ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস ভারত ছেড়ে স্বাধীনতার খোঁজে গেলেন জার্মানিতে (Netaji Meeting Hitler)। যেখানে তিনি দেখা করতে চাইছিলেন তৎকালীন জার্মানির প্রধান হিটলারের সাথে। কিন্তু কেন দেখা করতে চাইছিলেন? তার কারণ ভারতের ব্রিটিশ শক্তিকে পরাস্ত করতে তিনি ব্রিটিশদেরই শত্রু অক্ষশক্তির দেশ গুলির সাহায্য চাইছিলেন। কেননা, তখন চলছিল দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ। আর জার্মানি, জাপান ও ইতালি যুদ্ধে ব্যস্ত ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আমেরিকা ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে। আর এই জন্যই নেতাজি শত্রুর শত্রুকে কাজে লাগিয়ে ভারতের স্বাধীনতা আদায়ের চেষ্টা করতে চাইছিলেন।
হিটলার সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী নয় (Netaji Meeting Hitler)
নেতাজির সাথে দেখা করতে হিটলার আগ্রহী ছিলেন না (Netaji Meeting Hitler)। নেতাজি এক বছরেরও বেশি সময় জার্মানিতে থাকার পরেও হিটলারের সঙ্গে দেখা হয়নি। এর কারণ ছিল হিটলার ভারতকে ইংল্যান্ডের উপনিবেশ হিসেবেই দেখতে পছন্দ করতেন। এই বিষয়ে হিটলার নিজের বই “মেইন ক্যাম্প”-এও লিখেছেন ভারতের উপর ইংল্যান্ডের প্রভাবের বিষয়ে। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ব্যস্ত জার্মানি। সেই সময়ে ভারতকে সাহায্য করা মানে জার্মানির স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়া। এজন্য হিটলার চাইছিলেন না নেতাজির সঙ্গে দেখা করতে।
হিটলারের বহুরূপী (Netaji Meeting Hitler)
নেতাজির সঙ্গে অবশেষে একদিন দেখা করতে রাজি হলেন হিটলার (Netaji Meeting Hitler)। নেতাজি বসে রয়েছেন হিটলারের এক খাস ডেরায়। চারিদিকে নাৎসি স্বস্তিক চিহ্ন দেওয়া জার্মান সেনা। এই সেনা বাহিনীকে ততদিনে চিনে ফেলেছেন গোটা বিশ্ববাসী। গোটা বিশ্বের কাছে এই বাহিনীর পরিচয় যেন শয়তানের এক রূপ। সেই শয়তানের ডেরায় বসে আছেন নেতাজি। বসে এক মনে বই পড়ছেন।
সেই সময় এক ব্যক্তি ঢুকলেন সেই ঘরে। দেখতে হুবহু হিটলারের মতো। হিটলার ঘরে ঢুকলেন। কিন্তু নেতাজি উঠে দাঁড়ালেন না। এমনকি তাকালেন না পর্যন্ত। এরপর আর একজন আসলেন। তিনিও দেখতে একেবারে হুবহু হিটলারের মতো। কিন্তু এবারেরও নেতাজি তাকালেন না। এরকম বেশ কয়েকবার হওয়ার পর একটি হাত নেমে এল নেতাজির কাঁধে। এবার তিনি তাকালেন। বাড়িয়ে দিলেন হাত। হাত মেলালেন হিটলারের সাথে। এবার যিনি এসেছেন তিনি আসল হিটলার। কিন্তু, এতেই অবাক হয়ে গেলেন হিটলার নিজেই।
কীভাবে চিনলেন নেতাজি?
আসল হিটলারকে চেনার পর বেশ আশ্চর্য হলেন হিটলার। তিনি বুঝেছিলেন এই বাঙালি ভদ্রলোকটি সাধারণ কেউ নন। তিনি নেতাজির কাছে জানতে চাইলেন আসল হিটলার যে তিনি সেটা কি করে জানলেন? নেতাজির স্পষ্ট উত্তর ছিল, তাঁর কাঁধে হাত রাখার মতো সাহস একমাত্র আসল হিটলারেরই আছে। কথা শুনে চমকে উঠেছিলেন নাৎসি সেনার পোশাকে থাকা জার্মান নেতা স্বয়ং অ্যাডলফ হিটলার। সেই সময়েই ভারতীয়দের প্রতি হিটলারের যে মনোভাব ছিল সেটার বদল হয়েছিল।
আমাকে উপদেশ দেবেন না, হিটলার কে জবাব
নেতাজির সঙ্গে হিটলারের আলোচনা শুরু হল। সেই আলোচনায় ছিলেন নেতাজির এক জার্মান বন্ধু ভন ট্রট। তিনি নেতাজিকে নিজের জার্মান অনুবাদক হিসেবে সঙ্গে রেখেছিলেন। অন্যদিকে হিটলারের সঙ্গে ছিলেন হিমলারের মতো উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। হিটলার নেতাজিকে সাহায্য করতে চাইছিলেন না, অথচ তাঁকে সমর্থন করতে বলছেন। তখন নেতাজি বলেছিলেন, সারা জীবন রাজনীতি করে কেটেছে। আমাকে উপদেশ দিতে হবে না। ভাবুন একবার, স্বয়ং হিটলারের সামনে এমন কথা। যদিও তাঁর এই কথা অনেক হালকা করে জার্মানিতে অনুবাদ করে দিয়েছিলেন বন্ধু ভন ট্রট।