ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বের কূটনৈতিক মঞ্চে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump For Nobel Prize)। পাকিস্তানের পর এ বার ইজ়রায়েলও প্রকাশ্যে দাবি তুলেছে, বিশ্বের নানা প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ায় ট্রাম্পেরই প্রাপ্য নোবেল শান্তি পুরস্কার।
সোমবার হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেখানেই নেতানিয়াহু আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন, তিনি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “একাধিক দেশে শান্তি ফেরাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প (Donald J. Trump)। যুদ্ধ থামিয়ে শান্তির পথ দেখিয়েছেন তিনি।”
ট্রাম্পের নাম মনোনীত (Donald Trump For Nobel Prize)
নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমি নোবেল কমিটিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছি(Donald Trump For Nobel Prize)। সেই চিঠিতে আপনার (ট্রাম্প) নাম মনোনীত করা হয়েছে শান্তির জন্য। আপনি এর যোগ্য। এটি আপনার প্রাপ্য।” এই ঘোষণায় কিছুটা চমকে যান ট্রাম্পও। জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। বলেন, “বিশেষত আপনার কাছ থেকে এমন কিছু পাওয়া সম্মানের।”
এর পরেই ট্রাম্প যোগ করেন, “আমি যুদ্ধ থামাতে চাই। মানুষের প্রাণ যাক, তা আমি পছন্দ করি না। যতটা সম্ভব শান্তির পক্ষে কাজ করতে চাই।”
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনায় ট্রাম্পের ভূমিকা (Donald Trump For Nobel Prize)
সম্প্রতি ইরান ও ইজ়রায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা এবং গাজ়া-হামাস সংঘর্ষে হস্তক্ষেপ করেছে আমেরিকা(Donald Trump For Nobel Prize)। ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো এবং সেই সংঘর্ষ থামাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা—এই দুটি ক্ষেত্রেই ট্রাম্প প্রশাসনের সক্রিয়তা দাবি করেছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে গাজ়া ভূখণ্ডে হামাস ও ইজ়রায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাও চালিয়েছে আমেরিকা।
এই ভূমিকাই ইজ়রায়েলকে ট্রাম্পের নোবেল প্রস্তাবে উদ্বুদ্ধ করেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ ও বিতর্ক (Donald Trump For Nobel Prize)
এই প্রথম নয়, এর আগেও ট্রাম্প নিজের কৃতিত্ব দাবি করে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন(Donald Trump For Nobel Prize)। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির ক্ষেত্রে। যদিও ভারত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, কারও মধ্যস্থতা নয়, পাকিস্তানের পক্ষ থেকেই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে, এবং ভারত তা গ্রহণ করে।
বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সাংবাদিকদের জানান, “প্রধানমন্ত্রী মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ফোনে বলেছেন, সংঘর্ষবিরতিতে কারও ভূমিকা ছিল না।” কিন্তু ট্রাম্প পরে একাধিক সভা ও টিভি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, “আমি ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ থামিয়েছি। দুই দেশের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ এড়াতে আমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছি।”
পাকিস্তানও সেই দাবি সমর্থন করে। এমনকি তারা নিজেই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল নোবেল কমিটিকে, ট্রাম্পের নাম বিবেচনার জন্য।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ (Donald Trump For Nobel Prize)
বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে—নোবেল শান্তি পুরস্কারের মতো সংবেদনশীল স্বীকৃতির জন্য রাজনৈতিক কৌশলের কি জায়গা আছে? অনেকেই মনে করছেন, মার্কিন নির্বাচন সামনে রেখে ট্রাম্পের জন্য এই ‘মনোনয়ন রাজনীতি’ তাঁর আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি গঠনের কৌশল। তবুও, এখন পাকিস্তান এবং ইজ়রায়েলের মতো দেশ যখন সরাসরি এমন দাবি তুলছে, তখন আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক নতুন মাত্রা পাচ্ছে—ট্রাম্প কি আদৌ নোবেলের যোগ্য? নাকি এটি নিছক রাজনৈতিক কূটচাল? সময়ের উত্তরই বলে দেবে শেষ কথা। তবে ট্রাম্প যে আবারও শিরোনামে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই(Donald Trump For Nobel Prize)।