ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রিলায়েন্স ‘অপারেশন সিঁদুর’ শব্দটির জন্য ৪১ নম্বর শ্রেণীর ট্রেডমার্কের (Operation Sindoor Trademark Battle) জন্য আবেদন করেছে, যা মূলত OTT, প্রযোজক এবং সম্প্রচারকরা শো বা তথ্যচিত্রের জন্য ব্যবহার করেন।
অপারেশন সিঁদুর: সামরিক অভিযানের পরপরই ট্রেডমার্কের আবেদন (Operation Sindoor Trademark Battle)
ভারতের সামরিক বাহিনী ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি অভিযান চালানোর পরপরই, মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এই নামের ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করে (Operation Sindoor Trademark Battle)। এই আবেদনটি ক্লাস ৪১-এর আওতায় করা হয়েছে, যা শিক্ষা, সংস্কৃতি, মিডিয়া ও বিনোদন পরিষেবার সঙ্গে সম্পর্কিত।
একই দিনে চারটি ট্রেডমার্ক আবেদন (Operation Sindoor Trademark Battle)
৭ মে সকাল ১০:৪২ থেকে সন্ধ্যা ৬:২৭-এর মধ্যে মোট চারটি ট্রেডমার্ক আবেদন জমা পড়ে (Operation Sindoor Trademark Battle)। রিলায়েন্স ছাড়াও, মুম্বাইয়ের বাসিন্দা মুকেশ চেত্রাম আগরওয়াল, ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন কমল সিং ওবেরহ এবং দিল্লির আইনজীবী অলোক কোঠারি এই নামের জন্য আবেদন করেন। সব আবেদনেই ‘প্রস্তাবিত ব্যবহারের জন্য’ উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়।
ক্লাস ৪১: শিক্ষা ও বিনোদন পরিষেবা
ট্রেডমার্ক ক্লাস ৪১-এর আওতায় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, চলচ্চিত্র ও মিডিয়া প্রযোজনা, লাইভ পারফরম্যান্স ও ইভেন্ট, ডিজিটাল কনটেন্ট ও প্রকাশনা, এবং সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত। এই শ্রেণিটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, প্রযোজনা সংস্থা, সম্প্রচারক এবং ইভেন্ট সংগঠকদের দ্বারা প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামটি ভবিষ্যতে সিনেমা, ওয়েব সিরিজ বা ডকুমেন্টারির শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার হতে পারে।

সামরিক অভিযানের নামের আইনি সুরক্ষা নেই
ভারতে সামরিক অভিযানের নামগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সুরক্ষিত নয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সাধারণত এই ধরনের নাম নিবন্ধন করে না বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করে না। সুনির্দিষ্ট আইনি সুরক্ষা ছাড়াই, এই নামগুলি বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার দ্বারা ট্রেডমার্ক আবেদনের মাধ্যমে দাবি করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: Operation Sindoor: জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাবর্ষণ পাক সেনার, নিহত সেনা জওয়ান
আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনা
যদিও এই নামটি ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য উপলব্ধ, ১৯৯৯ সালের ট্রেডমার্ক আইন অনুযায়ী, রেজিস্ট্রি কিছু নির্দিষ্ট কারণে আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ধারা ৯(২) এবং ১১-এর অধীনে, রেজিস্ট্রার এমন ট্রেডমার্ক প্রত্যাখ্যান করতে পারেন যা বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা সরকারী সংযোগ নির্দেশ করে বা জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করে। তবে, সরকার বা কোনও প্রভাবিত পক্ষের দ্বারা আনুষ্ঠানিক আপত্তি না তোলা পর্যন্ত এই ধরনের নাম নিবন্ধনের উপর কোনও সাধারণ নিষেধাজ্ঞা নেই।
প্রথম আবেদনকারী হওয়া মানেই মালিকানা নয়
ভারতের ট্রেডমার্ক আইন অনুযায়ী, প্রথম আবেদনকারী স্বয়ংক্রিয়ভাবে অধিকার পান না। যদিও প্রাথমিক আবেদনের তারিখ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, রেজিস্ট্রার আরও যে বিষয়গুলি বিবেচনা করেন, সেগুলি হল, আবেদনকারীর নাম ব্যবহারের উদ্দেশ্য, বিদ্যমান কোন ট্রেডমার্কের সঙ্গে বিভ্রান্তির ঝুঁকি, নামের স্বাতন্ত্র্য এবং শক্তি, বিরোধ প্রক্রিয়ায় উপস্থাপিত কোনও প্রমাণ।
আরও পড়ুন: Operation Sindoor: ‘অপারেশন সিঁদুর’ শেষ হওয়ার ১৫ ঘণ্টা পর সাংবাদিক বৈঠক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
যখন একাধিক পক্ষ একই বা অনুরূপ নামের জন্য একসঙ্গে আবেদন করে, তখন রেজিস্ট্রি পরীক্ষা বা প্রকাশনা স্থগিত করতে পারে এবং বিরোধ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, পক্ষগুলি সহাবস্থান চুক্তির পথ বেছে নিতে পারে।
ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের সাধারণ প্রক্রিয়া
ভারতে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের সাধারণ ধাপগুলি হল, প্রথমে আবেদন জমা করা। তারপরে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রির দ্বারা এর পরীক্ষা এবং ট্রেডমার্কস জার্নালে চার মাসের মধ্যে আপত্তি জানানো সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রকাশ। এরপরে আসে বিরোধ প্রক্রিয়া, যদি তৃতীয় পক্ষ দ্বারা উত্থাপিত হয়। সবশেষে যদি কোনও আপত্তি না ওঠে বা আবেদনকারী বিরোধে জয়ী হন তবে চূড়ান্ত নিবন্ধন।