বৈধতা প্রশ্নের মুখে।
এখন তাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা—নিজেদের আন্দোলনকে সহিংসতা থেকে রক্ষা করা এবং জনসমর্থনের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখা। নেপালের ভবিষ্যৎ রাজনীতি নির্ভর করছে এই প্রশ্নের ওপর: এটি কি সত্যিই একটি প্রজন্মের পরিবর্তনের লড়াই, নাকি আরেকটি ক্ষমতার খেলায় রূপান্তরিত হবে?