ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মধ্যপ্রদেশের ইনদোর-দেবাস (NHAI) জাতীয় সড়কে টানা ৪০ ঘণ্টার যানজটে আটকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। এই সময় প্রায় চার হাজার গাড়ি থেমে যায়, সৃষ্টি হয় এক চরম পরিস্থিতির। সেই যানজটেই অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারান তিনজন। ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়, যার শুনানিতে চমকে দেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই)।
ভারী বর্ষণে রাস্তায় জমে জল (NHAI)
বিচারপতি বিবেক রুসিয়া ও বিচারপতি বিনোদকুমার দ্বিবেদীর ডিভিশন (NHAI) বেঞ্চে মামলার শুনানিতে এনএইচএআই সাফ জানায়-“মানুষ অপ্রয়োজনে আগেভাগে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন!” এই মন্তব্যেই কোর্টরুম জুড়ে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। ইনদোর-দেবাস সড়কে ছয় লেনের নির্মাণকাজ চলছিল, তারই মাঝে ভারী বর্ষণে রাস্তায় জমে জল। ফলে ধীরে ধীরে থেমে যায় গাড়ির গতি। রাত বাড়তেই আটকে পড়ে হাজার হাজার যান। ওই জটে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে রাস্তাতেই মারা যান সন্দীপ পটেল। পরদিন সকালে আরও দু’জন বলরাম পটেল ও কমল পঞ্চাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি।
প্রশাসনের আর দায় কোথায়? (NHAI)
পরিবারগুলির অভিযোগ, সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়াতেই (NHAI) এই মৃত্যু। বলরামের ভাইপো সুমিত পটেল বলেন, “আমরা তো হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। সেটা কি অপ্রয়োজনীয় রাস্তায় বেরোনো?” তাঁর ক্ষোভ, “এমন অব্যবস্থার পর যদি দায় চাপানো হয় সাধারণ মানুষের ওপর, তাহলে প্রশাসনের আর দায় কোথায়?”
দেরির কারণ কী?
এদিকে, আদালত জানায় সেপ্টেম্বরে বিকল্প রাস্তা প্রস্তুতের নির্দেশ থাকলেও, তা এখনও অসম্পূর্ণ। দেরির কারণ হিসেবে এনএইচএআই জানায়, ১০ দিনের শ্রমিক ধর্মঘট। তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় আদালত। মামলাকারীর আইনজীবী গিরিশ পটবর্ধন বলেন, আদালত এনএইচএআই, ইনদোর কালেক্টর, পুলিশ কমিশনার, টোল কোম্পানি ও নির্মাণকারী সংস্থাকে এক সপ্তাহের মধ্যে জবাবদিহির নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি আদালত কটাক্ষ করে বলে, “তাহলে কি এখন থেকে রাস্তায় নামার আগে এনএইচএআই-এর অনুমতি নিতে হবে?”

আরও পড়ুন: Glowing Water Trend: ‘গ্লোয়িং ওয়াটার’ ট্রেন্ড! সোশ্যাল মিডিয়ার আলোয় মায়া না বিপদ?
এই ঘটনায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দায়সারা মনোভাব এবং সাধারণ নাগরিকদের প্রতি অসংবেদনশীল আচরণ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপে কিছুটা আশার আলো দেখা দিলেও, এখনও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে এভাবে সাধারণ মানুষ কি নিরাপদে রাস্তায় নামতে পারবে?