ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তর কোরিয়ার নেতার ক্ষমতাশালী বোন বলেছেন (North Korea warn US), পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে আলোচনাকে ‘বিদ্রূপ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হবে।
‘ডিনিউক্লিয়ারাইজেশন সম্ভব নয়’ — সাফ জানিয়ে দিলেন কিম জো ইয়োং (North Korea warn US)
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের প্রভাবশালী বোন কিম জো ইয়োং স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন (North Korea warn US), উত্তর কোরিয়া একটি অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। সেই বাস্তবতা আমেরিকাকে মেনে নিতেই হবে। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আলোচনা কখনোই উত্তর কোরিয়াকে নিরস্ত্রীকরণে নিয়ে যাবে না। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি’-তে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কিম বলেন, এখনকার ক্ষমতা এবং ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ভবিষ্যতের যেকোনও আলোচনার আগে সেই পরিবর্তন স্বীকার করতে হবে। তিনি বলেন, “উত্তর কোরিয়ার অস্তিত্বের সঙ্গে যুক্ত পারমাণবিক প্রতিরোধক্ষমতা এবং দেশের সর্বোচ্চ সংবিধানে যে অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে, সেটিকে অস্বীকার করার যেকোনও চেষ্টা আমরা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করব।”
‘আমেরিকাকে ভাবনাচিন্তা বদলাতে হবে’ (North Korea warn US)
কিম জো ইয়োং বলেন, “আমরা নিজেদের জাতীয় অবস্থান রক্ষা করতে যেকোনও পথ খোলা রেখেছি।” তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ কোনও পক্ষের পক্ষেই লাভজনক নয়। যুক্তরাষ্ট্রকে বর্তমান বাস্তবতার ভিত্তিতে নতুন কোনও আলোচনার পথ খুঁজতে হবে। তিনি দাবি করেন, যদিও কিম জং উন এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্ক “খারাপ নয়”, তবুও সেই সম্পর্ককে ব্যবহার করে ডিনিউক্লিয়ারাইজেশনের প্রচেষ্টা করা হলে তা হবে “উপহাস”। তিনি বলেন (North Korea warn US), “যদি আমেরিকা এই পরিবর্তিত বাস্তবতা মেনে না নিয়ে অতীতের ব্যর্থতা আঁকড়ে থাকে, তাহলে ডিপিআরকে-আমেরিকা সংলাপ কেবল তাদের কল্পনা হয়েই থাকবে।”
আরও পড়ুন: Russia USA : ট্রাম্পের নতুন ‘চরম সময়সীমা’ মানতে অস্বীকার রাশিয়ার, ট্রাম্পকেই দুষলেন পুতিন!
ট্রাম্প আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও উত্তর কোরিয়া অনড় (North Korea warn US)
গত সপ্তাহান্তে দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নহাপ নিউজ এজেন্সি জানায়, হোয়াইট হাউসের এক অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্প কিম জং উনের সঙ্গে আবারও আলোচনায় আগ্রহী, উত্তর কোরিয়ার সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে। এই মন্তব্যের পরপরই কিম জো ইয়োং ওই বিবৃতি দেন। এর একদিন আগেই তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং-এর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়াস এবং সীমান্তে প্রচার সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্তকেও তিরস্কার করেন।
২০১৮ সালের শীর্ষ বৈঠকের পরে কী ঘটল
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর ট্রাম্প আবারও পিয়ংইয়ং-এর সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে কিম জং উনের সঙ্গে তিনটি শীর্ষ বৈঠক করেছিলেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গত মাসে বলেন, ট্রাম্প চান ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠকের অগ্রগতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে। তবে সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম এবং কোরিয়া সীমান্তে হওয়া বৈঠকগুলি সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি থামেনি।
বিশ্লেষকদের মত
ওয়াশিংটনের স্টিমসন সেন্টারের কোরিয়া প্রোগ্রামের ডিরেক্টর জেনি টাউন বলেন, কিম জো ইয়োং-এর বক্তব্য পিয়ংইয়ং-এর সাম্প্রতিক অবস্থানের সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি বলেন, “তিনি ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক সম্ভাবনা খোলা রেখেছেন, কিন্তু স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে আগের মতো ডিনিউক্লিয়ারাইজেশন আলোচনার পথে আর ফেরা যাবে না।”
জেনি আরও বলেন, “২০১৯ সালের পর অনেক কিছু বদলে গেছে—উত্তর কোরিয়ার বিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচি, আইনি ও নীতিগত পরিবর্তন এবং সামগ্রিক আন্তর্জাতিক পরিবেশ। সেই প্রেক্ষিতে পুরনো আলোচনার পথ এখন আর বাস্তবসম্মত নয়।” তাঁর মতে, আলোচনা হতে পারে, তবে তার কাঠামো এখন বদলাতে হবে। “এটা আর নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে হবে না। ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা হতে পারে। তবে আমেরিকা সেই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত কিনা, সেটা সময়ই বলবে।”