ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রতিবাদ করেছিল, বিচার চেয়েছিল কিন্তু মেলেনি। অবশেষে আগুনেই জুড়োল অপমানের জ্বালা! শেষ হল তিন দিনের জীবন-মরণের লড়াই। মৃত্যু হল ওড়িশার নির্যাতিতার। সোমবার রাতে ভুবনেশ্বর এমসেই মৃত্যু বালেশ্বরের কলেজছাত্রীর।
ওড়িশায় কলেজ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়েও বিচার না পেয়ে গায়ে আগুন দিয়েছিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিন দিনের লড়াই শেষে সোমবার রাতে ভুবনেশ্বর এইমসে মৃত্যু (Odisha Student Dies) হল তাঁর। শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। কলেজের নীরবতা, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা আর সমাজের উদাসীনতায় নিভে গেল আরেকটা প্রতিবাদের আগুন।
যৌন হেনস্তার অভিযোগ (Odisha Student Dies)
ওড়িশার বালেশ্বরের কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন কলেজের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তৎপরতা দেখায়নি এবং যৌন হেনস্তার বিষয়ে তদন্তের জন্য অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ক্ষুব্ধ ওই ছাত্রী দ্রুত বিচার দাবিতে শনিবার বিকেলে কলেজের অন্য এক অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলার জন্য যান। অভিযোগ অনুযায়ী, সেই সময় কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি। সহপাঠীরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে (Odisha Student Dies)
অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দ্রুত ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ অংশ পুড়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, তন্ত্র পুড়ে গিয়েছে। কিডনিও পুড়ে যাওয়ার কারণে তা কাজ করছিল না। তরুণীর ডায়ালিসিস চলছিল বলেও জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় শনিবার তাঁকে বালেশ্বর থেকে ভুবনেশ্বরের এইমসে রেফার করা হয়। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষমেষ তা ব্যর্থ হয় (Odisha Student Dies)।
খোঁজখবর নেন রাষ্ট্রপতি
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার ওড়িশা সফরে এসে ওই ছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন খোদ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ভুবনেশ্বর এইমসের বার্ন ইউনিটে গিয়ে ২০ বছর বয়সি ওই ছাত্রী শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন তিনি। যদিও সমস্ত চেষ্টা সত্ত্বেও হাসপাতাল সূত্রে খবর সোমবার রাতে মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার।
গ্রেফতার অধ্যাপক
ঘটনার পর দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয় রাজ্য সরকার। ছাত্রীকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত অধ্যাপককে গত শনিবারই গ্রেফতার করে পুলিশ (Odisha Student Dies)। সোমবার গ্রেফতার করা হয় কলেজের অধ্যক্ষকেও। তদন্তের জন্য দুই সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ওড়িশার উচ্চশিক্ষা দফতরও পৃথক ভাবে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: Asim Ghosh: অধ্যাপক থেকে রাজ্যপাল, হরিয়ানার নতুন রাজ্যপাল বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি
ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করে। তারা বলছে, “ভিন্ন দিন, ভিন্ন শিকার। বিজেপি সরকারের তত্ত্বাবধানে সর্বত্র একই পচন ছড়িয়ে পড়েছে।” তৃণমূল আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝির নীরবতা লজ্জাজনক এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনায় এক কথাও বলেননি। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।”