ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের ছোড়া গোলাগুলিতে জম্মুর রাজৌরিতে মৃত্যু হয়েছে এক সরকারি আধিকারিক সহ তিনজনের। রাজৌরির অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার রাজকুমার থাপার বাড়িতে শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের ছোড়া গোলা পড়ে। তিনি গুরুতর জখম হয়েছিলেন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে (Pak Shelling Kills Indian Official)। জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ এই খবর স্বীকার করে দুঃখ ও শোকপ্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনায় রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ শোকপ্রকাশ করে লেখেন, “রাজৌরি থেকে অত্যন্ত মর্মান্তিক খবর পেলাম। গতকালই তিনি উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন, এমনকি আমার সঙ্গেও অনলাইন বৈঠক করেছেন রাজকুমার থাপার মৃত্যুতে আমি স্তব্ধ।”

গোলাবর্ষণের ভয়াবহতা (Pak Shelling Kills Indian Official)
শনিবার ভোর পাঁচটা থেকেই রাজৌরিতে শুরু হয় প্রবল গোলাবর্ষণ। পাক সেনার উদ্দেশ্য যে বেসামরিক জনবসতি লক্ষ্য করা ছিল, তা বোঝা যায় ADC-র বাড়িতে সরাসরি গোলার আঘাতে। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহু পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ঘর ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে।
রাজৌরি সীমান্তবর্তী হওয়ায় প্রায়শই গোলাবর্ষণের শিকার হয়, কিন্তু এইবারের ঘটনা যে ভারতীয় প্রশাসনের আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
পাল্টা ভারতীয় প্রতিরোধ ও ড্রোন হামলা (Pak Shelling Kills Indian Official)
প্রতিরোধে মুখর ভারতও। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জালালপুর জাটান সহ একাধিক এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে টার্গেটেড স্ট্রাইক চালায় ভারতীয় সেনা। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ৪টি রাজ্যে পাকিস্তান মোট ২৬টি ড্রোন পাঠানোর চেষ্টা চালায়, যার অধিকাংশই ভারতীয় সেনার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভূপাতিত করে দেয়।
পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে এক জনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি ড্রোন হামলায় আহত হন এক পরিবারের একাধিক সদস্য। তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেনি পাকিস্তান। জম্মুর AIIMS হাসপাতালের পাশেও একটি পাকিস্তানি ড্রোন দেখা গিয়েছে।
নাগরোটায় ব্ল্যাকআউট ও ধারাবাহিক বিস্ফোরণ (Pak Shelling Kills Indian Official)
বিশ্ববিখ্যাত বৈষ্ণোদেবী যাত্রাপথের অংশ নাগরোটায় ব্ল্যাকআউট চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান একের পর এক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে উঠেছে পুরো এলাকা। সেনা সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সময়মতো সক্রিয় হয়ে বহু হামলা প্রতিহত করেছে।
আরও পড়ুন: Turkish Drones: তুর্কি ড্রোন ব্যবহার করে হামলা পাকিস্তানের! দাবি ভারত সরকারের
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একপ্রকার যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সীমান্তে একের পর এক গোলাগুলি, ড্রোন হামলা ও প্রাণহানির ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে। G7 ও UNSC-র একাধিক সদস্য দেশ উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে (Pak Shelling Kills Indian Official)।
তবে, ADC-র মতো এক নিষ্ঠাবান আধিকারিকের মৃত্যু এবং নাগরিকদের ওপর হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সীমান্তে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ এখন ভীত ও অসহায়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি যে কোন সময় আরও বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে, তা আশঙ্কা করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।