Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির (Balochistan Liberation Army)-এর পর এবার পাকিস্তান সরকারের নিশানায় আরও এক বিদ্রোহী সংগঠন—তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান(Pak Army VS TTP)। শুক্রবার থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ এবং আফগানিস্তান সীমান্ত জুড়ে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান সেনা। সেনার সঙ্গে রয়েছে সশস্ত্র পুলিশ, সন্ত্রাসদমন বাহিনী ‘কাউন্টার-টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট’, এবং আধাসেনা বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোর ও রেঞ্জার্স।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান ও বাজাউর জেলায় টানা গুলির লড়াইয়ে পাকিস্তানি সেনার অন্তত ১২ জন জওয়ান এবং টিটিপির ৩৫ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনার জনসংযোগ দফতর (আইএসপিআর)। বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, টিটিপির ঘাঁটিতে হামলার জন্য পাক সেনা ড্রোন ও হেলিকপ্টারও ব্যবহার করছে।
সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু বাজাউর ও ওয়াজিরিস্তান (Pak Army VS TTP)
বাজাউরে টিটিপির ডেরায় যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়(Pak Army VS TTP)। অন্যদিকে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে পাক সেনার কনভয়ে টিটিপি জঙ্গিদের আকস্মিক হামলায় প্রাণ হারান ১২ জন জওয়ান। পাল্টা আক্রমণে বহু বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয়েছে বলে সেনার দাবি।
ভেস্তে যাওয়া শান্তি আলোচনা (Pak Army VS TTP)
২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পরেই টিটিপি প্রকাশ্যে “যুদ্ধ” ঘোষণা করে(Pak Army VS TTP)। বিদ্রোহী পাশতুন সংগঠনটির অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতির শর্ত ভেঙে সেনা ও সিটিডির যৌথ অভিযান শুরু করায় আবার অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে খাইবার পাখতুনখোয়ায়।
এরপর থেকেই টিটিপি হামলার মাত্রা বাড়াতে থাকে। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান বিমান বাহিনী আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে বোমা হামলা চালায়। ইসলামাবাদ দাবি করে, টিটিপি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়।

আরও পড়ুন : Indian Navy : আকাশ হামলা ঠেকাতে থ্রিডি র্যাডার পেল ভারতীয় নৌসেনা!
আফগানিস্তানের অভিযোগ (Pak Army VS TTP)
যদিও আফগানিস্তানের শাসক তালিবান পাল্টা অভিযোগ তোলে, পাকতিকা প্রদেশের বারমাল জেলায় সাতটি গ্রামে বিমান হামলায় অন্তত ৪৬ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও ছিলেন। এই ঘটনায় ইসলামাবাদ ও কাবুলের সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন তৈরি হয়।
আরও পড়ুন : North Korea : বিদেশি সিনেমা দেখলেই মৃত্যুদণ্ড, বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব রুখতে কিমের কড়া পদক্ষেপ
টিটিপির রক্তাক্ত অতীত (Pak Army VS TTP)
২০০৭ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই টিটিপি পাকিস্তান সরকারের অন্যতম বড় মাথাব্যথা(Pak Army VS TTP)। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে শতাধিক ছাত্রকে হত্যা করে তারা, যা পাকিস্তানের সামরিক ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত।
টিটিপির প্রতিষ্ঠাতা বায়তুল্লা মেহসুদ ২০০৯ সালে আমেরিকার ড্রোন হামলায় নিহত হলেও সংগঠনের শক্তি ভাঙেনি। পাকিস্তান সেনা ২০০৯ সালে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজাত’ নামে টিটিপির বিরুদ্ধে অন্যতম বৃহত্তম অভিযান চালিয়েছিল, তবুও দলটি পুরোপুরি নির্মূল হয়নি।
অশান্ত সীমান্ত রাজনীতি
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিটিপি দমন পাকিস্তান সেনার জন্য ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। একদিকে আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে নিরাপত্তা বজায় রাখা, অন্যদিকে দেশীয় বিদ্রোহ দমন—দুটি চাপ একসঙ্গে সামলাতে হচ্ছে ইসলামাবাদকে। শান্তি আলোচনার পথ বারবার ব্যর্থ হওয়ার ফলে সংঘর্ষের মাত্রা আরও বাড়ছে।