ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওবিসি মামলায় রাজ্য সরকারের বড় ধাক্কা হাইকোর্টে(OBC Reservation)। ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের (Calcutta High Court ) নির্দেশে নতুন করে সমীক্ষা চালিয়ে ১৪০ টি জনজাতিকে নিয়ে ওবিসি সংরক্ষণের নতুন যে তালিকা দিয়েছিল রাজ্য তার ওপরও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করলেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ।আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে(OBC Reservation)। আদালতের এই নির্দেশে আবারও কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা রাজ্যের (OBC Reservation)
ওবিসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেলো রাজ্য(OBC Reservation)। ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তি এবং ১৪০টি জনজাতিকে নিয়ে ওবিসি সংরক্ষণের নতুন তালিকার উপর ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ।এদিনের শুনানিতে রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতিরা। রাজ্যের জারি করা গত বিজ্ঞপ্তিগুলোতে আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি বলে মন্তব্য করল আদালত। এদিনের শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তরফে বিভিন্ন বিষয়ে যে চার-পাঁচটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তার মাধ্যমে সরাসরি আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। আমরা আগেও বলেছি যে ওবিসি শ্রেণীভুক্ত ৬৬ টি সম্প্রদায়কে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন(OBC Reservation)।’
ওবিসি নিয়ে আলোচনা (OBC Reservation)
শুনানি শুরুতে কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী আদালতকে জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে চেয়ারম্যান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী এনসিবিসি-র সঙ্গে বৈঠক করেন(OBC Reservation)। সেখানে ওবিসি কারা, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ওবিসি নিয়ে দুটো সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে। যার প্রভাব ভয়ংকর হতে পারে। পাশাপাশি তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস কমিশন স্বাধীনভাবে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।তার উত্তরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে জানান বর্তমানে ওবিসি মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। সেখানে সবকিছু বলা হয়েছে। এবং নতুন করে সমীক্ষার কথাও জানানো হয়েছে। রাজ্যের এই বক্তব্য শুনে রীতিমতো বিরক্ত হন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা(OBC Reservation)। তিনি রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা সমীক্ষা নিয়ে কথা বলছেন, কিন্তু বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কিছু বলছেন না কেন?’

এজি আদালতকে কী জানান? (OBC Reservation)
এজি তখন আদালতকে জানান, রাজ্য সুপ্রিম কোর্টকে সমস্ত পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। নতুন তালিকাও সেখানে দেওয়া হবে(OBC Reservation)। তাই শীর্ষ আদালত কি নির্দেশ দেয় তার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। রাজ্যের এই বক্তব্য শুনে রীতিমতো বিরক্ত হন দুই বিচারপতি। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী রাজ্যের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তাহলে আপনারা কোনও পদক্ষেপ করছেন না কেন? আপনারা কিছু না করলে আমরাও কিছু করতে পারবো না। সুপ্রিমকোর্টে কী হয় তাহলে দেখুন! আপনারাও বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা করছেন। আমরাও বলেছি যে ঠিক আছে তাহলে সেই অবধি কোনও পদক্ষেপ করবেন না।’ এদিন শুনানিতে মামলাকারীর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য। এজি বলেন, ‘মামলাকারী অমল চন্দ্র দাস কে? জনস্বার্থ মামলায় জনগণের স্বার্থ দেখা উচিত। এখানে তাঁর কী উদ্দেশ্য? তিনি আগে কোনও পদক্ষেপ না করে আদালতে এসে হঠাৎ বলছেন কেন? আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি সম্প্রদায়কে সুযোগ করে দিচ্ছি(OBC Reservation)।’

রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা (OBC Reservation)
এরপরই রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা ২০১২ সালের ওবিসি আইন অনুযায়ী অর্ধেক কাজ করেছেন। তারপর আবার ১৯৯৩ সালের আইনে ফেরত গিয়েছেন(OBC Reservation)। এটা কেন? আপনারা কেন ২০১২ সালের আইনে সংশোধনী আনলেন না? গত ১৫ বছর ধরে সুবিধা দিয়ে এসেছেন। আইন বলছে, ১০ বছর ছাড়া সমীক্ষা করতে হয়। সেই সমীক্ষা তো করা হয়নি।’এদিন শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে দাবি করেন আদালতের নির্দেশে বেশ কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। তাই যেন কোনও অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ না দেওয়া হয়। মূল মামলাকারীদের আইনজীবী এস শ্রীরাম আদালতে রাজ্যের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, আদালতের রায়ে কোনও অস্পষ্টতা নেই। আইন বুঝে আদালত সঠিক রায় দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করেনি(OBC Reservation)।
ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি (OBC Reservation)
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তি এবং তালিকার উপর ৩১শে জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ(OBC Reservation)।উল্লেখ্য, ২০১০ সালের পরে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২৪ সালের ২২ মে ওই নির্দেশ বহাল রেখেছিল আদালত। রায়ে বলা হয়েছিল, ২০১০ সালের আগে ৬৬টি সম্প্রদায়ের ওবিসি সার্টিফিকেট বৈধ। তার পর থেকে সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করা হচ্ছে। হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। কিন্তু শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়ে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। মামলাটি এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।