ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ইতিহাসের গড়ে দেশের একমাত্র অর্থমন্ত্রী হিসেবে টানা অষ্টমবার বাজেট পেশ করছেন নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। প্রতিবারই বাজেট পেশের দিন আলোচনায় উঠে আসে নির্মলা সীতারামনের শাড়ি (Nirmala Sitharaman Saree)। প্রতিবারই ভারতীয় শিল্পকলার কোনও না কোনও ছাপ দেখা গিয়েছে তাঁর শাড়িতে। এবারও তার ব্যাতিক্রম হলো না। অষ্টম বাজেট পেশের দিনে মধুবনি শাড়িতে ধরা দিলেন সীতারামন।
নজরে নির্মলার শাড়ি (Nirmala Sitharaman Saree)
যে শাড়ি নিয়ে এত কথা হচ্ছে, সেটি অত্যন্ত মার্জিত এবং রুচিশীল। নির্মলা বাজেট পেশ করেছেন সাদা বেঙ্গালুরু সিল্কের শাড়ি পরে (Nirmala Sitharaman Saree)। সেই শাড়ির দু’প্রান্তে বিহারের (Bihar) বিখ্যাত মধুবনি শিল্পের ছোঁয়া। অফ-হোয়াইট রঙের সেই শাড়িতে মানানসই সোনালি রঙের চওড়া পাড় সঙ্গে নানা রঙের হালকা কারুকাজ। শাড়িটির দু’প্রান্তে জোড়া মাছের কল্কা আঁকা ছিল। মাছ বিষ্ণুর অবতার। সেটিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শাড়িটিতে। শাড়িতে ছিল পদ্মফুলের কল্কাও। এই শাড়ির সঙ্গে একটি লাল রঙের ব্লাউজ এবং শাল পরেছিলেন নির্মলা।হাতে ছিল বাজেটের ‘বহি-খাতা’। যা আদতে একটি ট্যাব। সেটি মোড়া ছিল লাল কাপড়ে। তাতে ছিল সোনালী রঙের অশোকস্তম্ভ, যা ভারতের জাতীয় প্রতীক।
উপহারের শাড়িতে বাজেট পেশ নির্মলার (Nirmala Sitharaman Saree)
এদিন নির্মলা সীতারমন যে শাড়ি পরে বাজেট পেশ করলেন সেখানে ফুটে উঠেছে ভারতের সংস্কৃতির ছাপ। মধুবনী শিল্প দেখা যাচ্ছে তাঁর শাড়িতে (Nirmala Sitharaman Saree)। এই শাড়িটা তাঁকে উপহার দিয়েছেন দুলারী দেবী। ভাবছেন কে এই মহিলা। তিনি একজন মধুবনী শিল্পী, পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মান। ‘মিথিলা আর্ট ইনস্টিটিউট’-এর এক অনুষ্ঠানে মধুবনিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় দুলারির। ওই সাক্ষাতের সময়েই নির্মলা সীতারমনকে এই মধুবনি শাড়ি উপহার দিয়েছিলেন দুলারি দেবী। অনুরোধ করেছিলেন, এই শাড়ি অর্থমন্ত্রী যেন বাজেট অধিবেশনের দিন পরেন। সেই অনুরোধ রেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন : বিশ্বের দ্রুততম অগ্রগতি ভারতের অর্থনীতি, বাজেটে জীবনদায়ী ওষুধে শুল্ক প্রত্যাহার
কে এই দুলারি দেবী?
বিহারের ছোট একটি গ্রাম রান্তির বাসিন্দা দুলারি দেবী।মধুবনি চিত্রকলায় তাঁর অবদানের জন্য ২০২১ সালে ‘পদ্মশ্রী’ পান দুলারি। মধুবনি শিল্পকলার জন্য অতীতেও অন্য অনেক সম্মান এবং পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এই দুলারী দেবীর জীবনকাহিনিও যথেষ্ট অনুপ্রেরণাদায়ক। অত্যন্ত গরীব জেলে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দুলারী দেবী। তিনি পড়াশোনা করার তেমন সুযোগ পাননি। মাত্র ১৬ বছর বয়সী দুলারীকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। তিনি তাঁর সন্তানকেও হারিয়েছিলেন। পেট চালাতে পরিচারিকার কাজ করেছেন। মধুবনী শিল্পী মহাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে কাজ করার সময় এই শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর পথচলা।
আরও পড়ুন : বাজেটে মধ্যবিত্তের সুরাহা, দাম কমল ভোগ্যপণ্যের
নির্মলাকে শাড়ি পরতে দেখে খুশি দুলারি
নির্মলা সীতারামনকে তার হাতে আঁকা শাড়ি পরে বাজেট পেশ করতে দেখে দুলারি দেবী আপ্লুত। সাক্ষাৎকারে দুলারি দেবী জানান, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে তাঁর উপহার দেওয়া শাড়িটি পরে বাজেট পেশ করতে দেখে তিনি ভীষণ খুশি।দুলারি বলেন, ‘সীতারামনজি মিথিলা চিত্রকলা সংস্থানে এসেছিলেন। সেখানেই আমি তাঁকে আমার তৈরি করা ওই শাড়িটি উপহার দিই। আমি ওঁকে শাড়িটি পরার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। শাড়িটি তৈরি করতে একমাস সময় লেগেছিল। আজ আমি ওঁকে ওই শাড়ি পরে থাকতে দেখে খুব খুশি হয়েছি। এটা বিহার এবং সারা দেশের কাছেই গর্বের বিষয়।’