ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি (Pahalgam Attack) হামলায় অন্তত ২৫ জন নিরীহ পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। মঙ্গলবারের এই নির্মম হামলার পর বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির (CCS) বৈঠক।
ছ’দফা পাল্টা পদক্ষেপ (Pahalgam Attack)
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে এই উচ্চ পর্যায়ের (Pahalgam Attack) আলোচনা। বৈঠক শেষে রাত ৯টা নাগাদ বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি কড়া পদক্ষেপ। তবে বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, একটি অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত — পাকিস্তানের সরকারি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টটি ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে মোট ছ’দফা পাল্টা পদক্ষেপ নিল নয়াদিল্লি।
প্রশ্নের মুখে জলবণ্টন চুক্তি (Pahalgam Attack)
বিদেশসচিব জানান, যত দিন না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে মদত দেওয়া (Pahalgam Attack) বন্ধ করছে, তত দিন ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখা হবে। এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে ১৯৬০ সাল থেকে কার্যকর ছিল, যা এখন প্রশ্নের মুখে।
এর পাশাপাশি আরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি হল,
- আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে সাধারণ চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
- যাঁরা বৈধ নথিপত্র নিয়ে ভারতে এসেছেন, তাঁদের ১ মে-র মধ্যে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
- ‘সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্প’-এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পূর্বে এই প্রকল্পে যাঁরা ভারতে এসেছিলেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ।
- পাকিস্তানি সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করা হয়েছে।
- ভারতে পাকিস্তানের দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনা হচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা
এই পদক্ষেপগুলির লক্ষ্য স্পষ্ট—সীমান্ত পার হয়ে বার বার যে ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলা সংগঠিত হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া। বিশেষ করে যখন গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে যে ৪২টি লঞ্চপ্যাডে ১১৫ জনেরও বেশি জঙ্গি অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে, তখন কেন্দ্রের এমন পদক্ষেপ অনেকটাই সময়োপযোগী বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
“মোদীকে গিয়ে বল”
এদিকে, কর্নাটকের পর্যটক মঞ্জুনাথ রাওয়ের মৃত্যুর ঘটনাও নতুন করে নাড়া দিয়েছে দেশবাসীকে। তাঁর স্ত্রী ও সন্তান অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেও, ওই হামলার এক জঙ্গির কথায়, “মোদীকে গিয়ে বল”-ভারতীয়দের মনে গভীর রেখাপাত করেছে। এই ঘটনার পর থেকেই কাশ্মীরে শুরু হয়েছে ব্যাপক তল্লাশি ও সেনা অভিযান। গোটা উপত্যকা এখন কার্যত নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা। প্রশ্ন একটাই, এই ছ’দফা পদক্ষেপ পাকিস্তানকে কতটা চাপের মুখে ফেলতে পারবে? সময়ই বলবে।