ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার রক্তাক্ত ছাপ (Pahelgam Attack) এখনও দগদগে। ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু, যার মধ্যে ছিলেন মহারাষ্ট্রের ছ’জন, এমন ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। অনেকে দ্রুত ফিরে যাচ্ছেন নিজেদের রাজ্যে। তবে এর মাঝেই ব্যতিক্রম কয়েক জন পর্যটক। ভয় নয়, তাঁরা বেছে নিয়েছেন আস্থা।
আতঙ্ক তাঁদের দমিয়ে রাখতে পারেনি (Pahelgam Attack)
মহারাষ্ট্র থেকে কাশ্মীর ভ্রমণে এসেছেন এমনই কিছু পর্যটক জানালেন, পহেলগাঁওয়ের (Pahelgam Attack) ঘটনার সময় তাঁরা ছিলেন উপত্যকায়। যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, তবু আতঙ্ক তাঁদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। এক পর্যটক বলেন, ‘‘আমাদের আত্মীয়রা বার বার বলছেন ফিরে যেতে। কিন্তু আমরা ফিরে যাচ্ছি না। আমরা কাশ্মীর দেখতে এসেছি, সেটা দেখেই যাব।’’
কাশ্মীরি মানুষের প্রতি গভীর আস্থা (Pahelgam Attack)
এই মনোভাবের পেছনে রয়েছে তাঁদের কাশ্মীরি মানুষের প্রতি গভীর (Pahelgam Attack) আস্থা। সেই বিশ্বাস গড়ে উঠেছে আতিথেয়তা আর মানবিকতার অভিজ্ঞতা থেকে। এক পর্যটকের কথায়, ‘‘কাশ্মীরিরা সব সময় সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে খুবই সচেতন। আমাদের চালক তো হামলার পর নিজের জীবনের পরোয়া না করে আমাদের নিরাপদে হোটেলে পৌঁছে দেন।’’
সাম্প্রদায়িক বিভেদ নেই
আরও জানান, গাড়ি বুক করার সময় কোনও চালক কখনও ধর্মপরিচয় জানতে চাননি। এতে বোঝা যায়, স্থানীয়দের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ নেই, আছে কেবল অতিথিকে সাধ্যমতো সাহায্য করার মনোভাব।
কাশ্মীরিরা আমাদের পাশে
তাঁরা বলেন, “ভয় পাইনি, কারণ কাশ্মীরিরা আমাদের পাশে ছিলেন। ওঁদের ব্যবহার, সহানুভূতি, আতিথেয়তা আমাদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। এই উপত্যকায় এসে আমরা যেন একটা আলাদা ভালোবাসার জগতে প্রবেশ করেছি।”
নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট
এদিকে হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে। সেনাবাহিনী তৎপর, বিভিন্ন এলাকায় চলছে টহল। সরকার পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়তি পদক্ষেপও নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: SSC Scam: এসএসসি বিতর্কে নতুন মোড়, ১৮০৩ জনকে বাদ দিয়ে রাজ্যের নতুন ‘যোগ্য’ শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ!
তবে তাতেও অনেকে আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। অনেক বুকিং বাতিল হয়েছে, ফেরা শুরু করেছে পর্যটকদের একাংশ। কিন্তু এই মহারাষ্ট্রের পর্যটকদের মতো মানুষরাই দেখাচ্ছেন, আতঙ্ক নয়, বিশ্বাসের জোরেই কাশ্মীরের পর্যটন আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তাঁদের এই বার্তাই আজ সবচেয়ে বড়—কাশ্মীর শুধু একখানা ভূখণ্ড নয়, এটা বিশ্বাস, ভালোবাসা, আর মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের জায়গা। পহেলগাঁওয়ের রক্তের দাগ হয়তো এখনই মুছবে না, কিন্তু এমন সাহসী পর্যটকদের উপস্থিতি সে ক্ষতকে কিছুটা হলেও শান্তি দিতে পারে।