One Nation One Election Bill: হাজারো বিতর্কের মাঝেই লোকসভায় (Loksabha) পেশ হল ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ (One Nation One Election Bill)। ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত দুটি বিল মঙ্গলবার পেশ করা হয় লোকসভায়। বিল দুটির পোশাকি নাম সংবিধান (১২৯তম সংশোধনী) বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল সংবিধান সংক্রান্ত এই দুটি বিল পেশ করেন সংসদের নিম্নকক্ষে।
লোকসভায় পেশ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল (One Nation One Election Bill)
গত বছর থেকেই চর্চায় ছিল ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’। সম্প্রতিই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই বিলে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপরই জল্পনা ছিল কবে এই বিল (One Nation One Election Bill) সংসদে পেশ করা হবে। দীর্ঘ জল্পনা, টালবাহানার পর মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর সংসদে এক দেশ, এক নির্বাচন বিল পেশ হয়। বিল পেশ হতেই বিরোধীদের হইহট্টগোল শুরু হয়ে যায় লোকসভায়। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি-সহ বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার অন্য দলগুলিও এই বিলের বিরোধিতা করে। বিরোধী সাংসদদের বক্তব্য, এই বিল সংবিধানের মূল কাঠামোতেই আঘাত হানবে। এর মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টা করছে বিজেপি। এক দেশ এক ভোটের বিরোধিতায় অনেক আগে থেকেই সরব বিরোধীরা।
বিল পেশে সরব বিরোধীরা (One Nation One Election Bill)
লোকসভার তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রামনাথ কোভিনদের সঙ্গে এক ঘন্টা বৈঠক করেছিলাম । বৈঠকে বলেছিলাম যতক্ষণ না পর্যন্ত দলত্যাগ বিরোধী আইন যতক্ষণ না বাস্তবায়িত হচ্ছে তখন পর্যন্ত এই বিল আনার কোনো অর্থ হয় না”। অন্যদিকে, জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেন, এই বিল (One Nation One Election Bill) আসলে হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এর পিছনে আসল উদ্দেশ্য হল সংবিধান বদলে দেওয়া।
আরও পড়ুন: Bangladesh News: ‘কলকাতা দখল পাগলের প্রলাপ’, রাজভবনে গিয়ে দাবি বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তার
বিল পেশে কেন্দ্রের যুক্তি
যে সরকারের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই নেই লোকসভায়, সেই সরকার কিসের ভরসায় এই বিল পেশ করছে সংসদে? উঠেছে সেই প্রশ্নও। এক দেশ এক ভোট ব্যবস্থা চালু করতে বিজেপি অনেক দিন ধরেই আগ্রহী। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারেও জোর দেওয়া হয়েছিল এ বিষয়ে। এই বিল কার্যকর হলে সারা দেশে একসঙ্গে লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রের যুক্তি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হয়, তা কমে যাবে। ভোটের আদর্শ আচরণবিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। সরকারি কর্মীদের উপর থেকেও ভোটার তালিকা তৈরি ও ভোট সংক্রান্ত নানা কাজকর্মের চাপ কমবে।
আরও পড়ুন: Kolkata Book Fair 2025: ২৮ জানুয়ারি শুরু কলকাতা বইমেলা, বাংলাদেশের স্টল ঘিরে অনিশ্চয়তা
৯০ দিনের সময়সীমায় খসড়া তৈরির প্রস্তাব
এক দেশ এক ভোটের পক্ষে দিন কয়েক আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী মন্ত্রিসভা। সেই মোতাবেক এদিন পেশ হয় বিল। এই বিল যাচ্ছে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে। ৯০ দিনের সময়সীমায় খসড়া প্রস্তাব তৈরি করবে যৌথ সংসদীয় কমিটি। সেই প্রস্তাব ফের পেশ হবে লোকসভায়। লোকসভায় বিল পাশ হলে সেই বিল পাঠানো হবে রাজ্যসভায়। রাজ্যসভার অনুমোদন পেলে বিল যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে আইন হবে এক দেশ এক ভোট। মঙ্গলবার লোকসভায় অনেক দল যেমন বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছিল, তেমনই এনডিএ-র শরিকরাও বিলের পক্ষে সোচ্চার হয় এদিন। নবীন পট্টনায়েক কিংবা জগনমোহন রেড্ডির দলের মতো যে দলগুলি নেই ইন্ডিয়া কিংবা এনডিএ-তে, তাঁদের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে এক দেশ এক ভোট বিলে। কী হবে? মাস কয়েকের অপেক্ষা।