ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রায় দু’মাসের বিরতির পর নেপালে ফের রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে উত্তাল হল রাজপথ(Nepal Pro Monarchy Protests)। রবিবার বিকেলে রাজধানী কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি-র প্রধান ও সে দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী কমল থাপা গ্রেফতার হওয়ায় পরিস্থিতি নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে। গ্রেফতারের পর থেকেই রাজধানী সহ দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ ও অবরোধ।
জমায়েত বিরোধী আদেশ (Nepal Pro Monarchy Protests)
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঠমান্ডু রিং রোড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জারি করা হয়েছে জমায়েত বিরোধী আদেশ(Nepal Pro Monarchy Protests)। পুলিশ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির (KP Sharma Oli) সরকারি বাসভবন বালুওয়াতার অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে বেশ কয়েক জন আরপিপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। নারায়ণচর-সহ একাধিক জায়গায় দফায় দফায় আন্দোলন চলছে। পঞ্চম দিনের মাথায়ও থামেনি বিক্ষোভ।
‘জয়েন্ট পিপল্স মুভমেন্ট কমিটি’(Nepal Pro Monarchy Protests)
এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে রাজতন্ত্রপন্থী দল আরপিপি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির গড়া ‘জয়েন্ট পিপল্স মুভমেন্ট কমিটি’(Nepal Pro Monarchy Protests)। এর অন্যতম নেতা প্রাক্তন মাওবাদী কমান্ডার দুর্গা প্রসাই, যিনি এক সময় রাজতন্ত্র উচ্ছেদের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলনের সামনের সারির যোদ্ধা ছিলেন। এখন তিনিই রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে ফের সিংহাসনে বসানোর দাবিতে সরব। গত মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দিনে দিনে বাড়ছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০০৮ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা আজ ব্যর্থ। তাঁরা দাবি করছেন— নেপালের রাজনৈতিক স্থিতি ফেরাতে রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্রের প্রয়োজন।

নেপালের শাহ রাজবংশের ইতিহাস কী?(Nepal Pro Monarchy Protests)
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, নেপালে ১৭৬৮ সালে শাহ রাজবংশের সূচনা হয়(Nepal Pro Monarchy Protests)। শেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্র ২০০১ সালে ভাই রাজা বীরেন্দ্রর হত্যার পর সিংহাসনে বসেন। ২০০৫ সালে তিনি গণতান্ত্রিক সরকারকে অপসারণ করে এককভাবে শাসন শুরু করলে দেশজুড়ে ব্যাপক জনবিক্ষোভ দেখা দেয়। তার ফলেই ২০০৬ সালে তিনি ক্ষমতা হারান এবং ২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ২০১৫ সালে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সংবিধান গৃহীত হয়।

আরও পড়ুন: Earthquake In Karachi : ভূমিকম্পে ফাটলো করাচি জেলের দেয়াল ! জেল থেকে পালালো দু-শোর বেশি বন্দি
প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ কী হবে?(Nepal Pro Monarchy Protests)
তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষ, বিশেষত তরুণ প্রজন্ম, আবারও প্রশ্ন তুলছে সেই পরিবর্তনের ফলাফল নিয়ে (Nepal Pro Monarchy Protests)। তাঁদের মতে, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অবনতি—এই সব কিছুর দায় বর্তমান শাসকদের। তাই ফের রাজতন্ত্রের দিকে ফিরে তাকানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কমল থাপার গ্রেফতার এবং বিক্ষোভের জেরে সরকার একদিকে যেমন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধী পক্ষ অভিযোগ তুলছে, সরকারের এই পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ এবং আন্দোলনকারীদের সংগঠনের উপর।নেপালের রাজপথে এখন সময়ের পালাবদলের অপেক্ষা। রাজতন্ত্র ফিরবে, না গণতন্ত্রই আরও দৃঢ় হবে—তার উত্তর দেবে আগামী দিন।